এক বলেই এলোমেলো খুলনা, রংপুরের টানা সাত জয়

শেষ ওভারে দারুণ বোলিং করে রংপুরের জয় নিশ্চিত করেন সাইফউদ্দিনশামসুল হক

রংপুর রাইডার্সের পেসার আকিফ জাভেদের করা ১৯তম ওভারের প্রথম বলটা গিয়ে আঘাত করল তাঁর পায়ে। উইকেটে লুটিয়ে পড়া মাহিদুল ইসলাম ফিজিওর শুশ্রূষা নিয়ে আবার ব্যাটিংয়ে দাঁড়িয়েও টিকতে পারেননি। আকিফের পরের বলটাই এলোমেলো করে দেয় তাঁর স্টাম্প।

আরও পড়ুন

খুলনা যেন ছন্দ হারিয়ে ফেলল তখনই। নতুন ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস ওভারের পঞ্চম বলে বাউন্ডারি মারলেও পরের বলে ইফতিখার আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেছেন। ১২ বলে ১৮ রানের সমীকরণ তখন ৬ বলে ১২ রানের। টি-টোয়েন্টি ম্যাচে সেটাও কঠিন কিছু নয়। কিন্তু কঠিন হলো তীরে এসে তরি ডোবানো খুলনার জন্য।
সাইফউদ্দিনের করা শেষ ওভারে ১২ রান করা তো দূরের কথা, স্নায়ুচাপে ভোগা খুলনা দুটি রান আউটসহ হারিয়ে বসল ৩ উইকেট, নিতে পারল মাত্র ৩ রান! রংপুরকে এবারের বিপিএলের প্রথম হারের স্বাদ দেওয়ার সম্ভাবনা জাগিয়েও উল্টো ৮ রানের পরাজয়ে নিজেরাই হারল টানা তিন ম্যাচ। ঢাকায় দুই ম্যাচ জিতে আসা খুলনা সিলেট থেকে চট্টগ্রামে যাচ্ছে টানা তিন ম্যাচ হেরে। অন্যদিকে সিলেট পর্বের শেষ ম্যাচেও জিতে সাত ম্যাচে এখনো অপরাজিত শীর্ষে থাকা রংপুর।

৩৯ রান করেন খুলনা অধিনায়ক মিরাজ
শামসুল হক

খুলনার সামনে ১৮৭ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল আজ রংপুর রাইডার্স। জবাবে ৩১ রানে ওপেনার দারবিশ রাসুলির বিদায়ের পর ৬১ রানের জুটি গড়েন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ ও আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। ২৪ বলে ৩৯ রান করে ফিরেছেন মিরাজ। রংপুরের হয়ে টানা সপ্তম ম্যাচ খেলতে নামা জাতীয় দলের পেসার নাহিদ রানার করা ষষ্ঠ ওভারে দুই ছক্কা ও এক চারে ১৬ রান নেন তিনি।

আরও পড়ুন

নাহিদকে টানা ম্যাচ খেলিয়েই যাচ্ছে রংপুর। হয়তো সেই ক্লান্তি থেকেই আজ বেশ খরুচে হয়ে উঠেছিলেন তিনি। তিন ওভার বোলিং করে দিয়েছেন ১৬, ৩ ও ১৮ রান। ৩ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে থেকেছেন উইকেটশূন্য। আজই সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় হয়তো সে কারণেই ধারাভাষ্যকার ও কিংবদন্তি ক্যারিবিয়ান ফাস্ট বোলার কার্টলি অ্যামব্রোস বলেছেন, ‘আমি কিছুটা চিন্তিত তার বেশি খেলা নিয়ে। সে তরুণ, এখনো উন্নতি করছে। তাকে এত দ্রুত বেশি ম্যাচ খেলানো উচিত নয়। তার শরীর এখনো পুরো তৈরি নয়।’

২৯ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা রংপুরের পাকিস্তানি পেসার আকিফ জাভেদ
শামসুল হক

মিরাজের আউটের পরও নাঈমের ৪১ বলে ৫৮ ও আফিফ হোসেনের ১৫ বলে ২৯ রান ভালোভাবে ম্যাচে রাখে খুলনাকে। ১৮তম ওভারের প্রথম বলে দলকে ১৬৫ রানে রেখে আফিফ আউট হওয়ার পর বাকি কাজটা করছিলেন মাহিদুল। কিন্তু তাঁর পায়ে আঘাত করা ওই বলটার পর খুলনার সবই যেন এলোমেলো!

এর আগে দুই পাকিস্তানি ইফতেখার আহমেদ ও খুশদিল শাহর ব্যাটে ঝড় না উঠলে খুলনার সামনে হয়তো ১৮৭ রানের লক্ষ্য দিতে পারত না রংপুর। ১১ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৭৫ রান করা রংপুরের রানটা দ্রুত বাড়িয়েছেন চতুর্থ উইকেটে ৯.২ ওভারে ১১৫ রানের জুটি গড়া খুশদিল ও ইফতেখার।

রংপুরের হয়ে অপরাজিত ৭৩ রান করেন খুশদিল
শামসুল হক

ছয় ছক্কা আর চার বাউন্ডারিতে ৩৫ বলে ৭৩ রান করে অপরাজিত ছিলেন খুশদিল। নাসুম আহমেদের করা ১৫তম ওভারের প্রথম চার বলেই তিনি মেরেছেন চার ছক্কা। শেষ ওভারের পঞ্চম বলে হাসান মাহমুদের বলে এলবিডব্লু ইফতেখারের রান পাঁচ বাউন্ডারিতে ৩৬ বলে ৪৩।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর রাইডার্স: ২০ ওভারে ১৮৬/৫ (খুশদিল ৭৩*, ইফতিখার ৪৩, তাওফিক ৩৬; আবু হায়দার ২/৩৭, হাসান ২/৩৮)।

খুলনা টাইগার্স: ২০ ওভারে ১৭৮/৯ ( নাঈম ৫৮*, মিরাজ ৩৯, আফিফ ২৯; আকিফ ৩/২৯, সাইফউদ্দিন ২/২৮, মেহেদী ২/২৭, নাহিদ ০/৩৭)।

ফল: রংপুর ৮ রানে জয়ী।

ম্যাচসেরা: আকিফ জাভেদ (রংপুর রাইডার্স)