‘ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের রমরমায় টেস্ট ক্রিকেট ট্রেন্ট বোল্টের মতো বোলার হারাবে’
রমরমা বাজার চলছে টি–টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের। সোজা কথায়, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের জনপ্রিয়তার বিস্ফোরণই হয়েছে। আর সেই বিস্ফোরণের ‘ধকল বয়ে চলতে হবে’ টেস্ট ক্রিকেটকে—সতর্ক করলেন ইংল্যান্ডের তারকা পেসার জেমস অ্যান্ডারসন।
গত মাসেই ৪০ বছরে পা রাখা অ্যান্ডারসন এখনো টেস্ট ক্রিকেট খেলছেন। তাঁর শঙ্কা, ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ততম সংস্করণের ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলার লোভে টেস্ট ক্রিকেট ট্রেন্ট বোল্টের মতো বোলার হারাতে পারে। টেস্টে তৃতীয় সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি ৪০ বছর ১৭ দিন বয়সী অ্যান্ডারসন ১৭২ টেস্টে ৬৫৭ উইকেট নিয়েছেন। আগামী বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে লর্ডস টেস্টে মাঠে নামার অপেক্ষায় আছেন অ্যান্ডারসন। তাঁর মতো এই বয়সেও টেস্ট ক্রিকেট খেলে যাওয়া আরেকজন পেসার ভবিষ্যতে পাওয়া যাবে বলেও মনে করেন না অ্যান্ডারসন।
টেস্টে ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ এই উইকেটশিকারি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘হয়তো ব্রড খেলবে (৪০ বছর বয়সে টেস্ট) কিন্তু তারপর অবশ্যই দেখা যাবে না। কারণ, কেউ এত বোকা হবে না। ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে এখন তো কতকিছুই হচ্ছে। হানড্রেড আছে, খেলাটির সংক্ষিপ্ত সংস্করণগুলোর একটি। এত দীর্ঘ সময় ধরে কেউ টেস্ট ক্রিকেট খেলবে বলে আমার মনে হয় না।’
নিউজিল্যান্ডের পেসার ট্রেন্ট বোল্ট সম্প্রতি দেশের ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তি ছেড়েছেন। ঘরোয়া টুর্নামেন্টে বেশি বেশি ম্যাচ খেলতে চান বোল্ট। যদিও বোল্টের এই সিদ্ধান্তের পেছনে তাঁর পরিবারকে সময় দেওয়ার বিষয়ও আছে। তবে অ্যান্ডারসন মনে করেন, বোল্টের এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ। টি–টোয়েন্টি ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগগুলোয় এখন প্রচুর ব্যক্তিগত বিনিয়োগ হচ্ছে। টুর্নামেন্টেরও অভাব নেই। আর তাই খেলোয়াড়েরা ভাবতে পারেন, টেস্ট ক্রিকেটে বাদ দিয়ে বোল্টের পদাঙ্কই অনুসরণ করা উচিত।
বোল্টের উদাহরণ টেনে অ্যান্ডারসন বলেছেন, ‘এটা তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ, সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বড় তারকা এবং আমি দেখতে পাচ্ছি, এমন আরও হবে, বিশেষ করে বোলারদের ক্ষেত্রে। আমার মনে হয় ব্রডও একমত হবে যে, ২০১৫ বিশ্বকাপের পর সাদা বলের ক্যারিয়ার শেষ হয়ে যাওয়ায় আমরা ভাগ্যবান। আমরা লাল বলের ক্রিকেটে মনোযোগ দিতে পেরেছি। তবে ভবিষ্যতে এর উল্টো হবে বলেই মনে করি—খেলোয়াড়েরা নিজেদের পছন্দের সংস্করণ ও সফর বেছে নেবে।’
এর ফল ভোগ করতে হবে টেস্ট ক্রিকেটকে—এমনটাই মনে করেন অ্যান্ডারসন, ‘টেস্ট ক্রিকেটকে এর ধকল বইতে হবে। চার ওভার বল করা বোলারদের জন্য সবচেয়ে সহজ বিষয়। কিংবা ২০ বল। এতে কিছুই হয় না। আর পারিশ্রমিকটাও ভালো পেলে খেলোয়াড়েরা এর প্রতি ঝুঁকবেই।’
তবে অ্যান্ডারসন নিজেকে আলাদা বলেই মনে করেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট এখনো সংস্করণগুলোর মধ্যে শীর্ষে, ফিট থাকলে মাঠে প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করি। এটা অসাধারণ এক খেলা। আমার কাছে টেস্ট ক্রিকেটের ওপরে কিছু নেই। তাই যতদিন সম্ভব খেলে যেতে চাই।’