শূন্য ও সেঞ্চুরি—টেস্ট অভিষেকে ইসমত আলমের বিরল অভিজ্ঞতা
গত বৃহস্পতিবার যখন সিকান্দার রাজার বলে বোল্ড হলেন ইসমত আলম, নিশ্চিত দুই বছর আগের সেই স্মৃতি মনে পড়েছে তাঁর। বুলাওয়েতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে প্রথমবার ব্যাটিংয়ে নেমে মাত্র ২ বল খেলে শূন্য রানে ফিরেছিলেন আফগান ব্যাটিং অলরাউন্ডার। ২০২২ সালের নভেম্বরে এই ইসমত প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেকের প্রথম ইনিংসে ৪ বল খেলে কোনো রান করতে পারেননি।
তবে অভিষেকে-অভিষেকে মিল শেষ সেখানেই। ২২ বছর বয়সী আফগান ক্রিকেটার দ্বিতীয় ইনিংসে যা করলেন, সেটি তো তাঁকে ইতিহাসেই ঠাঁই পাইয়ে দিয়েছে। দ্বিতীয় ইনিংসে সেঞ্চুরি করেছেন ইসমত। তাতে টেস্ট অভিষেকে সেঞ্চুরি পাওয়া আফগানিস্তানের প্রথম ব্যাটসম্যান হয়ে গেছেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান।
আফগানিস্তানের প্রথম হলেও টেস্ট ইতিহাসে অভিষেকে সেঞ্চুরি পাওয়া ১১৫তম খেলোয়াড় ইসমত। তবে প্রথম ইনিংসের শূন্য ইসমতকে বিরল এক অভিজ্ঞতাও পাইয়ে দিয়েছে। অভিষেকে সেঞ্চুরি পাওয়া ১১৫ জনের মধ্যে ইসমতসহ মাত্র তিনজনই যে প্রথম ইনিংসে শূন্য রানে আউট হয়েছেন।
১৯৬৯ সালে কানপুরে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেকে প্রথম এই অম্লমধুর অভিজ্ঞতা হয় ভারতের গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথের। প্রথম ইনিংসে শূন্যর পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১৩৭ রান করেন ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান।
১৯৯৬ সালে বিশ্বনাথের অভিজ্ঞতা দিয়ে টেস্ট ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ ওয়াসিম। লাহোরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে শূন্যর পর দ্বিতীয় ইনিংসে ১০৯ রানে অপরাজিত ছিলেন ১৮টি টেস্ট খেলা এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ভারত-পাকিস্তান হয়ে আরেকটু পশ্চিমের আফগানিস্তানের ইসমত এরপর নাম লেখালেন এই ‘কীর্তিতে’।
অভিষেক টেস্টে সেঞ্চুরি ও শূন্যর দেখা পাওয়া আরও দুজন খেলোয়াড় আছেন। দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যান্ড্রু হাডসন ও ইংল্যান্ডের কিটন জেনিংসের অবশ্য ইসমতদের বিপরীত অভিজ্ঞতা। দুজনই প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরির পর দ্বিতীয় ইনিংসে শূন্য রানে ফেরেন। হাডসন ১৯৯২ সালে ব্রিজটাউনে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রত্যাবর্তন টেস্টের প্রথম ইনিংসে করেন ১৬৩ রান, এরপর শূন্য। ইংলিশ ওপেনার জেনিংস ২০১৬ সালে মুম্বাইয়ে ভারতের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে করেছিলেন ১১২ রান।
২০২২ সালের নভেম্বরে প্রথম শ্রেণির অভিষেকে শূন্য ও অপরাজিত ১৩ রান করা ইসমত আবার এই সংস্করণে ফেরেন ২০২৪ সালে। এরপর খেলা ছয়টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচে পামির দলের হয়ে খেলা ইসমত করেছেন ৪টি সেঞ্চুরি। ওই চার সেঞ্চুরির তিনটিই আবার টানা তিন ম্যাচে করার পর টেস্ট অভিষেকেও সেঞ্চুরি, মানে সর্বশেষ চারটি প্রথম শ্রেণির ম্যাচেই সেঞ্চুরি পেলেন ইসমত।
ইসমতের দল বুলাওয়েতে দ্বিতীয় টেস্টে দ্বিতীয় ইনিংসে অলআউট হওয়ার আগে করেছে ৩৬৩ রান। তাতে স্বাগতিকদের ২৭৮ রানে লক্ষ্য ছুড়ে দিতে পেরেছে আফগানিস্তান।
বুলাওয়েতেই সিরিজের প্রথম ম্যাচটি হয়েছিল ড্র।