ভারতের অর্থনীতিতে বিশ্বকাপের অবদান সাড়ে ১১ হাজার কোটি রুপি

২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল হয়েছিল আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামেএএফপি

অনলাইন-অফলাইনের দর্শক-সংশ্লিষ্টতায়, প্রাইজমানিতে ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপ ছিল আইসিসি আয়োজিত সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট। ভারতের ১০টি শহরে অনুষ্ঠিত এই বিশ্ব আসর দেশটির অর্থনীতিতেও রেখেছে বড় অবদান। আইসিসির নতুন আর্থিক প্রতিবেদন বলছে, ২০২৩ বিশ্বকাপ ভারতের অর্থনীতিতে ১৩৯ কোটি মার্কিন ডলার যোগ করেছে, যা ভারতীয় মুদ্রায় ১১ হাজার ৬৩৭ কোটি রুপি।

আইসিসি ও বিসিসিআইদের দেওয়া তথ্য, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সম্পন্ন জরিপ এবং বিভিন্ন সূত্র থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে ‘২০২৩ বিশ্বকাপের অর্থনৈতিক প্রভাব মূল্যায়ন’ বিষয়ক প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করেছে বাজার গবেষণা সংস্থা নিয়েলসেন।

আজ আইসিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি এবং ভারতের ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইয়ের সরাসরি বিনিয়োগ এবং দেশটির রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলোর স্টেডিয়াম উন্নয়নকাজ ভারতের বিভিন্ন ব্যবসায় উল্লেখযোগ্য লাভের জোগান দিয়েছে।

এ ক্ষেত্রে বিশেষভাবে অবদান রেখেছে বিদেশ থেকে আসা ও ভারতের অভ্যন্তরীণ দর্শকের ভ্রমণ। খেলা দেখার উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা এসব দর্শক আবাসন, যাতায়াত, পরিবহন, খাদ্য ও পানীয় সেবা খাতে যে খরচ করেছেন, তার পরিমাণ ৮৬ কোটি ১৪ লাখ মার্কিন ডলার, যা মোট অর্থনৈতিক অবদানের ৬০ শতাংশের কাছাকাছি।

ভারতের বাইরে থেকে যাওয়া দর্শকেরা খেলা দেখার পাশাপাশি বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুরতে গেছেন। ভারতের অর্থনীতিতে তাঁদের অবদান ২৮ কোটি ১২ লাখ মার্কিন ডলার। বেশির ভাগ বিদেশি দর্শক ভারতে গড়ে ৫ রাত অবস্থান করেছেন। আর অভ্যন্তরীণ দর্শকেরা আয়োজক শহরে ছিলেন গড়ে দুই রাত।

আরও পড়ুন

একটি দেশ শুধু আর্থিক কারণেই বিশ্বকাপ আয়োজন করে না, অন্যতম লক্ষ্য থাকে নিজেদের বৈশ্বিক ভাবমূর্তি বৃদ্ধি করা। আইসিসি বলছে, ভারতে বিশ্বকাপ দেখতে যাওয়া বাইরের দর্শকদের ৬৮ শতাংশই ভারত ভ্রমণের জন্য বন্ধু ও পরিবারকে পরামর্শ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

দেড় মাসের বিশ্বকাপে খেলা দেখেছেন মোট ১২ লাখ ৫০ হাজার দর্শক। এর মধ্যে প্রায় ৭৫ শতাংশই প্রথমবারের মতো ৫০ ওভার ক্রিকেটের বিশ্বকাপ ম্যাচ দেখেছেন। বিদেশিদের মধ্যে ৫৫ শতাংশ নিয়মিতই ভারতে ভ্রমণ করে থাকেন, ১৯ শতাংশ বিশ্বকাপের সময়ই প্রথম গেছেন।

২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতকে হারিয়ে ট্রফি উৎসব করে অস্ট্রেলিয়া
এএফপি

এ ছাড়া বিশ্বকাপের কারণে পূর্ণকালীন ও খণ্ডকালীন মিলিয়ে ৪৮ হাজারের বেশি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছিল। নতুন কর্মসংস্থানের মাধ্যমেও ভারতের অর্থনীতিতে যোগ হয়েছে ১ কোটি ৮০ লাখ মার্কিন ডলার।

আইসিসির প্রধান নির্বাহী জিওফ অ্যালারডাইস এ বিষয়ে বলেন, ‘২০২৩ বিশ্বকাপ দেখিয়েছে ক্রিকেটের তাৎপর্যপূর্ণ অর্থনৈতিক ক্ষমতা আছে, যা ভারতের জন্য ১৩৯ কোটি ডলারের অর্থ যোগ করেছে। এই টুর্নামেন্ট হাজারো কর্মসংস্থান তৈরি করেছে এবং ভারতকে পর্যটন গন্তব্য হিসেবেও তুলে ধরেছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে আইসিসির ইভেন্ট শুধু ভক্ত-সমর্থকদেরই যুক্ত করে না, আয়োজক দেশের অর্থনীতিতেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে।’

আরও পড়ুন