মেয়েদের ক্রিকেটে সবচেয়ে দ্রুতগতির বলের বিশ্ব রেকর্ড
ভারতের নারী প্রিমিয়ার লিগে (মেয়েদের আইপিএল নামেও পরিচিত) মঙ্গলবার দিল্লি ক্যাপিটালস–মুম্বাই ইন্ডিয়ানস ম্যাচের তৃতীয় ওভারের দ্বিতীয় বল ছিল সেটা। মুম্বাইয়ের শাবনিম ইসমাইলের ফুল লেংথের বলে ব্যাট লাগাতে পারেননি দিল্লির মেগ ল্যানিং। বল ল্যানিংয়ের প্যাডে লাগলে এলবিডব্লুর জোরালো আবেদন করেন ইসমাইল ও তাঁর সতীর্থরা। তবে আম্পায়ার সেই আবেদনে সাড়া দেননি।
তাতে কী? দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে ততক্ষণে তো বিশ্ব রেকর্ডই করে ফেলেছেন মুম্বাইয়ের দক্ষিণ আফ্রিকান পেসার ইসমাইল! নারী ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম অধিনায়ক ল্যানিংয়ের প্যাডে ইসমাইলের যে বলটা আঘাত হেনেছিল, স্পিডমিটার সেটির গতি দেখিয়েছে ঘণ্টায় ১৩৮.৩ কিলোমিটার, যেটাকে এরই মধ্যে মেয়েদের ক্রিকেটে দ্রুততম বলের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
যদিও ইসমাইলের এই বলের গতি নিয়ে দ্বিমত আছে। টুর্নামেন্টের অফিশিয়াল সম্প্রচারকারী চ্যানেল ‘স্পোর্টস–১৮’–ও স্পিডমিটার অনুযায়ী বলটির গতি ১৩৮.৩ কিলোমিটারই দেখিয়েছে।
কিন্তু ক্রিকেটবিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফো বলছে, বলটির গতি ছিল ১৩২.১ কিলোমিটার। তবে এটাই যে মেয়েদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুতগতির বল, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই। ৩৫ বছর বয়সী ইসমাইল অবশ্য নিজের গড়া রেকর্ডের ব্যাপারে অবগত ছিলেন না বলে ইনিংস বিরতিতে জানিয়েছেন, ‘আমি যখন বল করছিলাম, তখন বড় স্ক্রিনের দিকে তাকাইনি।’
মেয়েদের আইপিএলের এবারের আসরে সবচেয়ে দ্রুতগতির বলটা ইসমাইলই করেছিলেন। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বেঙ্গালুরুর এম চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে তিনি এই দিল্লির বিপক্ষেই ঘণ্টায় ১২৮.৩ কিলোমিটার গতিতে বল ছুড়েছিলেন। চোটের কারণে মুম্বাইয়ের হয়ে আগের দুই ম্যাচ মিস করা এই পেসার সেরে ওঠার পর মঙ্গলবারই মাঠে ফিরেছেন। আর এ দিনই গড়েছেন বিশ্ব রেকর্ড।
মেয়েদের আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে দ্রতগতির ডেলিভারির রেকর্ডটা এত দিন ছিল এলিসি পেরির দখলে। গত বছর রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর হয়ে ইউপি ওয়ারিয়র্সের বিপক্ষে ঘন্টায় ১৩০.৫ কিলোমিটার গতিতে বল করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান অলরাউন্ডার পেরি।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দ্রুততম বলের রেকর্ডটা অবশ্যই ইসমাইলেরই। ২০১৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে একটি ম্যাচে ঘণ্টায় ১২৮ কিলোমিটার গতিতে বল করেছিলেন। ২০২২ ওয়ানডে বিশ্বকাপে তিনিই দুবার ঘণ্টায় ১২৭ কিলোমিটার গতিতে বল ছুড়েছিলেন। তবে মঙ্গলবার বিশ্ব রেকর্ড গড়ার রাতটা ভালো কাটেনি ইসমাইলের। তাঁর দল মুম্বাই দিল্লির কাছে ২৯ রানে হেরে গেছে। তিনি নিজেও বল হাতে ৪ ওভারে বিলিয়েছেন ৪৬ রান, নিয়েছেন একটি উইকেট। শেফালি ভার্মাকে আউট করে বুনো উদ্যাপনে তাঁকে মাঠ ছাড়ার ইঙ্গিতও দিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সব সংস্করণ মিলিয়ে ২৪১ ম্যাচে ৩১৭ উইকেট নিয়েছেন ইসমাইল। গত বছরের মে মাসে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শেষে তিনি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন। এরপর থেকে বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলে বেড়াচ্ছেন।