বিশ্বকাপে খেলতে হলে নিগার-নাহিদাদের কয়টি ম্যাচ জিততে হবে

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলফেসবুক

মেয়েদের ক্রিকেট বিশ্বকাপের আবির্ভাব ছেলেদের আগে। ১৯৭৩ সালে মেয়েদের প্রথম বিশ্বকাপ হয়েছিল ইংল্যান্ডে। সেই দেশেই ছেলেদের প্রথম বিশ্বকাপ হয় ১৯৭৫ সালে।

এ বছর সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে আট দল নিয়ে ভারতে বসবে মেয়েদের বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসর। এরই মধ্যে বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নিয়েছে স্বাগতিক ভারতসহ ২০২২-২৫ আইসিসি নারী চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রের শীর্ষ ছয় দল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা ও নিউজিল্যান্ড। বাকি দুই দল আসবে বাছাইপর্ব পেরিয়ে।

৯ থেকে ১৯ এপ্রিল ছয় দল নিয়ে পাকিস্তানে হবে বাছাইয়ের লড়াই। লাহোরের দুই ভেন্যু গাদ্দাফি স্টেডিয়াম ও লাহোর সিটি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এলসিসিএ) গ্রাউন্ডে হবে মোট ১৫টি ম্যাচ। খেলবে স্বাগতিক পাকিস্তান, বাংলাদেশ, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড, স্কটল্যান্ড ও থাইল্যান্ড। এখান থেকে শীর্ষ দুই দল পেয়ে যাবে ভারতের টিকিট, খেলবে বিশ্বকাপের মূল পর্বে।

ছয় দলের বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব শুরু হবে আগামী ৯ এপ্রিল
ছবি: ফিমেল ক্রিকেট

বাংলাদেশের মেয়েরা এখন পর্যন্ত একবারই বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলেছে, ২০২২ সালে নিউজিল্যান্ডে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ আসরে। চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নিতে নিগার সুলতানার দলকে ২০২১ সালে জিম্বাবুয়েতে বাছাইপর্ব খেলতে যেতে হয়েছিল।

কিন্তু তিন ম্যাচ খেলার পর করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাবে বাছাইপর্ব বাতিল ঘোষণা করে আইসিসি। এমনকি বাংলাদেশ নারী দলের দুই ক্রিকেটারও ওমিক্রনে আক্রান্ত হন। বাছাইপর্ব বাতিল হওয়ায় আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে এগিয়ে থাকার সুবাদে সেবার বিশ্বকাপের মূল পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন

কিন্তু এবার নিগারদের সেই সুযোগ নেই। বাছাইয়ে শীর্ষ দুইয়ে থেকেই ভারতের টিকিট কাটতে হবে। বাছাইয়ে রাউন্ড রবিন পদ্ধতিতে ছয় দলের সবাই সবার সঙ্গে একবার করে মুখোমুখি হবে। সেই হিসেবে একেকটি দল খেলবে পাঁচটি করে ম্যাচ।

বাছাইয়ের পাঁচ প্রতিপক্ষের চারটিই এই মুহূর্তে ওয়ানডে র‍্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশের পেছনে। থাইল্যান্ড ৯, পাকিস্তান ১০, আয়ারল্যান্ড ১১ ও স্কটল্যান্ড ১২ নম্বরে আছে। বাংলাদেশ আছে সাতে আর ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছয়ে।

গত জানুয়ারিতে নারী চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এই ক্যারিবীয় মেয়েদের কাছে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হেরেই সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। ওই সিরিজ হারের পর নারী চ্যাম্পিয়নশিপে নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে বাংলাদেশের পয়েন্ট হয় সমান ২১। কিন্তু নেট রান রেটে নিগারের দল পিছিয়ে থাকায় মূল পর্বের টিকিট পেয়ে যায় কিউই মেয়েরা।

এখন বিশ্বকাপে খেলতে হলে বাংলাদেশকে কমপক্ষে চারটি ম্যাচ জিততে হবে। তিনটি জিতলেও হয়তো সম্ভব। সে ক্ষেত্রে নেট রান রেট ও অন্য দলের ম্যাচগুলোর ফলের ওপর নির্ভর করতে হবে।

বাছাইয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকেই ফেবারিট ভাবা হচ্ছে। পাকিস্তান র‍্যাঙ্কিংয়ে থাইল্যান্ডের পেছনে থাকলেও নিজেদের মাটিতে খেলা হওয়ায় বাড়তি সুবিধা পাবে।

আরও পড়ুন

তবে বাংলাদেশের জন্য ভালো ব্যাপার হলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের ম্যাচ পরে। প্রথম তিনটি ম্যাচ থাইল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। এই তিন ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিততে পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও পাকিস্তানকে চাপে ফেলতে পারবে নিগারের দল।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশ-ওয়েস্ট ইন্ডিজ এখন পর্যন্ত চারবার মুখোমুখি হয়েছে। বাংলাদেশের জয় একটি, হার তিনটি। পাকিস্তানের বিপক্ষে সমানে-সমান। ১৫ বারের দেখায় ৭ জয়ের বিপরীতে ৭ হার। ২০২৩ সালে মিরপুরে আরেকটি ম্যাচ হয়েছিল টাই। তবে সেই ম্যাচের সুপার ওভারের শেষ বলে চার মেরে বাংলাদেশকে জিতিয়েছিলেন অধিনায়ক নিগার।

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে নয়টি ওয়ানডে খেলেছে বাংলাদেশ। জয় ছয়টি, হার একটি আর বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হয়েছে দুটি ম্যাচ। বাছাইয়ের অন্য দুই প্রতিপক্ষ থাইল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ নারী দল কখনো ওয়ানডে খেলেনি।