শ্রীলঙ্কাকে হারাতে পারলে বাড়বে বাংলাদেশের সুপার এইটে যাওয়ার সম্ভাবনা

দুই দলের জন্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। শ্রীলঙ্কা জানে, বাংলাদেশের সঙ্গে জিতলে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে যাবে। শ্রীলঙ্কা প্রথম ম্যাচটা হেরে যে খুব বেশি পিছিয়ে গেছে, সেটি ভাবার কোনো কারণ নেই। বলা যায়, দুই দলই এ মুহূর্তে সমান অবস্থানে।

শক্তির কথা বিবেচনা করে যদি ধরে নেওয়া হয় যে দক্ষিণ আফ্রিকা সুপার এইটে যাবে, তাহলে দ্বিতীয় দল হিসেবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি লড়াইয়ে জেতা দলের সম্ভাবনাই বেশি। নেদারল্যান্ডস ও নেপালকে হিসাব থেকে সরিয়ে দিচ্ছি না, কিন্তু এ ম্যাচে জেতা দল যে মোমেন্টাম পাবে, তা দারুণ টনিক হিসেবে কাজ করবে পরবর্তী ম্যাচগুলোতে। আগামীকাল সকালের ম্যাচে বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা—দুই দলের ওপরই তাই বাড়তি চাপও থাকবে।

মাতিশা পাতিরানা, শ্রীলঙ্কার এই পেসার বাংলাদেশকে ভোগাতে পারে বলে মনে করেন নাজমূল আবেদীন
এএফপি

ডালাসের উইকেট নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তা নেই। এখানে যুক্তরাষ্ট্র প্রায় ২০০ রানের মতো স্কোর তাড়া করে জিতেছে। টস এই ম্যচের ভাগ্য নির্ধারণ করবে না, এটি ধরে নেওয়া যায়। চাপ সামলাতে পারলেই জেতার সম্ভাবনা বাড়বে। সেটিই বড় চ্যালেঞ্জ। অবশ্য শ্রীলঙ্কা–বাংলাদেশ ম্যাচে এখন এমনিতেই বাড়তি ঝাঁজ থাকে, তার ওপর এটি বিশ্বকাপ। সত্যিকারের যারা ক্রিকেটবোদ্ধা, তাদের কাছে ব্যাট-বলের লড়াই ছাপিয়ে অন্য মনস্তাত্ত্বিক ও কৌশলগত দিকগুলোও আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে।

প্রথম ম্যাচে পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে শ্রীলঙ্কার কেউ রান করতে পারেনি। অবশ্য এমন কন্ডিশনে ব্যাটসম্যানদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। বরং কম স্কোর নিয়েও বোলারদের লড়াই তাদের বোলিং শক্তিটাকে ফুটিয়ে তুলেছে। বিশেষ করে অ্যাকশন ও গতির কারণে বড় হুমকি হবে মাতিশা পাতিরানা ও নুয়ান তুষারা। অন্যদিকে বাংলাদেশের পূর্ণ শক্তির বোলিং আক্রমণ পাওয়া নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। শরীফুল তো সম্ভবত খেলবে না। তাসকিন খেললেও চোট কাটিয়ে ফিরে কতটা ছন্দ থাকবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।

রিশাদ হোসেন। জাতীয় দলে অনুশীলনের এক ফাঁকে
প্রথম আলো

আমার বিশেষ দৃষ্টি থাকবে রিশাদের বোলিংয়ের দিকে। আমার বিশ্বাস, এ বিশ্বকাপে সে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। মাঝের ওভারগুলোতে উইকেট নিয়ে বাংলাদেশকে লড়াইয়ে রাখবে। সাকিব বেশ কিছুদিন ধরে তার মান অনুযায়ী খেলেনি। আশা করি, সে স্বরূপে ফিরবে। আর মাহমুদউল্লাহর বোলিংটাও দলের জন্য সুখবর। সৌম্য এক ওভার করে ফেলতে পারলে তো কথাই নেই। এখন ব্যাটসম্যান না কমিয়েই বোলিংয়ে বিকল্প পাওয়া যাচ্ছে, এটি স্বস্তিকর।

কিছুদিন ধরে বারবারই সামনে আসছে ব্যাটিং–ব্যর্থতা। তবে আমার মনে হচ্ছে, টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা দারুণভাবে জ্বলে না উঠলেও ভালো শুরু এনে দেবে। এবারের বিশ্বকাপে বড় স্কোর কমই হচ্ছে। তার ওপর এ ম্যাচে চাপ থাকবে। প্রথমে ব্যাটিং করলে শুরুতে ১৬০ রানের মতো লক্ষ্য নিয়ে ব্যাটিং করাই ভালো। বাংলাদেশ এ ধরনের স্কোর গড়তে অভ্যস্ত। এটি টপ অর্ডারের ব্যাটসম্যানদের চাপ কিছুটা কমিয়ে দেবে। আশা করি সেই মানসিক শক্তির পরিচয়টা তারা দিতে পারবে।