একটি কলা দিয়ে লাঞ্চ করেও চার উইকেট অশ্বিনীর
কদিন আগেও তাঁকে সেভাবে কেউ চিনত না। এখন সেই অশ্বিনী কুমারই আইপিএলের বিস্ময়বালক। রোববার কলকাতাকে হারিয়ে চলমান আসরে প্রথম জয় তুলে নেয় মুম্বাই ইন্ডিয়ানস। যে ম্যাচ দিয়ে মুম্বাইয়ের হয়ে আইপিএলে অভিষেক হয় অশ্বিনীর। আর অভিষেক ম্যাচেই ৪ উইকেট নিয়ে হইচই ফেলে দিয়েছেন ২৩ বছর বয়সী পেসার। অথচ এতদূর আসতে তাঁকে অনেক বাধা অতিক্রম করতে হয়েছে।
কী রোদ, কী বৃষ্টি; কখনোই ঘরে বসে থাকতেন না অশ্বিনী। মোহালির পিসিএতে নিয়মিত অনুশীলন চালিয়ে যেতেন। কখনো সাইকেল চালিয়ে. আবার কখনো বাবার কাছ থেকে ৩০ রুপি নিয়ে অটোতে করেই পৌঁছাতেন সেখানে। এখন যখন প্রথম ভারতীয় বোলার হিসেবে আইপিএলে অভিষেকেই ৪ উইকেট নেওয়ার রেকর্ড গড়লেন অশ্বিনী, তখনই তাঁকে নিয়ে আলোচনার ঝড় বইল।
এমন সুসময়ে অতীতের কঠিন দিনগুলো ভুলে যাননি অশ্বিনীর বাবা হরকেশ কুমার। জানিয়েছেন কতটা কষ্ট, কতটা সংগ্রামের পর তাঁর ছেলে আজ সফলতার নাগাল পেল, ‘আমার মনে আছে, ছেলেটা আমার থেকে ৩০ রুপি অটো ভাড়া নিয়ে অনুশীলনে যেত। নিলামে যখন মুম্বাই তাকে ৩০ লাখ রুপিতে দলে নেয়, আমার মন বলেছিল সেটার মর্যাদা দেবে অশ্বিনী। এমনও হয়েছে রাত ১০টায় বাড়ি ফিরে পরদিন ভোর ৫টায় অনুশীলনে চলে যেত সে। কলকাতার বিপক্ষে প্রতিটি উইকেট নেওয়ার পর সেই দিনগুলো আবার মনে পড়ে গেল।’
আইপিএলে দল পেতেও অশ্বিনীকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে। চেন্নাই সুপার কিংস, কলকাতা নাইট রাইডার্স, রাজস্থান রয়্যালস দলে ট্রায়াল দিলেও নির্বাচিত হননি তিনি। শেষ পর্যন্ত মুম্বাই তাঁকে সুযোগ করে দেয়। এর মধ্যে আবার দলটির তারকা পেসার জশপ্রীত বুমরা চোটে পড়ায় কপাল খোলে অশ্বিনীর। বুমরার জুতায় পা গলিয়ে অশ্বিনী এখন মুম্বাইয়ের সমর্থকদের চোখের মণি।
এ দিন ইনিংস বিরতিতে দুই ধারাভাষ্যকার রবি শাস্ত্রী ও হার্শা ভোগলের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে নিজের অনুভূতিগুলো এভাবে প্রকাশ করেন অশ্বিনী, ‘খুবই ভালো লাগছে। এই অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না। তবে প্রথম ম্যাচ হওয়ায় একটু ভয় কাজ করছিল। চাপও অনুভব করছিলাম।’
অশ্বিনী যে চাপে ছিলেন, সেটা তাঁর দুপুরের খাওয়ার মেনুই বলে দিচ্ছে। মাত্র একটা কলা খেয়েই কলকাতার বিপক্ষে মাঠে নেমে পড়েন। দুপুরে কী খেয়েছিলেন? একটু মজা করেই শাস্ত্রী এমন প্রশ্ন করেছিলেন। উত্তরে বাঁহাতি এই পেসার বললেন, ‘কিছুই খাইনি! টেনশনে ছিলাম। মাত্র একটা কলা খেয়েছিলাম।’