শেষ ওভারে ৩ ছক্কা ৩ চার, ৩০ রান নিয়ে রংপুরকে জেতালেন নুরুল

নুরুলকে নিয়ে সবার উচ্ছ্বাসশামসুল হক

শেষ ওভারে রংপুরের দরকার ছিল ২৬ রান। উইকেটে অধিনায়ক নুরুল হাসান ও কামরুল ইসলাম। ২৬ রান ডিফেন্ড করতে বরিশাল বল তুলে দিল কাইল মায়ার্সের হাতে। পার্টটাইম বোলার হলেও ১ ওভারে ২৬ রান নেওয়া যেকোনো ব্যাটসম্যানের জন্যই বেশ কঠিন।

নুরুল সেই কঠিন কাজটাই করলেন। বাউন্ডারি মারলেন শেষ ওভারের প্রতিটি বলে। ৩ ছক্কা ও ৩ চারে তুললেন ৩০ রান। যা স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে রান তাড়ায় শেষ ওভারে তৃতীয় সর্বোচ্চ। তাঁর ৭ বলে ৩২ রানের ইনিংসে বরিশালকে ৩ উইকেটে হারিয়ে টুর্নামেন্টে অপরাজিত থাকল রংপুর। জিতল টানা ৬ ম্যাচে।

অথচ শেষ ওভারের আরও আগে থেকে জয়ের সুবাস পাচ্ছিল বরিশাল। ৩ ওভারে ৪২ রান প্রয়োজন—এমন সময় বোলিংয়ে এসে মাত্র ৩ রান দিয়ে যান বরিশালের পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি। আউট করেন ইফতিখার আহমেদকে। কে জানত, ইফতিখারের আাউটের পর যিনি ক্রিজে এসেছেন, সেই নুরুলই বরিশালের জয় ছিনিয়ে নেবেন!

বরিশালের জয় ছিনিয়ে নিলেন নুরুল
শামসুল হক

১৯৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিং করা রংপুর শেষ ওভার পর্যন্ত ম্যাচে পিছিয়েই ছিল। বিশেষ করে প্রথম ৭ ওভারে মাত্র ৪১ রানই তুলতে পারে দলটি। ফলে শেষ ১৩ ওভারে রংপুরের সমীকরণ দাঁড়ায় ১৫৭ রানের। রংপুর এই লক্ষ্যের কাছাকাছি চলে যায় দুই পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান ইফতিখার আহমেদ ও খুশদিল শাহর ৫৩ বলে ৯১ রানের জুটিতে। ইফতিখার ও খুশদিল—দুজনই করেন ৪৮ রান করে।

আরও পড়ুন

তবে ইফতিখার ১৮তম ওভারে যখন আউট হন, ম্যাচ অনেকটাই ঝুঁকে পড়ে বরিশালের দিকে। শেষ ২ ওভারে ৩৯ রানের সমীকরণ মেলাতে গিয়ে ১৯তম ওভারের প্রথম ২ বলেই ছক্কা মারেন খুশদিল।

৮১ রানের জুটি গড়েন নাজমুল–তামিম
প্রথম আলো

কিন্তু ছক্কা মারতে গিয়ে পরের বলে তিনি আউট হয়ে ফিরলে শেষ ৩ বলে ৩ রানই নিতে পারে রংপুর। এর মধ্যে ঘটে আবার অন্য নাটক। অবস্ট্রাকটিং দ্য ফিল্ডের আইনে আউট হন মেহেদী হাসান। এত কিছুর পর নুরুলের অবিশ্বাস্য কিছুই করতে হতো। সেটাই তিনি করলেন।

এর আগে বরিশালের রানটা যে ১৯৭ হয়েছে, এতে বড় অবদান তাদের ইনিংসের শেষ ২ ওভারের। এই ২ ওভারে নাহিদ রানা ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের বিপক্ষে ৪৪ রান নেন মায়ার্স-ফাহিম। ২৭ বলে ফিফটি করা মায়ার্স শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ২৯ বলে ৬১ রানে।

ফাহিম করেন ৬ বলে ২০ রান। মায়ার্স-ফাহিমের আগে ১৮ বলে ২৩ করেছেন তাওহিদ হৃদয়। যা বরিশালের রানের চাকা সচল রাখে। আর বরিশালের শুরুটাও হয় দারুণ। নাজমুল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে অধিনায়ক তামিম ইকবাল গড়েন ৬১ বলে ৮১ রানের উদ্বোধনী জুটি।

তামিম করেছেন ৩৪ বলে ৪০। নাজমুল করেছেন ৪১ রান, ৩০ বলে। তামিম-নাজমুলের তৈরি করা মঞ্চেই পরে ঝড় তোলেন কাইল মায়ার্স-ফাহিমরা। শেষ পর্যন্ত সেটিও যথেষ্ট হয়নি নুরুলের ঝড়ের কারণে!