এক দিনে দুই ম্যাচ, দুটিই লো স্কোরিং! এবারের বিপিএলে মিরপুরের পর কাল সিলেটের প্রথম দিনেও যে রকম রান–বন্যা দেখা গেছে, সে তুলনায় আজকের ১১১ ও ১২৫ রানের ম্যাচ দুটিকে কম রানের ম্যাচই বলতে হচ্ছে।
দুই ম্যাচেই কম রান অবশ্য প্রথমে ব্যাট করা দলই করেছে। পরে ব্যাট করা দল ম্যাচ জিতেছে সহজে। প্রথম ম্যাচে ১১১ রানে অলআউট হওয়া ঢাকা ক্যাপিটালসকে ১৩.২ ওভারেই ৭ উইকেটে হারিয়ে দিয়েছে রংপুর রাইডার্স। সন্ধ্যার ম্যাচে ঘরের মাঠে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ১৮.২ ওভারেই সিলেট স্ট্রাইকার্স অলআউট হয়ে যায় ১২৫ রানে। ১০.৩ ওভারে বরিশাল শেষ করেছে ৭ উইকেটে জয়ের আনুষ্ঠানিকতা।
বরিশাল ইনিংসের প্রথম বলেই অবশ্য অধিনায়ক তামিম ইকবাল কট বিহাইন্ড হয়েছেন রাকিম কর্নওয়ালের গ্লাভস ছুঁয়ে যাওয়া বলে। তানজিম হাসানের করা পরের ওভারের শেষ বলে আরেক ওপেনার নাজমুল হোসেনও উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে আউট।
৬ রানে নেই ২ উইকেট। সিলেট স্ট্রাইকার্সের ব্যাটিংয়ের সময় অনেকটাই নীরব দর্শক হয়ে থাকা সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের গ্যালারি উল্লাসে ফেটে পড়ল দুবারই। লো স্কোরিং ম্যাচটাও কি তাহলে নাটকীয় হতে যাচ্ছে!
সে রকম কিছুই হয়নি। কারণ, তৃতীয় উইকেট জুটিতে কাইল মায়ার্স–তাওহিদ হৃদয়ের ১১৬ রানের জুটি। গ্যালারি ততক্ষণে আবারও স্তব্ধ। জয়ের একেবারে তীরে গিয়ে হৃদয় বোল্ড হয়ে যান তানজিমের বলে, নইলে বরিশালের জয়টা আসতে পারত ৮ উইকেটেই। দুই ছক্কা ও আট বাউন্ডারিতে ২৭ বলে ৪৮ করেছেন হৃদয়। ৫৯ রানে অপরাজিত মায়ার্স তাঁর ৩১ বলের ইনংসে যথারীতি বিধ্বংসী রূপই দেখিয়েছেন। পাঁচ বাউন্ডারি, ছক্কা মেরেছেন চারটি।
এর আগে সিলেটের ব্যাটিং দেখে অবশ্য মনেই হয়নি ম্যাচটা টি–টোয়েন্টি। তিন ছক্কা আর এক চারে জর্জ মানসির ১৩ বলে ২৮ রানের ব্যতিক্রমী ইনিংসটি বাদ দিলে ঘরের মাঠে সিলেটের ব্যাটিংটা হয়েছে এক কথায় বাজে।
ফ্লিক শটে অধিনায়ক আরিফুল হক চোখে লেগে থাকার মতো একটি ছক্কা মেরেছেন স্কয়ার লেগের ওপর দিয়ে। এক বাউন্ডারির সঙ্গে আরিফুল ছক্কা মেরেছেন আরও দুটি। কিন্তু ১৯তম ওভারের প্রথম বলে আউট হওয়ার আগে ৩৬ রান করতে তাঁর লেগেছে ২৯ বল।
অন্য ব্যাটসম্যানরা তো শুধু নেমেছেন আর উঠেছেন। অথচ এমন নয় যে সিলেটের উইকেট হঠাৎ করে খুব ব্যাটিংবিরোধী আচরণ শুরু করেছে। সুষম বাউন্সের উইকেটে বল ব্যাটে এসেছে ঠিকঠাক। দুই ম্যাচেই পরে ব্যাট করে জেতা দলকে কোনো সংগ্রামই করতে হয়নি যার যার ছোট লক্ষ্য পেরোতে।
তাহলে প্রথম ব্যাট করা দলের কেন ওই দশা? আসলে শট খেলায় ভুল করলে অথবা ভুল করে শট খেললে উইকেটের কী দায় পড়েছে ব্যাটসম্যানকে সাহায্য করার!
সংক্ষিপ্ত স্কোর
সিলেট স্ট্রাইকার্স: ১৮.২ ওভারে ১২৫
(আরিফুল ৩৬, মানসি ২৮, জাকির ২৫; রিশাদ ৩/১৫, জাহানদাদ ৩/১৮, ফাহিম ২/২৩)।
ফরচুন বরিশাল: ১০.৩ ওভারে ১২৬/৩
(মায়ার্স ৫৯*, হৃদয় ৪৮; তানজিম ২/৩৭, কর্নওয়াল ১/১৬)।
ফল: ফরচুন বরিশাল ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: জাহানদাদ খান।