ভারতের দুই ‘মাথা’কে তুলে নিলেও বন্ধুর ক্যাচ ফেলে আক্ষেপ সৌরভের
যুক্তরাষ্ট্র ক্রিকেটের ‘কাল্ট’ হিরো তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের পেসার সৌরভ নেত্রবালকার কী করতে পারেন, কী করছেন, সেটা এখনো ক্রিকেট দুনিয়ার চোখের সামনে। সুপার ওভারে পাকিস্তানের বিপক্ষে জয় এনে দেওয়া সৌরভ কাল ৭ বলের ব্যবধানে আউট করেছেন ভারতের বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মাকে। ক্রিকেট দুনিয়ার সবাই জানেন, এ দুই নামের ওজন কতটা!
সৌরভ কাল অবশ্য তাঁদের ওজন বুঝতে সময় নেননি। প্রথম বলেই আউট করেন কোহলিকে। যা টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে কোহলির প্রথম। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এর আগে কখনো তিনি শূন্য রানে আউট হননি। রোহিতকে ফিরিয়েছেন পরের ওভারে। ভারতীয় ক্রিকেটের দুই ‘মাথা’কে তুলে নিয়ে সৌরভ কাল যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ভারতের হারের শঙ্কাই জাগিয়েছিল। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি।
সৌরভের সঙ্গে ভারতের নামটা কীভাবে জড়িয়ে আছে, সেটা নিশ্চয়ই নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই। ভারতের সৌরভই মূলত এখন যুক্তরাষ্ট্রের হয়ে খেলছেন, কথাটা এভাবেই বলা যায়। ভারতে জন্ম নেওয়া, ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব–১৯ বিশ্বকাপ খেলা এই ক্রিকেটার ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে খেলেছেন। হারের চোখ রাঙানিও দিয়েছেন।
সেই সৌরভ এ নিয়ে বলেছেন, ‘আজকের জন্য অনেক রোমাঞ্চিত ছিলাম। আমার জন্য অনেক আবেগময় মুহূর্তও ছিল। কারণ, ২০১০ সালে ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব–১৯ খেলেছিলাম। কিছু খেলোয়াড়ের সঙ্গে ছোটবেলা থেকে খেলেছি। নিজ দলের হয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছি। ভারতের বড় দুই ক্রিকেটারকে আউট করতে পেরেছি। স্বাভাবিকভাবেই ভালো লাগছে। পিচও সাহায্য করেছে।’
সুযোগ তৈরি করা সৌরভ সুযোগ খুইয়েছেনও। ইনিংসের ১৩তম ওভারে সূর্যকুমার যাদবের ক্যাচ ছেড়েছেন। তখন সূর্যের রান ছিল মাত্র ২২। ভারতের প্রয়োজন ছিল ৪৫ বলে ৫৩ রান। এরপর ফিফটি করে সেই ম্যাচ ১০ বল বাকি থাকতেই বের করে ফেলেন সূর্য। যাঁর ক্যাচ ছেড়েছেন, সেই সূর্যের আবার খুব কাছের বন্ধু সৌরভ। একসঙ্গে খেলেছেন অনূর্ধ্ব–১৫ থেকে। কে জানে, বল যখন সূর্যের ব্যাট ছুঁয়ে আকাশে উড়ছিল, তখন সেই দিনগুলোর কথাই মনে পড়েছিল কি না সৌরভের!
ক্যাচ ছেড়ে সৌরভ নিজেও বুঝেছেন, বড় সুযোগ মিস হয়ে গেছে। তিনি ম্যাচ শেষে বলেছেন, ‘দায়টা আমার। ক্যাচটা যদি নিচে পারতাম, তখন ভারতকে আরও চাপে ফেলতে পারতাম।’
তবে এই ক্যাচ মিসেই কাল্ট হিরো থেকে সৌরভ ভিলেনে পরিণত হননি। তাঁকে নিয়ে করা ভারতের সাবেক ক্রিকেটার নভোজিৎ সিং সিধুর উক্তিটিই বোধ হয় এখন মানানসই। স্টার স্পোর্টসে তিনি বলেছেন, ‘গুরু, তুমি তো একের ভেতর সব। তুমি ইঞ্জিনিয়ার, তুমি সূর্যুকুমারের বন্ধু, তুমিই আবার ভারতের উইকেটও নিচ্ছ, আর কী কী করো তুমি!’