জাকের জানেন না, কী চলছিল জোন্স-মানসির মাথায়
টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অমন ব্যাটিং! যে কারও ভ্রু না কুঁচকে পারে না। ২০৩ রান তাড়া করতে নামা ইনিংসের খন্ডাংশে যখন হঠাৎ নেমে আসে স্তব্ধতা, হাতে শট থাকা ব্যাটসম্যানকেও যখন সংগ্রামী সময় পার করতে দেখা যায়; সেই ম্যাচ কৌতূহলের বুদবুদ ছড়াবেই।
সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে আজ চিটাগং কিংসের ৬ উইকেটে করা ২০৩ রানের সামনে সিলেটের জয়টা হয়তো শুরুতে সহজ মনে হয়নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেটে ১৭৩ রান করে ফেলার পর মনে হয়েছে, মাঝে একটা সময় রানের গতি হঠাৎ থমকে না গেলে ম্যাচের ফলাফল অন্যরকমও তো হতে পারত!
সিলেটের রানটা কেন অমন থমকে গিয়েছিল, তা নিয়ে গবেষণাই হতে পারে একটা। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেটে ৪৬ রান করার পর ৭ম থেকে ১১তম ওভার পর্যন্ত সিলেটের স্কোরবোর্ডে জমা হয় মাত্র ২০ রান! সপ্তম থেকে নবম ওভারে বাউন্ডারি আসেনি একটিও। এই পাঁচ ওভারে একমাত্র বাউন্ডারিটি মেরেছেন অ্যারন জোন্স, দশম ওভারের প্রথম বলে। মোহাম্মদ ওয়াসিমের করা ১১তম ওভারে এলবিডব্লু হওয়ার আগে সিলেটের রান বাড়াতে খুব একটা ভূমিকা দেখা যায়নি যুক্তরাষ্ট্রের ক্রিকেটার জোন্সের, আউট হওয়ার আগে ১৮ রান করেছেন ১৫ বলে।
আলোচিত ওই সময়ে জোন্সের সঙ্গী ছিলেন স্কটল্যান্ডের ক্রিকেটার জর্জ মানসি। শেষ পর্যন্ত ৩৭ বলে ৫২ রানের ইনিংসে চার ছক্কা ও চার বাউন্ডারি মারা মানসিও কী এক রহস্যময় কারণে ওই পাঁচ ওভারে খোলসবন্দী হয়েই থাকলেন! ওই সময়ে ১৫ বল খেলে তিনি রান করেন মাত্র ৭, ছিল না বড় শট খেলার তেমন কোনো চেষ্টা। অথচ ইনিংসের ১২তম ওভার পর্যন্ত ২২ বলে ১৩ রান করা মানসিই তাঁর পরের ৩৯ রান করেন মাত্র ১৪ বলে।
‘এখানে (সংবাদ সম্মেলন) আসতে আসতেও বলছিলাম, ওদের (মানসি ও জোন্স) মাথায় কী চলছিল ওরাই জানে। আমরাও আলোচনা করছিলাম, একটু কম (রান) হয়ে গেছে। ওই জায়গায় যদি ১০-১৫ রান বেশি আসত, তাহলে তো প্রায় চলেই এসেছিলাম…জাকের আলী, সিলেট স্ট্রাইকার্স
২০৩ রান তাড়া করার টি-টোয়েন্টি ম্যাচে এমন খোলসবন্দী ব্যাটিং কৌতূহল ছড়াবে স্বাভাবিক। জাকের আলী তো ডাগ আউটে বসেই দেখেছেন এই বিস্ময়। ম্যাচ শেষের সংবাদ সম্মেলনে এ নিয়ে জানতে চাইলে বিস্ময়টা গোপন রাখেননি সিলেটের স্থানীয় এই ক্রিকেটার, ‘এখানে (সংবাদ সম্মেলন) আসতে আসতেও বলছিলাম, ওদের (মানসি ও জোন্স) মাথায় কী চলছিল ওরাই জানে। আমরাও আলোচনা করছিলাম, একটু কম (রান) হয়ে গেছে। ওই জায়গায় যদি ১০-১৫ রান বেশি আসত, তাহলে তো প্রায় চলেই এসেছিলাম…।’
দুই দিন বিরতি দিয়ে ১৬ জানুয়ারি থেকে বিপিএলের চট্টগ্রাম পর্ব। ঘরের মাঠে নামার আগে উসমান খান, গ্রাহাম ক্লার্ক, মোহাম্মদ মিঠুন আর হায়দার আলীদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে সিলেটে পাওয়া দ্বিতীয় জয় তাদের আত্মবিশ্বাসী করে তুলবে নিশ্চিত। অবশ্য ‘জোন্স-মানসি রহস্য’ ছাড়া চিটাগংয়ের জয় এত সহজ হতো কিনা, সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।