আগামীকাল থেকে শুরু ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টের জন্য ইংল্যান্ড একাদশ ঘোষণা করেছে আগেই। অস্ট্রেলিয়া সেটি না করলেও ডেভিড ওয়ার্নারের জন্য আশার কথাই শোনালেন অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের আশা, দলে জায়গা ধরে রাখবেন এ ওপেনার।
অ্যাশেজের আগে থেকেই দলে জায়গা শঙ্কার মুখে ছিল ওয়ার্নারের। লর্ডসে ‘জীবন’ পেয়ে ৬৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। তবে হেডিংলিতে দুই ইনিংসেই স্টুয়ার্ট ব্রডের বলে আউট হওয়ার পর ওয়ার্নারের জায়গা আবার শঙ্কার মুখে পড়ে যায়। এ নিয়ে ব্রডের বলে রেকর্ড ১৭ বার আউট হলেন অস্ট্রেলিয়া ওপেনার।
ওয়ার্নারের জায়গা শঙ্কায় পড়ে যাওয়ার আরেকটি কারণ ছিল হেডিংলিতে মিচেল মার্শের পারফরম্যান্স। ক্যামেরন গ্রিনের জায়গায় দলে এসেই দারুণ সেঞ্চুরি করেন, গুরুত্বপূর্ণ উইকেটও নেন এ অলরাউন্ডার। এদিকে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টে ফিট হয়ে দলে ফেরার কথা আছে গ্রিনেরও।
আগামীকালের একাদশ কী হবে, সে ব্যাপারে দলের নির্বাচকদের বৈঠক না হলেও ওয়ার্নারকে নিয়ে আশাবাদী কামিন্স। তিনি বলেছেন, ‘আমরা কথা বলব। তবে আমার মনে হয়, এটি একই থাকবে। আমার ধারণা (ওয়ার্নার) সত্যিই ভালো খেলছে। লর্ডসে সে মুগ্ধ করেছে। আর গত সপ্তাহে (হেডিংলিতে) আমাদের অনেকের মতোই সে হয়ত ব্যাটিংয়ে ততটা অবদান রাখতে পারেনি, যতটা রাখতে চায়।’
ওয়ার্নারের ফর্মে ফেরার লড়াই চলছে বেশ কিছু দিন ধরেই। ২০২১ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত এ বাঁহাতি ওপেনারের গড় মাত্র ২৮.১৭। এর মধ্যে আবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে একটি ডাবল সেঞ্চুরিও আছে। ওভালে ওয়ার্ল্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল থেকে টানা চারটি ম্যাচেই খেলেছেন ওয়ার্নার, খাজার ওপেনিং সঙ্গী ছিলেন তিনি। খাজার সঙ্গে ৬১, ৭৩ ও ৬৩ রানের তিনটি ফিফটি জুটি আছে তাঁর এ সিরিজে। অন্য একটি জায়গাতেও ওয়ার্নারের অবদান দেখছেন কামিন্স, ‘দুই দিন ধরে অনেক কাজ করছে। আমার মনে হয় এ সফরে সে ভালো কিছুরই ইঙ্গিত দিয়েছে, এখন পর্যন্ত বড় স্কোর পায়নি। কঠিন পরিস্থিতি সে কিছু ইনিংস খেলেছে, যার কারণে (স্টিভ) স্মিথ বা তাদের পরে এসে রান করাটা সহজ হয়ে গেছে।’
ওয়ার্নারকে দলে রাখা হলে একটা সমস্যাতেই পড়বে অস্ট্রেলিয়া। সে ক্ষেত্রে ক্যামেরন গ্রিনকে ফিরতে হতে পারে হেডিংলিতে দলের একমাত্র বিশেষজ্ঞ স্পিনার হিসেবে খেলা টড মার্ফির জায়গায়। অবশ্য প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ডের ব্যাটিংয়ের ধরনের কারণে স্পিনারকে সেভাবে ব্যবহারও করা হচ্ছে না অস্ট্রেলিয়ার। এখন পর্যন্ত এ সিরিজে একবারই ৮০ ওভারের বেশি ব্যাটিং করেছে ইংল্যান্ড। তার ওপর হেডিংলিতে পেসারদের জন্য সহায়তা ছিল বলে মার্ফি দুই ইনিংস মিলিয়ে বোলিং করেছেন মাত্র ৯.৩ ওভার। মার্ফি যদি ওল্ড ট্রাফোর্ডে না-ই খেলেন, তাহলে পেস-সর্বস্ব বোলিং আক্রমণে পার্টটাইম স্পিনার হিসেবে থাকবেন ট্রাভিস হেড। চোটের কারণে দলের মূল স্পিনার নাথান লায়নের অ্যাশেজ শেষ হয়ে গেছে লর্ডস টেস্টের পরই।
মার্ফিকে নিয়ে কামিন্স বলেছেন, ‘প্রতিটি পরিস্থিতিই আলাদা। আমরা একজন পেসার নিয়ে ম্যাচ খেলেছি, কিছু ম্যাচে আবার বেশ কয়েকজন পেসার নিয়ে খেলেছি। এটি আসলে কন্ডিশনের ওপর নির্ভর করে। গত সপ্তাহেও টডিকে (মার্ফি) নিয়ে যেমন বলেছি, তাকে হয়তো আরেকটু বেশি বোলিং করাতে পারলে ভালো লাগত। তবে ম্যাচে খুব বেশি ওভার হয়নি, সিম ও সুইং-ও ছিল। এ ব্যাপারটি নিশ্চিতভাবেই এ সপ্তাহে বিবেচনায় আনতে হবে।’
প্রথম টেস্টে রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে জিতলেও হেডিংলিতে আরেকটি হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচে হেরেছে অস্ট্রেলিয়া। অবশ্য ওল্ড ট্রাফোর্ডেই ২০০১ সালের পর প্রথমবারের মতো ইংল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জেতার সুযোগটা থেকে গেছে তাদের। ২০১৯ সালে ম্যানচেস্টারেই জিতে অ্যাশেজ ধরে রাখা নিশ্চিত করেছিল অস্ট্রেলিয়া। তবে ওভালে হেরে সিরিজ ড্র করতে হয় তাদের।
অস্ট্রেলিয়ার সেরাটা আসতে এখনো বাকি, কামিন্সের আশা এমন, ‘সাম্প্রতিক কয়েকটি সফরের দিকে ফিরে তাকালে দেখবেন, পাকিস্তান বা ভারতে আমরা সফরের শেষদিকে সেরা খেলাটা খেলেছি। আশা করি এবারও তা–ই হবে। কন্ডিশনের সঙ্গে আরও মানিয়ে নেওয়া যাবে। আর নাথ (নাথান লায়ন) ছাড়া আমাদের চোটের তেমন কোনো সমস্যাও হয়নি। ফলে সবকিছু ভালোভাবেই তৈরি মনে হচ্ছে।’