ফিরেই মাইলফলক রশিদের, ৪০০ চারে প্রথম স্টার্লিং
পিঠে চোট পেয়েছিলেন। এরপর অস্ত্রোপচারও করাতে হয়। তাতে সব মিলিয়ে প্রায় চার মাস মাঠের বাইরে ছিলেন রশিদ খান। শারজায় আফগানিস্তান–আয়ারল্যান্ড টি–টোয়েন্টি সিরিজ শুরুর আগে তাই আলোচনাজুড়ে ছিলেন এই লেগ স্পিনার। গতকাল রাতে সিরিজের প্রথম ম্যাচ দিয়ে নিজের মাঠে ফেরাও রাঙিয়ে দিলেন রশিদ।
আফগানিস্তান ম্যাচটি ৩৮ রানে হারলেও ৪ ওভারে ১৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে রশিদ বুঝিয়ে দিয়েছেন, লম্বা সময় মাঠের বাইরে থাকলেও তাঁর ধার এতটুকু কমেনি। গত বছর ১০ নভেম্বর ওয়ানডে বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার পর এটাই ছিল তাঁর প্রথম ম্যাচ। চোটে ভোগাকালীন তিনি ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটেও খেলেননি।
আয়ারল্যান্ড পাওয়ারপ্লেতে ১ উইকেটে ৪৮ তোলার পর সপ্তম ওভারে বোলিংয়ে আসেন আফগান অধিনায়ক রশিদ। দুই দিকেই বল ঘুরিয়ে সে ওভারে দেন মাত্র ৭ রান। এরপর ১১তম ওভারে এসে টানা দুই বলে নেন ২ উইকেট। মন্থর উইকেটে আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিং তাঁকে মারতে গিয়ে উইকেট দেন। পরের বলেই রশিদের গুগলিতে বোল্ড কার্টিস ক্যাম্ফার—তখনই বোঝা গেছে, স্বরূপেই ফিরেছেন রশিদ খান। ওই ওভারে তিনি দেন ৫ রান।
১৫তম ওভারে ফিরে শেষ বলে রশিদ হ্যারি টেক্টরের উইকেটও পেতে পারতেন। কিন্তু শর্ট ফাইন লেগে তাঁর ক্যাচ ফেলেন ফজলহক ফারুকি। মাঝে এক ওভার পর ১৭তম ওভারে ফিরে অবশ্য শেষ বলে গ্যারেথ ডেলানির উইকেট পেয়েছেন রশিদ। নিজের তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে ৭ রান করে দেন তিনি। শেষ ওভারটা পার্থক্য হয়ে দাঁড়ায় ডেলানির উইকেটে।
তবে ১৯ রানে ব্যাট করা টেক্টর তখন আউট হলে ম্যাচের ফল অন্য রকমও হতে পারত। কারণ, টেক্টরের ৩৪ বলে ৫৬ রানের ইনিংসে ভর করেই ৬ উইকেটে ১৪৯ রান তুলেছে আয়ারল্যান্ড। ২৭ বলে ২৫ রান করা আইরিশ অধিনায়ক পল স্টার্লিং এ ম্যাচে একটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন। ছেলেদের আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে সবচেয়ে বেশি চার মারার রেকর্ডটা তাঁরই ছিল। এবার প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ৪০০ চারের মাইলফলকও ছুঁয়ে ফেললেন। ১৩৪ ইনিংসে তাঁর চার এখন ৪০১টি। ১০৩ ইনিংসে ৩৯৫টি চার মেরে দুইয়ে পাকিস্তানের বাবর আজম। ১০৯ ইনিংসে ৩৬১ চার নিয়ে তিনে বিরাট কোহলি এবং ১৪৩ ইনিংসে ৩৫৯ চার নিয়ে এই তালিকায় চতুর্থ রোহিত শর্মা। শীর্ষ দশে বাংলাদেশের কেউ নেই। ১১৬ ইনিংসে ২৪২টি চার মেরে ১১তম সাকিব আল হাসান।
আয়ারল্যান্ডের রান তাড়া করতে নেমে ১৮.৪ ওভারে ১১১ রানে অলআউট হয় আফগানিস্তান। দলটির কেউ বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। মোহাম্মদ ইসহাকের ব্যাট থেকে এসেছে ২২ বলে ৩২। ২০ রানে ৪ উইকেট নেওয়া আইরিশ স্পিনার বেন হোয়াইট অন্তত এই ম্যাচের পারফরম্যান্সে ছাপিয়ে গেছেন রশিদকে।
আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক স্টার্লিংয়ের মতো রেকর্ড গড়েননি আফগান অধিনায়ক রশিদ। তবে একটি মাইলফলকের দেখা পেয়েছেন। নিজের শেষ ওভারে ডেলানির উইকেটটি রশিদের জন্য ছিল মাইলফলকের—আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে তাঁর ৩৫০তম। ৫ টেস্টে ৩৪ উইকেট নিয়েছেন রশিদ। ১০৩ ওয়ানডেতে নিয়েছেন ১৮৩ উইকেট ও ৮৩ টি–টোয়েন্টিতে শিকার ১৩৩ উইকেট।
মাইলফলটিতে পৌঁছানোয় রশিদকে অভিনন্দন জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’–এ একটি পোস্ট করেছে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ড, ‘আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ৩৫০ উইকেট নেওয়ায় রশিদ খানকে অভিনন্দন। আফগানিস্তানের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে মাইলফলটিতে পৌঁছালেন তিনি। শুভ প্রত্যাবর্তন!’