পাকিস্তানকে হারিয়ে ২০ বছর পর কিউইদের ট্রফি জয়

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আগে সেরা প্রস্তুতিই হয়েছে নিউজিল্যান্ডের।এএফপি

যেকোনো টুর্নামেন্টের ফাইনাল মানে একটি অভিযানের সমাপ্তি। তবে আজ করাচির ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে হওয়া পাকিস্তান–নিউজিল্যান্ড লড়াই শুধু ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালই ছিল না, আরেকটি বড় আসরের চূড়ান্ত মহড়াও ছিল। ১৯ ফেব্রুয়ারি একই মাঠে আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির উদ্বোধনী ম্যাচেও যে এ দুই দলই আবার মুখোমুখি!

শিরোপা নির্ধারণী বলা হোক বা চূড়ান্ত মহড়া—হাসিটা শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের। পাকিস্তানের দেওয়া ২৪৩ রানের লক্ষ্য কিউইরা টপকে গেছে ২৮ বল আর ৫ উইকেট হাতে রেখে। সফরকারী নিউজিল্যান্ড অবশ্য ম্যাচটিকে ‘ফাইনাল’ হিসেবেই বেশি আপন করে নিতে চাইবে। ২০০৫ সালের পর এই প্রথম যে সাদা বলে বহুজাতিক টুর্নামেন্ট জিতল নিউজিল্যান্ড।

করাচির অসম বাউন্সের মাঠে রান তাড়ায় তেমন বেগই পেতে হয়নি কিউইদের। দ্বিতীয় ওভারে উইল ইয়াংয়ের (নাসিম শাহর বলে এলবিডব্লু) উইকেট হারালেও তিনে নামা কেইন উইলিয়ামসনকে নিয়ে দলকে জয়ের পথে রাখেন ডেভন কনওয়ে।

এই দুজনের দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে নিউজিল্যান্ড পায় ৭১ রান। উইলিয়ামসন সালমান আগার বলে ৩৪ রান করে ফিরলেও কনওয়ে টিকেছিলেন দলকে ১০০ পার করানো পর্যন্ত। ৭৪ বলে ৪৮ রান করা কনওয়ে নাসিমের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হওয়ার পর জয় নিশ্চিতে বাকি কাজটি করেন ড্যারিল মিচেল ও টম ল্যাথাম।

নিউজিল্যান্ডের জয় সহজ করেছেন মিডল অর্ডারের ব্যাটসম্যানেরা।
এএফপি

চতুর্থ উইকেটে এই দুজন গড়েন ইনিংস সর্বোচ্চ ৮৭ রানের জুটি। মিচেল করেন ৫৮ বলে ৫৭ রান, ল্যাথাম ৬৪ বলে ৫৪। ল্যাথামকে অবশ্য শুরুতেই ফিরিয়ে দিতে পারত পাকিস্তান। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান ১৫ রানে ফিরতি ক্যাচ দিয়েছিলেন শাহিন শাহ আফ্রিদির হাতে, ১৯ রানে আবরারের বলে সৌদ শাকিলের হাতে। দুবার ‘জীবন’ পাওয়া ল্যাথাম শেষ পর্যন্ত যখন শাহিনের বলে আউট হন, নিউজিল্যান্ডের জয় তখন মাত্র ১১ রান দূরে।

আরও পড়ুন

এর আগে পাকিস্তানও রান যা পেয়েছে, মিডল অর্ডারের সৌজন্যেই। বাবর আজম আরও একবার ভালো শুরু করে ইনিংস লম্বা করতে ব্যর্থ। এর আগে ফখর জামান ও সৌদ শাকিলরা ফিরে যাওয়ায় পাকিস্তান তৃতীয় উইকেট হারায় ৫৪ রানে।

পাকিস্তানের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৬ রান করেন মোহাম্মদ রিজওয়ান।
এএফপি

শুরুর ধাক্কা সামাল দিতে ব্যাটিংয়ে নেমে রিজওয়ান ছিলেন অতি সতর্ক। প্রথম রানে পৌঁছাতে খেলেছেন ১৩ বল, সালমান আগাও ছিলেন দেখেশুনে খেলার ভাবনায়। এই দুজন চতুর্থ উইকেটে যোগ করেন ৮৮ রান। রিজওয়ান ৭৬ বলে ৪৬ রান করে ফেরার পর সালমানও বেশিক্ষণ টেকেননি (৬৫ বলে ৪৫)।

শেষ দিকে তাইয়াব তাহিরের ৩৩ বলে ৩৮ ও ফাহিম আশরাফের ২১ বলে ২২ রানের ইনিংসের সুবাদে পাকিস্তানের রান আড়াই শর কাছাকাছি যায়। যদিও জয়ের জন্য তা যথেষ্ট হয়নি। সহজেই তাড়া করে ট্রফি জিতে নিয়েছে নিউজিল্যান্ড, যে দলটি একুশ শতকে খেলা সাদা বলের ১৩তম ফাইনালে পেল পঞ্চম জয়, ২০ বছর পর প্রথম। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়েতে স্বাগতিক দল ও ভারতসহ আয়োজিত ভিডিওকন ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে সৌরভ গাঙ্গুলিদের ৬ উইকেটে হারিয়ে ট্রফি জিতেছিল স্টিফেন ফ্লেমিংয়ের দল।

আরও পড়ুন

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

পাকিস্তান: ৪৯.৩ ওভারে ২৪২ (রিজওয়ান ৪৬, সালমান ৪৫, তাহির ৩৮, বাবর ২৯; ও’রুর্ক ৪/৪৩, স্যান্টনার ২/২০, ব্রেসওয়েল ২/৩৮)। নিউজিল্যান্ড: ৪৫.২ ওভারে ২৪৩/৫ (মিচেল ৫৭, ল্যাথাম ৫৬, কনওয়ে ৪৮, উইলিয়ামসন ৩৪; নাসিম ২/৪৩)। ফল: নিউজিল্যান্ড ৬ উইকেটে জয়ী। ম্যান অব দ্য ম্যাচ: উইলিয়াম ও’রুর্ক।