সিমন্সের আগে যেখানে শুধুই তিনজন

অক্টোবরে বাংলাদেশ দলের অন্তবর্তীকালীন কোচের দায়িত্ব নেন ফিল সিমন্সপ্রথম আলো

কোচ হিসেবে ফিল সিমন্সের সময়টা এখন খুব একটা স্বস্তিদায়ক নয়। বাংলাদেশ দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুটিতেই হেরে গেছেন। সিমন্সের দল এখন সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেতে ধবলধোলাইয়ের শঙ্কায়।

আগামীকালের এই ম্যাচ বাংলাদেশ দলের জন্য ধবলধোলাই এড়ানোর হলেও সিমন্সের জন্য বিশেষ উপলক্ষের। এটি হতে যাচ্ছে কোচ হিসেবে সিমন্সের ৪০০তম আন্তর্জাতিক ম্যাচ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সিমন্সের আগে ৪০০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা আছে তিনজনের। তবে সে তিনজনের কেউই এখন কোনো জাতীয় দলের সঙ্গে নেই।

ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে ২৬ টেস্ট ও ১৪৩ ওয়ানডে খেলা সিমন্স খেলা ছাড়েন ২০০২ সালে। ওই বছর জিম্বাবুয়েতে হারারের একটি একাডেমি দিয়ে তাঁর কোচিং ক্যারিয়ার শুরু। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোচ হিসেবে অভিষেক ২০০৪ সালের মে মাসে জিম্বাবুয়ের ম্যাচ দিয়ে। সেই থেকে গত ২০ বছর সিমন্স কোচিং করিয়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আয়ারল্যান্ড, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশকে। দীর্ঘ কোচিং ক্যারিয়ারে সবচেয়ে বড় অর্জন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২০১৬ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতানো।

ডানকান ফ্লেচার ভারতের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুই দশকে ৪০০টি ম্যাচে কোচিং করানো নিয়ে সিমন্স অবশ্য অতি উচ্ছ্বাসে ভাসতে রাজি নন। ইএসপিএনক্রিকইনফোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ৬১ বছর বয়সী এই কোচ বলেন, ‘আমি আসলে সংখ্যা নিয়ে মাথা ঘামাই না। তবে ৪০০ ম্যাচ হতে যাচ্ছে শুনে বিস্মিতই হয়েছি। যখন কোচিং শুরু করি, তখন তো এসব মাথায় ছিল না। তবে মাইলফলকে পৌঁছানো চমৎকার ব্যাপার। এর মানে হচ্ছে আমি কিছুটা হলেও ঠিকঠাক করেছি।’

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি ম্যাচে কোচের দায়িত্ব পালন করার রেকর্ডটা ডানকান ফ্লেচারের। জিম্বাবুয়ের এই কোচ দুটি জাতীয় দলকে কোচিং করিয়েছেন। ইংল্যান্ডকে ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত, ভারতকে ২০১১ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত। ভারতকে ২০১৩ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জেতানো ফ্লেচার এখন পর্যন্ত ৪৪৯ ম্যাচে কোচিং করিয়েছেন।

দুই দফায় পাকিস্তানের কোচ ছিলেন মিকি আর্থার
ছবি : আইসিসি

ম্যাচসংখ্যায় ফ্লেচারকে টপকে যাওয়ার সবচেয়ে বড় সুযোগ মিকি আর্থারের। দক্ষিণ আফ্রিকার এই কোচ এরই মধ্যে ৪৩০ ম্যাচে কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা দিয়ে প্রধান কোচের কাজ শুরু করা আর্থার পরবর্তী সময়ে অস্ট্রেলিয়া, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে কোচিং করিয়েছেন। ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ছিলেন পাকিস্তানের দায়িত্বে।

বর্তমানে ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ক্রিকেটে কোচিং করানো আর্থার ফ্র্যাঞ্চাইজি দল নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকেন। এ মুহূর্তে বিপিএলের দল রংপুর রাইডার্সের সঙ্গে আছেন ৫৬ বছর বয়সী এই দক্ষিণ আফ্রিকান। আর্থার যদি আবার কোনো জাতীয় দলের দায়িত্ব নেন, ফ্লেচারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে যথেষ্টই।

অন্তত ৪০০ আন্তর্জাতিক ম্যাচে কোচিং করানো তৃতীয় কোচ ডেভ হোয়াটমোর। শ্রীলঙ্কান বংশোদ্ভুত এই অস্ট্রেলিয়ান কোচ ২০০৩ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত ছিলেন বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ। হোয়াটমোরের শুরুটা অবশ্য শ্রীলঙ্কা দিয়ে। ১৯৯৫–৯৬ এবং ১৯৯৯–২০০৩ মেয়াদে দুই দফায় শ্রীলঙ্কার কোচ ছিলেন তিনি, জিতেছেন ’৯৬ বিশ্বকাপও। পরবর্তী সময়ে হোয়াটমোর কোচিং করিয়েছেন পাকিস্তান, জিম্বাবুয়ে, এমনকি সিঙ্গাপুর ও নেপাল জাতীয় দলকেও। গত বছর বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ফরচুন বরিশালেরও কোচ ছিলেন হোয়াটমোর।

চতুর্থ কোচ হিসেবে ৪০০ ছুঁতে যাওয়া সিমন্সের মতে, কোচদের ভূমিকা এখন অনেক বদলে গেছে, ‘আমি যখন জিম্বাবুয়ের হয়ে শুরু করেছি বা আয়ারল্যান্ডের হয়ে কাজ করেছি, তখন আমাকে অনেক কাজ করতে হতো। এখন প্রধান কোচের ভূমিকা হয়ে গেছে ব্যবস্থাপকের মতো। সব খেলোয়াড় ও কোচিং স্টাফের কাজ ব্যবস্থাপনা করতে হয়।’

আরও পড়ুন