আইপিএলে অনেক সাধারণ মানের বোলার দেখছেন ক্লুজনার
এবারের আইপিএলে রানবন্যা নিয়ে অনেকেই আঙুল তুলেছেন ইমপ্যাক্ট–সাব নিয়মের প্রতি। একজন খেলোয়াড় বদলি করার সুযোগ থাকায় ব্যাটসম্যানরা ঝুঁকি নিতে উৎসাহিত হচ্ছেন, আত্মবিশ্বাসী হয়ে দ্রুতলয়ে রান তুলছেন। ফলে দুই শ রান দেখা যাচ্ছে হরহামেশাই, বোলাররা খাচ্ছেন নাকানি–চুবানি।
তবে রানবন্যার পেছনে শুধু ইমপ্যাক্ট–সাবই নয়, মানসম্পন্ন বোলিংয়ের অভাবকেও অন্যতম কারণ মনে করেন ল্যান্স ক্লুজনার। লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস সহকারী কোচের মতে, এবারের আইপিএলে সাধারণ মানের বোলার বেশি, ব্যাটসম্যানরা যার সুবিধা তুলছেন। এ ছাড়া বোলারদের তুলনায় ব্যাটসম্যানরা দ্রুতই নিজেদের পরের ধাপে নিয়ে যেতে পেরেছেন বলেও মত এই প্রোটিয়া কিংবদন্তির।
এবারের আইপিএলে প্রথম ৪৫ ম্যাচে দুই শ ছাড়ানো ইনিংস হয়েছে ২৮টি। এর মধ্যে আড়াই শর বেশি রানের ইনিংসই ৮টি, যা আইপিএলের আগের ১৬ আসর মিলিয়ে হয়েছে মাত্র দুবার। কলকাতা–পাঞ্জাব ম্যাচে তো ২৬১ রান তাড়া করে ফেলার ঘটনাও ঘটেছে। ক্লুজনারের মতে, ব্যাটসম্যানদের এই দাপটের পেছনে বোলারদের মানহীনতাও দায়ী, ‘পুরো টুর্নামেন্টের বোলিং পারফরম্যান্স দেখে আমি খুব হতাশই হয়েছি। খুব বেশি ভালো বোলিং দেখা যাচ্ছে না। অনেক সাধারণ মানের বোলার। আর এখনকার ব্যাটসম্যানরাও এতটা ভালো যে তারা এর সুবিধা তুলছে।’
এবারের আসরে দিল্লি ক্যাপিটালসের বোলাররা ১০ ম্যাচে ডেথ ওভারে (১৭ থেকে ২০তম ওভার) দিয়েছেন ৫৪৩ রান, যা গত আসরে ডেথ ওভারে সবচেয়ে বেশি রান হজম করা মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের পুরো আসরের (১৬ ম্যাচে ৬৪৯) চেয়ে মাত্র ৯৬ রান কম। মুম্বাই গতবার ডেথ ওভারে দিয়েছিল ১২.৪৪ রান করে, এবারের আসরে এখনই তিন দলের ডেথ ওভারের গড় এর চেয়ে বেশি।
ক্লুজনারের মতে, ডেথ ওভারে বোলিংয়ের মান পড়ে গেছে, ‘আমরা যদি ছয়টা ইয়র্কার দেওয়ার চেষ্টা করে চারটাও ঠিকঠাক রাখতে পারি...এই দক্ষতাটা এখন দেখা যায় না। আমরা এখন স্লোয়ার বল বেশি করি, নানাভাবে বৈচিত্র্য আনার চেষ্টা করি। আমার মতে, নিখাদ ডেথ বোলিং হচ্ছে ইয়র্কার। সেটা ওয়াইড ইয়র্কার হোক বা স্টাম্প ইয়র্কার। এখনকার দিনে এই দক্ষতা খুব একটা দেখা যায় না।’
বোলিংয়ের মান কমে যাওয়ার পাশাপাশি ব্যাটসম্যানরাও আগের চেয়ে ভালো ব্যাটিং করেন বলেও মত দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অলরাউন্ডারের, ‘সম্ভবত ব্যাটসম্যানরাও বোলারদের তুলনায় দ্রুত নিজের পাল্টে নিয়েছে। এখন পর্যন্ত খুব বেশি ডেথ বোলিং আমি দেখিনি। ফ্ল্যাট উইকেটেরও একটা ভূমিকা আছে, বোলাররা সুইং করাতে পারছে না। তবে বোলারদের তুলনায় ব্যাটসম্যানরা দ্রুত নিজেদের বিবর্তন ঘটাতে পেরেছে।’