ক্যারিয়ারের ১০০তম টেস্ট খেলতে নামা কেইন উইলিয়ামসন ও টিম সাউদির প্রথম দিনটা ভালো কাটেনি। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের প্রথম ইনিংসে কাল উইলিয়ামসন আউট হন ১৭ রান করে, সাউদি ৮ ওভার বল করে ছিলেন উইকেটশূন্য। তবে আজ তাঁরা দুজন দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন, ঘুরে দাঁড়িয়েছে নিউজিল্যান্ডও।
অস্ট্রেলিয়ানদের ২৫৬ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পর দ্বিতীয় দিন শেষে কিউইরা ২ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ১৩৪, এগিয়ে আছে ৪০ রানে। উইলিয়ামসন দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন ৫১ রান, ওপেনিংয়ে নামা টম ল্যাথাম অপরাজিত আছেন ৬৫ রানে। দিনের শেষ সেশনে ল্যাথামকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র (১১*)।
সাউদি আজ একটিমাত্র উইকেট পেয়েছেন। তবে উইকেটটিকে ‘বড় মাছ শিকারের’ সঙ্গেই তুলনা করতে হয়। সেঞ্চুরির পথে থেকে নিউজিল্যান্ডের জন্য কাঁটা হয়ে ছিলেন মারনাস লাবুশেন। ব্যক্তিগত ৯০ রানে থাকতে তাঁকে আউট করেছেন সাউদি।
তবে ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে দ্বিতীয় দিনের নায়ক উইলিয়ামসন কিংবা সাউদি নন; ম্যাট হেনরি। ক্রাইস্টচার্চেরই সন্তান হেনরি কাল উসমান খাজা, ক্যামেরুন গ্রিন ও ট্রাভিস হেডকে আউট করে বড় কিছুর আভাস দিয়ে রেখেছিলেন। আজ উইকেট নিয়েছেন আরও ৪টি। তাঁর তোপেই প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার লিড তিন অঙ্ক ছুঁতে পারেনি। ৩২ বছর বয়সী হেনরি ৭ উইকেট নিয়েছেন ৬৭ রানে।
টেস্টের এক ইনিংসে এটি তাঁর দ্বিতীয় সেরা বোলিং। ক্যারিয়ারসেরা বোলিং (৭/২৩) করেছিলেন ক্রাইস্টচার্চেই, ২০২২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে।
নিউজিল্যান্ড কাল ১৬২ রানে অলআউট হওয়ার পর ৩৬ ওভারে ৪ উইকেটে ১২৪ রান তুলে প্রথম দিন শেষ করেছিল অস্ট্রেলিয়া। লাবুশেনের সঙ্গে ছিলেন ‘নাইট ওয়াচম্যান’ নাথান লায়ন। ওয়েলিংটনের বেসিন রিজার্ভে আগের টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসেও লায়নকে ‘নাইট ওয়াচম্যানের’ ভূমিকায় ব্যাটিং লাইনআপের চারে পাঠানো হয়। ওই ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার দলীয় সর্বোচ্চ ৪১ রান করেছিলেন লায়ন।
আজও বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে ব্যাটিং করছিলেন লায়ন। লাবুশেনের সঙ্গে তাঁর ৫১ রানের জুটিটাও বেশ জমে গিয়েছিল। তবে ব্যক্তিগত ২০ রানে লায়নকে আউট করে দিনের প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দেন হেনরি। নিজের পরের ওভারেই ফেরান মিশেল মার্শকে (০)। এরপর অ্যালেক্স ক্যারিকেও (১৪) বেশিক্ষণ টিকতে দেননি গ্লেন ফিলিপস। তখন মনে হচ্ছিল, অস্ট্রেলিয়াকে হয়তো দ্রুতই গুটিয়ে দেবে নিউজিল্যান্ড। কিন্তু মিচেল স্টার্ককে নিয়ে সেঞ্চুরির পথে এগোতে থাকেন লাবুশেন। অস্ট্রেলিয়ার সংগ্রহও ২০০ ছাড়িয়ে যায়।
অস্ট্রেলিয়ার লিড বাড়তে দেখে সাউদি নিজেই দিনের দ্বিতীয় স্পেল করতে আসেন। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক সফলও হন। গালিতে দাঁড়ানো ফিলিপস ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে লাবুশেনের দেওয়া ক্যাচটি নেন। এরপরও অস্ট্রেলিয়া ২৫০-এর গণ্ডি পেরিয়েছে স্টার্ক আর অধিনায়ক প্যাট কামিন্স ব্যাট হাতে দারুণ ভূমিকা রাখায়। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার পাঁচজন ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন ২০-এর ঘরে।
৯৪ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই উইল ইয়াংকে হারায় নিউজিল্যান্ড। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে স্টার্কের বলে উইকেটের পেছনে ক্যারিকে ক্যাচ দেন ইয়াং। এরপর লম্বা সময় কিউইদের আর ক্ষতি হতে দেননি ল্যাথাম-উইলিয়ামসন। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তাঁরা ১০৫ রান যোগ করতে দিনটা নিজেদের করে নেওয়ার আভাষ দিচ্ছিলেন। কিন্তু দিনের প্রায় ১২ ওভার বাকি থাকতে উইলিয়ামসনকে বোল্ড করেন কামিন্স। এরপর রবীন্দ্রকে নিয়ে বাকিটা সময় ভালোভাবেই পার করে দিয়েছেন ল্যাথাম।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
নিউজিল্যান্ড: ১৬২ ও ৫০ ওভারে ১৩৪/২
(ল্যাথাম ৬৫*, উইলিয়ামসন ৫১, রবীন্দ্র ১১*, ইয়াং ১; কামিন্স ১/২১, স্টার্ক ১/৩৯)
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৬৮ ওভারে ২৫৬
(লাবুশেন ৯০, স্টার্ক ২৮, গ্রিন ২৫, কামিন্স ২৩, হেড ২১, লায়ন ২০; হেনরি ৭/৬৭; ফিলিপস ১/১৪, সাউদি ১/৬৮, সিয়ার্স ১/৭১)
* ২য় দিন শেষে