বন্যার্তদের জন্য মন কাঁদছে তাওহীদ হৃদয়–শরীফুলদের
ভয়াবহ বন্যার কবলে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালীসহ দেশের আটটি জেলা। উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েক দিনের ভারী বৃষ্টির কারণেই এই বন্যা। মহুয়া, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ভাঙন এলাকা দিয়ে পানি প্রবেশ করছে এসব জেলায়। এরই মধ্যে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। দেখা দিয়েছে মানবিক বিপর্যয়।
যে যার সাধ্যমতো পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন বন্যাকবলিত মানুষদের। বন্যা উপদ্রুতদের জন্য মন কাঁদছে ক্রিকেটারদেরও। শরীফুল ইসলাম, তাওহিদ হৃদয়, রুবেল হোসেন, নুরুল হাসান, এনামুল হক বিজয়রা ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে দেশের মানুষকে বন্যাকবলিতদের জন্য এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতীয় দলের ক্রিকেটার রুবেল বন্যাদুর্গত এলাকার ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এত পানি কোথা থেকে এল, কেনইবা গভীর রাতে সব গেট খুলে দিল। এই অসহায় গরিব দেশ কি এই প্রশ্নের উত্তর কোনো দিনই জানবে না?’
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয় সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে আগে থেকেই ফেসবুকে সরব। বন্যা নিয়ে মোটামুটি বড় স্ট্যাটাসই দিয়েছেন তিনি। লিখেছেন, ‘কী লিখব? কী লেখা উচিত? নিজেকে অসহায় মনে হয় যখন সরাসরি দেশের কোনো দুর্যোগে পাশে থাকতে পারি না। বন্ধুদের পাঠিয়েছি, ওরা মাঠপর্যায়ে কাজ করবে। তবে আমার কষ্ট লাগছে, যতটুকুই করা হবে, তা কী যথেষ্ট? তবু করতে হবে, সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। শুধু এখন না, পানি নেমে যাওয়ার পর পর্যন্ত বন্যার্তদের পাশে থাকতে হবে। নৌকা, ওষুধ, বিশুদ্ধ পানি, শুকনা খাবার যে যেভাবে পারেন। ব্যাপার না। আমরা জন্ম থেকেই সংগ্রাম করতে জানি, এবারও করব। আল্লাহ এ যাত্রায়ও আমাদের রক্ষা করবেন ইনশা আল্লাহ। দুর্যোগ ঘটে গেছে, এখন পুরো বাংলাদেশ মিলে তা মোকাবিলা করার সময়। বসে থাকার সুযোগ নেই, সবাই নিজের সাধ্যমতো এগিয়ে আসি।’
রাওয়ালপিন্ডিতে এ মুহূর্তে পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলছেন জাতীয় দলের পেসার শরীফুল ইসলাম। তিনি তাঁর ফেসবুক পেজে পরিত্র কোরআনের একটি আয়াত উদ্ধৃত করেছেন, ‘রাব্বানাকশিফ আন্নাল আজা–বা ইন্না-মুমিনুন।’ ‘হে আমাদের রব, আমাদের থেকে আজাব দূর করুন; নিশ্চয় আমরা মুমিন হব।’ [সুরা আদ-দুখান: ১২] হে আল্লাহ, বন্যাকবলিত মানুষের প্রতি সহায় হোন, আমিন।’
এনামুল তাঁর পোস্টে বন্যাকবলিত এলাকার দুর্বিষহ দুর্যোগ–পরিস্থিতি তুলে ধরেছেন, ‘দেশের বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি। পুরা ফেনী তলিয়ে গেছে। বিদ্যুৎ, মোবাইল নেটওয়ার্ক কিছুই নেই। দুয়েক ঘণ্টা পরে ফেনীর ভেতর থেকে আর কোনো খবর মোটেও পাওয়া যাবে না। বন্যার্ত মানুষের আর্তনাদ দেখে নিজেকে কোনোভাবেই শান্ত রাখতে পারছি না। এই দুর্যোগ পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে আমরা প্রত্যেকে প্রত্যেকের জায়গা থেকে দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। সবার ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় আল্লাহর রহমতে আমরা অচিরেই এই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠব ইনশা আল্লাহ। এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশি দরকার একে অপরকে সহযোগিতা করা৷ আল্লাহ সবাইকে হেফাজত করুক।’
জাতীয় দলের আরেক ক্রিকেটার নুরুল হাসান নিজের পোস্টে বন্যাকবলিত এলাকার এক শিশুর ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘এই ছবি দেখার পর নিজেরে সম্পূর্ণ অসহায় লাগতেছে। আল্লাহ দয়া করে তাদের এই পরিস্থিতিতে সাহায্য করুন।’