পেসারদের ‘অপ্রত্যাশিত’ পারফরম্যান্সে হতাশ হাথুরুসিংহে
পেসাররাই হবেন শক্তি—বাংলাদেশ দল বিশ্বকাপে গেছে এই স্লোগানে। কিন্তু আফগানিস্তানের পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও পাওয়ারপ্লের বোলিংয়ে সাফল্যের মুখ দেখেননি তাসকিন আহমেদরা। প্রধান কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে এমন পারফরম্যান্সে হতাশই হয়েছেন। এটিকে অপ্রত্যাশিতও বলছেন তিনি। অথচ বিশ্বকাপের আগে কী দারুণ ছন্দেই না ছিলেন বাংলাদশ দলের পেসাররা!
ধর্মশালায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে এসে হাথুরুসিংহে এ প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘ফাস্ট বোলাররা গত দুই ম্যাচে অপ্রত্যাশিতভাবে ভালো করছে না, বিশেষ করে পাওয়ারপ্লেতে।’
প্রধান কোচের ‘অপ্রত্যাশিত’ শব্দটা ব্যবহার করার পেছনে যুক্তি আছে। ২০২২ সাল থেকে বাংলাদেশ পাওয়ারপ্লের বোলিংয়ের দিক থেকে বিশ্বের তৃতীয় সেরা দল। ৩৪ ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ দলের পেসাররা প্রথম ১০ ওভারে ৫৯ উইকেট নিয়েছেন। গড়ের (২৩.৭) দিক থেকে বাংলাদেশই এই তালিকার শীর্ষে। অথচ বিশ্বকাপে এসে পেসাররা যেন লাইন-লেংথই ধরে রাখতে পারছেন না ম্যাচের এ পর্যায়ে।
হাথুরুসিংহের কথায় তাই হতাশাটা স্পষ্ট। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘সাধারণত সকালে শুরু হওয়া ম্যাচগুলোতে পেসারদের জন্য কিছু না কিছু থাকে। আজকেও সিম মুভমেন্ট ছিল, উইকেট একটু ভেজা ছিল, কিছুটা অসম গতির ছিল। ওদের দুজন ওপেনারদের প্লে অ্যান্ড মিস হয়েছে কিছু, তাদের ভাগ্যও ভালো ছিল। তবে তারা ভালো ব্যাটিং করেছে। যদি ওরা (পেসাররা) শুরুতে উইকেট নিতে পারত, তাহলে ম্যাচটা ভিন্ন হতে পারত।’
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পেসাররা যে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেননি, সেটাও বোঝা যায় হাথুরুসিংহের পরের কথায়, ‘অফ স্টাম্পের বাইরে বল করার পরিকল্পনা ছিল না। স্টাম্প বরাবর বোলিং করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু পরিকল্পনাটা ঠিকমতো বাস্তবায়ন করতে পারিনি। বিশেষ করে এই ম্যাচে। আগের ম্যাচে আমরা স্পিন দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পেরেছি। এই ম্যাচে আমাদের স্পিনাররা ম্যাচে ফেরাতে পারেনি। কারণ, ওরা বুদ্ধিদীপ্ত ব্যাটিং করেছে।’
বাংলাদেশ দল আজ টসে জিতে ইংল্যান্ডকে প্রথমে ব্যাটিংয়ে পাঠায়। এই সিদ্ধান্তও পেসারদের সাম্প্রতিক ফর্মের কথা ভেবেই নেওয়া, ‘আগে বল করার সিদ্ধান্ত ভুল ছিল, এটা মনে করি না। উইকেটে পেসারদের জন্য কিছু না কিছু তো ছিলই। বিশেষ করে খেলাটা যখন ১০-৩০ মিনিটে শুরু হয়েছে। গতকাল বৃষ্টিও হয়েছে। আমরা ভালো জায়গায় বল করিনি, লেংথ ও লাইন ভালো ছিল না।’
পাওয়ারপ্লের বোলিং খারাপ হলেও পেসারদের ডেথ বোলিংয়ে স্বস্তি খুঁজে নিচ্ছেন হাথুরুসিংহে। বিশেষ করে বাঁহাতি পেসার শরীফুল ইসলাম শেষ স্পেলে বোলিংয়ে এসে নাকল বল ও অফ কাটারে ৩ উইকেট শিকার করেছেন। তাতে ইংল্যান্ডের রানের গতি কিছুটা কমে আসে।
পুরো বোলিং পারফরম্যান্সের মধ্যে এই ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন হাথুরুসিংহে, ‘যেভাবে শুরু করেছি, তাতে কিছুটা হতাশ। আমরা আরও বেশি বল স্টাম্পে করতে পারতাম। বিশেষ করে প্রথম ১০ ওভারে। তবে আমরা ভালোভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছি। বিশেষ করে শরীফুল সাহসী বোলিং করেছে। তার বৈচিত্র্যগুলো খুব কার্যকর ছিল। ওই উইকেটগুলো না নিলে ইংল্যান্ডের রান ৪০০ হয়ে যেত। হ্যাঁ, কিছু ইতিবাচক (দিক) তো আছেই। তবে আমরা ভালো বোলিং করিনি।’