অবসরের আগে ক্রিকেটারদের রাজনীতিতে আসা উচিত নয়: নুরুল
ক্রিকেটার নুরুল হাসান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকেই একাত্মতা প্রকাশ করেছেন। আন্দোলনের শুরু থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাত্রদের পক্ষে সক্রিয় ছিলেন এই উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান। এবার মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে এসে ক্রীড়াঙ্গনকে রাজনীতিমুক্ত রাখার কথা বললেন নুরুল। সেটা শুধু ক্রিকেট সংগঠক নয়, ক্রিকেটারদের জন্যও প্রযোজ্য হওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুই বড় তারকা মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাকিব আল হাসান পেশাদার খেলোয়াড় থাকা অবস্থায়ই রাজনীতিতে জড়িয়েছেন। আওয়ামী লিগ থেকে সংসদ সদস্যও হয়েছেন। দুজনের কেউই রাজনীতিতে আসার পরও খেলা থেকে অবসর নেননি।
নুরুল ভবিষ্যতে ক্রিকেটারদের মধ্যে এমন কিছু দেখতে চান না। তাঁর যুক্তি, ‘এটা (খেলার পাশাপাশি রাজনীতি) অবশ্যই উচিত নয়। রাজনীতি একটা বড় জায়গা। রাজনীতির জায়গা থেকে মাঠে নিজেকে নিংড়ে দেওয়া কঠিন। খেলা থেকে অবসর নিয়ে রাজনীতি করুক। খেলা চালিয়ে যাওয়া অবস্থায় কিছু প্রটোকল অবশ্যই থাকা উচিত।’
ক্রিকেট সংগঠকদের দিকেও আঙুল দিয়ে নুরুল বলেছেন, ‘কিছু মানুষকে নিয়ে আমার প্রশ্ন আছে। এমন মানুষ আসা উচিত নয়, যারা খেলাকে নিয়ে ব্যবসা করতে চায়, ব্যক্তিগত লক্ষ্য নিয়ে আসে। এখান থেকে রুটিরুজি বের করে সংসার চালাতে হবে, এমন কেউ সংগঠক হিসেবে যেন না আসে। আমরা ক্রিকেটার, খেলাধুলা করে টাকাপয়সা পাই। আলহামদুলিল্লাহ, আজ আমার গাড়ি–বাড়ি সব ক্রিকেটের মাধ্যমে হয়েছে। কিন্তু সংগঠকেরা যারা আসবে, তাদের প্রতিষ্ঠিত হয়ে আসা উচিত, ক্রিকেটের ভালোর জন্য আসা উচিত। এখান থেকে বাড়ি–গাড়ি করার কিছু নেই।’
নিচের ধাপে যেসব ক্রিকেটার আছেন, তাঁদের আর্থিক দুরবস্থার কথা জানিয়ে দেশের হয়ে তিন সংস্করণে ৬৪ ম্যাচ খেলা এই ক্রিকেটার বলেন, ‘আমি অনেক দিন ধরে জাতীয় দলের আশপাশে আছি। আলহামদুলিল্লাহ, চুক্তিতে থাকায় ভালো একটা বেতন পাচ্ছি। প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ, তৃতীয় বিভাগ—এগুলোর অবস্থা কী?’
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে টাকাপয়সা নিয়ে দুর্নীতির বিষয়টিও সামনে এনেছেন নুরুল, ‘সর্বশেষ যখন প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছি, বিসিবি থেকে বিভাগীয় দলের জন্য জার্সি বাবদ দেওয়া হতো তিন লাখ টাকার মতো। এটা আমি নিজের চোখে দেখেছি, যেহেতু ক্যাপ্টেন ছিলাম। ৩০ জন খেলোয়াড়ের জন্য জার্সি বানানো হয়েছে ৮০ হাজার টাকা দিয়ে, যেটা পরার মতো নয়। এটার দায়িত্বে ছিলেন (বিভাগীয় দলের) সেক্রেটারি। ১৪-১৫ বছর ধরে সে-ই ছিল। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটেই যদি এমন হয়...। পরে আমরা খেলোয়াড়েরা নিজেদের টাকা দিয়ে জার্সি বানিয়েছি। যে জার্সি বাইরে পরার মতো অবস্থা ছিল না।’