ভারত ‘এ’ দলের একাদশের মাত্র দুজন ক্রিকেটারের টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে। জয়ন্ত যাদব ও নবদীপ সাইনি মিলে খেলেছেন ৮টি টেস্ট। বাংলাদেশ ‘এ’ দলের একাদশে সেখানে আছেন সাবেক টেস্ট অধিনায়কসহ এই সংস্করণে খেলা আটজন, তাঁদের মধ্যে ছয়জনের আবার ভারতের বিপক্ষে আসন্ন সিরিজে দলে থাকার সম্ভাবনাও প্রবল।
অথচ সেই বাংলাদেশ ‘এ’ দলই কক্সবাজারে প্রথম আন-অফিশিয়াল টেস্টের প্রথম দিন ভারত ‘এ’ দলের সামনে অসহায় হয়ে পড়ল। সাতে নামা মোসাদ্দেক হোসেনের ৮৮ বলে ৬৩ রানের ইনিংসের পরও বাংলাদেশ ‘এ’ প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যায় ১১২ রানে। এরপর যশস্বী জয়সোয়াল ও অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণের ওপেনিং জুটিটাই ভাঙতে পারেনি স্বাগতিকেরা। দুজন মিলে তুলেছেন ৩৬ ওভারে ১২০ রান। জয়সোয়াল অপরাজিত ১০৬ বলে ৬১ রান করে, ঈশ্বরণ ১১১ বল খেলে করেছেন ৫৩ রান।
টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে দ্বিতীয় ওভারেই মাহমুদুল হাসানকে হারায় বাংলাদেশ ‘এ’। ৯ বলে ১ রান করে সাইনির ফুল লেংথের বলে সামনে ঝুঁকে ঘুরিয়ে খেলতে গিয়ে বোল্ড। লাইন পুরোই মিস করে গেছেন, কীভাবে সেটি হলো, তা যেন বুঝেই উঠতে পারছিলেন না। পরের ওভারে মুকেশ কুমারের অফ স্টাম্পের বাইরের বল তাড়া করতে গিয়ে উইকেটকিপার উপেন্দ্র যাদবের হাতে ক্যাচ দেন জাকির হাসান। শুরুতে ‘এ’ দলে ছিলেন না জাকির, তৌহিদ হৃদয় চোটে পড়ায় ডেকে পাঠানো হয় জাতীয় লিগে দারুণ পারফর্ম করা জাকিরকে। তবে প্রথম সুযোগে কোনো রান করতে পারলেন না তিনি।
মুকেশের পরের শিকার মুমিনুল হক। সপ্তম ওভারের শেষ বলটি ছেড়ে দিতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন সাবেক টেস্ট অধিনায়ক। আগের বলেও তা–ই করেছিলেন, তবে পরেরটিতে প্রত্যাশামতো বাউন্স ছিল না। এ নিয়ে সব সংস্করণে সর্বশেষ ১৬ ইনিংস মিলিয়ে মুমিনুলের ফিফটি মাত্র একটি, দুই অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই আউট ১১ বার।
ভারত সিরিজের ওয়ানডে দলে থাকা নাজমুল হোসেন ও ‘এ’ দলের অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ফিরেছেন ৫ বলের মধ্যে। সাইনির ফুল লেংথের বলে সামনে ঝুঁকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ক্যাচ দেন নাজমুল। শুরুতে ভালো কয়েকটি ড্রাইভ করলেও একসময় নিজেকে গুটিয়ে নেন এ বাঁহাতি। মিঠুন ফেরেন অতীত শেঠের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জোরের ওপর খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়ে। সে সময় ২৬ রানেই পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ ‘এ’। মধ্যাহ্নবিরতির আগে-পরে ষষ্ঠ উইকেটে জাকের আলীকে নিয়ে মোসাদ্দেক যোগ করেন ৩৭ রান। সাইনির তৃতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার আগে জাকের ৪৭ বল খেলে করেন ৪।
তাইজুলের সঙ্গে মোসাদ্দেকের জুটিতে ওঠে ৪২ রান। মাত্র ৫৪ বলেই ফিফটি পূর্ণ করেন মোসাদ্দেক, ইনিংসে ৬টি চারের সঙ্গে মারেন ৩টি ছক্কা। বাঁহাতি স্পিনার সৌরভ কুমারের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। মোসাদ্দেক ফেরার পর বাংলাদেশ ‘এ’ দলের ইনিংস বেশিক্ষণ টেকেননি, সৌরভের ৩ বলের মধ্যে এলবিডব্লু হন শেষ দুই ব্যাটসম্যান রেজাউর রহমান ও খালেদ আহমেদ। বাংলাদেশ ‘এ’ গুটিয়ে যায় ৪৫ ওভারের মধ্যেই।
চা-বিরতির পর ব্যাটিংয়ে নামা ভারত ‘এ’ দলকে তেমন ঝামেলায় ফেলতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা। ১৪.১ ওভারে ৫০ ছুঁয়ে ফেলে সফরকারীরা, ২৬.৪ ওভারে আসে ১০০ রান। জয়সোয়াল ফিফটি পূর্ণ করেন ৮৬ বলে, ঈশ্বরণের লাগে ৯১ বল। এখন পর্যন্ত ইনিংসে ৮টি চার মেরেছেন জয়সোয়াল, ঈশ্বরণ মেরেছেন ৬টি। খালেদ, রেজাউরের পর দুই স্পিনার তাইজুল ও নাঈম হাসানের সঙ্গে মোসাদ্দেককেও এনেছেন মিঠুন, তবে সফল হননি কেউ।