ক্রিকেট দলের অধিনায়ককে ফুটবল দলের অধিনায়কের প্রশ্ন, হেলমেট পরে থাকো কীভাবে
একজন ফুটবলার টানা ৯০ মিনিট মাঠজুড়ে ছোটাছুটি করার মতো দম কোথায় পান, একজন ক্রিকেটারই–বা এত ভারী ভারী প্যাড, হেলমেট পরে থাকেন কীভাবে—এমন কৌতূহল আছে অনেকেরই।
যিনি যা খেলেন না, তাঁর মনে এ ধরনের প্রশ্ন থাকা অস্বাভাবিকও নয়। যেমন বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনেরও এ নিয়ে জিজ্ঞাসা আছে। আর সেই জিজ্ঞাসাটা তিনি বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানার কাছে সরাসরিই রেখেছেন।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) গিয়েছিলেন গত মাসে নেপালে সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপ জিতে আসা দলের অধিনায়ক সাবিনা ও মিডফিল্ডার ঋতুপর্ণা চাকমা। একপর্যায়ে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়কের সঙ্গে এক আড্ডায় বসেন তাঁরা। সেই আড্ডায় দুই ফুটবলার, এক ক্রিকেটার কথা বলেন একে অপরের খেলা নিয়ে।
আড্ডায় নিগার ছিলেন সঞ্চালকের ভূমিকায়। সাফ জয় এবং নারী ফুটবল নিয়েই কথা হয়েছে বেশি। তবে নিগার যখন আছেন, চলে এসেছে ক্রিকেটও। অতিথি সাবিনা একপর্যায়ে নিগারের কাছ থেকে জানতে চান, ক্রিকেট মাঠে লম্বা সময় ধরে হেলমেট পরে থাকো কীভাবে?
নিগার একজন উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান। স্বাভাবিকভাবে অন্য ক্রিকেটারদের চেয়ে তাঁর বেশি সময় ধরে হেলমেট পরে থাকতে হয়। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে সাবিনার প্রশ্নের উত্তরে নিগার বলেছেন, ‘তুমি আমার মনের কথা জিজ্ঞাসা করেছ, সাবিনা আপু। আসলে অনেক কঠিন, কিন্তু এখন অভ্যাস হয়ে যাওয়ায় এত বেশি (কঠিন) লাগে না। টি-টোয়েন্টিতে সময়ের একটা বিষয় থাকে, একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করতে হবে, নইলে জরিমানা হয়ে যায় অনেক সময়। অধিনায়ক হিসেবে আরও বেশি হয়। প্রথম ওভার থেকেই হেলমেট পরা হয়, খোলার আর সুযোগ থাকে না।’
টি-টোয়েন্টির চেয়ে ওয়ানডেতে আরও বেশি সময় ধরে হেলমেট পরতে হয় ক্রিকেটারদের। সেই প্রসঙ্গে নিগার বলেছেন, ‘৫০ ওভারের খেলায় যেটা হয়, আমাদের দলে স্পিনার বেশি। সঙ্গে মেয়েদের আবার চুল, চুলের সমস্যা, আবার বাঁধো, এটা করো...এটা (হেলমেট) প্রথম থেকেই পরে থাকি। এটা খুবই কষ্টের। বলে বোঝানোর মতো না আরকি, বলি না! বলি ঠিক আছে।’ শেষ দিকে হেসেও দেন নিগার।
এবারের আগে ২০২২ সালেও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। দুটি টুর্নামেন্টই হয়েছে নেপালে। তাতে দেশে ফেরার নারী দল পেয়েছে ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা। ২০২২ সাল নাকি এবার?
কোন সংবর্ধনা বেশি উপভোগ করেছেন সাবিনা। এ প্রশ্নের উত্তরে সাবিনা জানিয়েছেন, ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা নিতেই চান না। কেন তিনি এ কথা বলেছেন, শুনুন তাঁর মুখে, ‘আমার কাছে প্রথমবার বেশি ভালো লেগেছে। ব্যক্তিগতভাবে আমি জয়ের পর ছাদখোলা বাসে সংবর্ধনা চাই না। রাস্তায় সাধারণ মানুষের অনেকের কষ্ট হয়। এবারও আমার এটাতে খারাপ লেগেছে। গতবারও লেগেছিল, তবে গতবার প্রচুর মানুষ ছিল। আমার জীবনে আমি এত মানুষ দেখিনি। দ্বিতীয়বার মানুষ কম ছিল, তবে যে সম্মানটা দেশের মানুষ দেখায়, তা তো সব সময় আমাদের অনুপ্রাণিত করে।’
উপস্থাপক নিগারও পাল্টা প্রশ্ন করতে ভুল করেননি। আবার চ্যাম্পিয়ন হলে? সাবিনার উত্তর—‘হতেও পারে...দেশের মাটিতে (খেলা)।’ নিগার জানতে চাইলেন, ‘তখন কী করব, বলো’, এর উত্তরে সাবিনা বললেন, ‘এখনই বলতে পারব না।’ পাশে থেকে ঋতুপর্ণা মনে করিয়ে দিলেন, ‘এখনো দুইটা বছর বাকি।’
সাবিনা, ঋতুপর্ণার সঙ্গে নিগারের আড্ডার ভিডিওটি বিসিবির ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশ করা হবে। তবে সুনির্দিষ্ট সময় জানানো হয়নি।