পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করতে পারল না আফগানিস্তান
আফগানিস্তানের ইনিংসে তখন ১০ম ওভারের খেলা চলছে। জয়ের জন্য ১৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬০ রানের কিছু বেশি তুলেছে আফগানিস্তান। ৩ উইকেট নেই। কিন্তু ড্রেসিংরুমে বসে পায়ের ওপর পা তুলে হাসছিলেন অধিনায়ক রশিদ খান।
এই ম্যাচে আফগানিস্তান চাপে থাকতে পারে কিন্তু সিরিজ তো জেতা হয়েছে আগের দুই ম্যাচেই। শারজায় আজ টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচের আনুষ্ঠানিকতায় পাকিস্তান ৬৬ রানে জিতলেও অধিনায়ক শাদাব খানের মুখে হাসিটা থাকার কথা নয়। আফগানিস্তান যে ২-১ ব্যবধানে সিরিজটা জিতেছে। তবে রশিদের মন খারাপ হতে পারে, পাকিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করা গেল না!
পাকিস্তান অধিনায়ক শাদাব খানের অবশ্য কিছুটা খুশি হওয়ার কথা। প্রথম দুই ম্যাচে বাজে ব্যাটিংয়ের খেসারত দিয়ে সিরিজ খোঁয়াতে হয়েছে। প্রথম ম্যাচে ৯২ ও পরের ম্যাচে ১৩০ রানের পর আজ উঠেছে ৭ উইকেটে ১৮২। ব্যাটিংটা স্বস্তি দেবে শাদাবকে। বোলিংয়েও নয় কি! ২০ বছর বয়সী তরুণ পেসার ইহসানউল্লাহ নিয়েছেন ৩ উইকেট, গতি ও বাউন্সও ছিল দেখার মতো। তাঁর প্রথম বলেই চোয়াল ফাটিয়ে দিয়েছেন নজিবউল্লাহ জাদরানের। যাঁকে রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে।
বড় রান তাড়া করতে নেমে আফগানিস্তানের শুরুটাই মনমতো হয়নি। পঞ্চম ওভারে ৩৫ রানে রহমান গুরবাজকে ইহসানউল্লাহ তুলে নেন। ১১ এল ১৮ রান করা গুরবাজ ও অন্য ওপেনার সাদিকুল্লাহ আতাল পাওয়ার প্লে-র ৬ ওভার কাজে লাগাতে পারেননি। আফগানিস্তান যেখানে ২ উইকেট হারিয়ে ৩৭ রান তুলেছে পাকিস্তান সেখানে প্রথম ৬ ওভারে তুলেছে ২ উইকেটে ৫২। এমন মন্থর শুরুর পরের ওভারে ইব্রাহিম জাদরান ও ১১তম ওভারে মোহাম্মদ নবীকে হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে আফগানিস্তান। ইহসানউল্লাহর করা সেই ওভারে ফাইন লেগে দুই রান চুরি করতে গিয়ে তাঈব তাহিরে দুর্দান্ত থ্রোয়ে রান আউট হন নবী (১০ বলে ১৭)। পরের বলেই নজিবউল্লাহ জাদরান আঘাত পান। কিন্তু ইহসানউল্লাহর ঝড় তখনো শেষ হয়নি। করিম জানাতকে তুলে নেন পরের বলেই!
শাদাব এসে ১২তম ওভারে আরও দুটি উইকেট তুলে নেওয়ার পর ম্যাচে আফগানদের হার সময়ের ব্যাপারে পরিণত হয়। নজিবউল্লাহর ‘কনকাশন সাব’ হিসেবে নামা আজমতউল্লাহ ওমরজাই ২০ বলে ২১ রান তুলে শেষ দিকে কিছুটা লড়াই করার চেষ্টা করেন। শেষ পর্যন্ত ১৮.৪ ওভারে ১১৬ রানেই অলআউট আফগানিস্তান।
টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামা পাকিস্তান দ্বিতীয় ওভারে মোহাম্মদ হারিসকে হারালেও অন্য ওপেনার সাঈম আয়ুব ৪০ বলে ৪৯ রান করেন। আগের দুই ম্যাচে যথাক্রমে ১৭ ও ০ রানে আউট হওয়া এই বাঁহাতির দারুণ ক্যাচ নেন মুজিব উর রহমান। তার আগে উইকেটের চারপাশে অসাধারণ কিছু শট খেলেন ২টি ছক্কা ও ৪টি চারের মারে।
অধিনায়ক শাদাব ১৭ বলে ২৮ রান করেন। ২ ছক্কা ও ১ চারে ১৩ বলে ২৩ রান করেন আব্দুল্লাহ শফিক। আফগানিস্তানের হয়ে ২ উইকেট মুজিব উর রহমানের। ৩১ রানে ১ উইকেট নেন রশিদ খান। এর মধ্যে একটা কীর্তিও গড়েছেন। সর্বশেষ ৬টি আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে টানা ১০৬ বলে কোনো বাউন্ডারি হজম না করাটা তো কীর্তিই বটে!