সাকিব এখন বিপিএল সেরার আলোচনায়, রংপুরের প্লে-অফ নিশ্চিত
মাত্র ১৩ দিনের ব্যবধান। সাকিব আল হাসান বিপিএল খেলছিলেন ‘অর্ধেক সাকিব’ হয়ে। ৩ ফেব্রুয়ারি সিলেটে সংবাদ সম্মেলনে চোখের সমস্যায় অলরাউন্ডার হিসেবে খেলতে না পারা নিয়ে সাকিব যা বলেছিলেন, তাতে তাঁর কণ্ঠে যেন অপরাধবোধই ফুটে উঠেছিল।
অথচ দুই সপ্তাহ না কাটতেই সেই সাকিব এখন বিপিএল–সেরার আলোচনায়। এখনই হয়তো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এই পুরস্কার পেতে তাঁর লড়াই হবে ঢাকার শরীফুল ইসলাম ও কুমিল্লার তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে। তবে টুর্নামেন্টে ব্যাট হাতে এমন ‘ভয়ংকর শুরু’র পরও সাকিব যে লড়াই করছেন, সেটাই কম কীসে!
এবারের বিপিএলে প্রথম ৫ ম্যাচে সাকিবের মোট রান ছিল মাত্র ৪। এই ৫ ম্যাচের মধ্যে দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়েই নামেননি, একটি ম্যাচে তো ৮ উইকেট যাওয়ার পরও না। সেই সাকিব চট্টগ্রামে আজ চট্টগ্রামের চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে খেলেছেন ৩৯ বলে ৬২ রানের ইনিংস। এর আগের ম্যাচেই খুলনার বিপক্ষে করেছিলেন ৩১ বলে ৬৯। সব মিলিয়ে সাকিবের রান এখন ১৯৬। সঙ্গে উইকেটও আছে ১৩টি। সাকিবের দল রংপুরও আজ চট্টগ্রামকে ১৮ রানে হারিয়ে প্রথম দল হিসেবে প্লে অফে পৌঁছে গেছে। গ্রুপ পর্বে পাচ্ছেন আরও দুই ম্যাচ। প্লে অফের ম্যাচ তো থাকছেই।
আজ চট্টগ্রামের হয়ে ব্যবধান কমানোর কাজটা করেছেন রোমারিও শেফার্ড। শুরুর দিকে রংপুরের ১৮৮ রানের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম এতটাই পিছিয়ে ছিল যে শেফার্ডের ৩০ বলে ৬৬ রানের ইনিংসও জয়ের সম্ভাবনা খুব একটা জাগাতে পারেনি। ব্যাট হাতে ১৭ বলে ৩৪ আর বল হাতে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন মেহেদী হাসান।
সাকিব এর আগে বিপিএল–সেরা হয়েছেন চার বার। প্রথম দুই আসরেই টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড়ের স্বীকৃতি পেয়েছিলেন, এরপর ২০১৯ ও ২০২২ বিপিএলে। এবার সাকিবের জন্য লড়াইটা কঠিন হওয়ার মূল কারণ তাওহিদ হৃদয়। এখন পর্যন্ত ৯ ম্যাচ কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের ব্যাটসম্যান হৃদয়ের রান ৩৪১, স্ট্রাইক রেট ১৬০। সর্বশেষ তিন ইনিংসে করেছেন অপরাজিত ১০৮, ০ ও অপরাজিত ৯১। পয়েন্ট তালিকার দুই নম্বরে থাকা তাওহিদ হৃদয়ের দলের প্লে অফে ওঠা এখন শুধু সময়ের ব্যাপার।
সাকিবের মতো হৃদয়েরও তাই আরও ভালো কিছু করার সুযোগ থাকছে। শরীফুল ২০ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ উইকেটশিকারির তালিকায় শীর্ষে থাকলেও ম্যাচ তো পাবেন আর মাত্র একটি। রেকর্ড টানা ১০ ম্যাচ হেরে শরীফুলের দল দুর্দান্ত ঢাকার অবস্থা তো যাচ্ছেতাই।
অলরাউন্ডার হিসেবে খেলতে না পারায় সাকিব নিজের খারাপ লাগার কথা জানিয়েছিলেন। সেটি নিশ্চয়ই এখন আর নেই। সর্বশেষ দুই ম্যাচে সাকিব ছক্কা মেরেছেন ৯টি। যার প্রায় বেশির ভাগই এসেছে মিডউইকেট অঞ্চল দিয়ে। এই দুই ম্যাচের কারণে স্ট্রাইক রেটটাও এখন দুর্দান্ত—১৭১.৯২। অর্থাৎ সাকিব বলটা এখন ভালোই দেখছেন!
সংক্ষিপ্ত স্কোর
রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৮৭/৮ (সাকিব ৬২, মেহেদী ৩৪, রনি ২৫; শেফার্ড ৩/২৭, শহীদুল ২/৩২, শাকিল ২/৩৮)
চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স: ২০ ওভারে ১৬৯/৬ (শেফার্ড ৬৬*, ব্রুস ২৪, শুভাগত ২১; প্রিটোরিয়াস ৩/১৪, মেহেদী ২/১৭)
ফল: রংপুর রাইডার্স ১৮ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মেহেদী হাসান।