বিসিবিতে সহসভাপতি নেই বলেই যত সংকট
সরকার পতনের পর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান ইংল্যান্ডে চলে গেছেন বলে খবর। অন্য পরিচালকদের বেশির ভাগও গা ঢাকা দিয়েছেন। তবে দৃশ্যপটে যে পরিচালকেরা আছেন, তাঁদের নিয়ে তেমন বিতর্ক নেই।
বরং এই পরিচালকদের মধ্যে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক যেমন আছেন, আছেন পোড় খাওয়া অভিজ্ঞ ক্রিকেট সংগঠকও। আইসিসির নিষেধাজ্ঞায় পড়ার শঙ্কা যেহেতু আছে, বিসিবি কি পারে আপৎকালীন সময়ে এই নির্বাচিত পরিচালকদের নিয়েই কার্যক্রম চালাতে?
গতকাল যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার সঙ্গে বিসিবির যে আট সদস্যের প্রতিনিধিদল সাক্ষাৎ করেছে, সেখানে পরিচালক ছিলেন সাতজন। তাঁদের সঙ্গে আরও দুই পরিচালক যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও একজন ঢাকার বাইরে থেকে আসতে না পারায় ও আরেকজন ব্যক্তিগত কারণে যেতে পারেননি। এর বাইরেও আরও দু–একজন পরিচালক আছেন, যাঁরা বর্তমান পরিস্থিতিতেও পারেন বিসিবিতে ভূমিকা রাখতে।
অবশ্য বিরোধী একটি পক্ষ এরই মধ্যে সব পরিচালকের পদত্যাগ দাবি করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে বিসিবিতে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে। কিন্তু তা করার বাস্তবসম্মত কোনো উপায় স্পষ্ট নয়। বিসিবির গঠনতন্ত্রেও এ রকম পরিস্থিতিতে করণীয় সম্পর্কে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা নেই।
বোর্ডের প্রতিনিধিদলকে তাই ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ নির্দেশনা দিয়েছেন, আইসিসির নিয়মের মধ্যে থেকে কী করা যায়, সেটি দেখতে। সভার পর সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘বিসিবি আইসিসির অধীনে একটি ফেডারেশন। এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারব না। যাঁরা বিসিবির পরিচালক আছেন, তাঁরা আইসিসির নিয়মের মধ্যে থেকে কীভাবে বিষয়টি সমাধান করা যায়, সেটি দেখবেন। অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য কাউকে নিয়োগ দেওয়া যায় কি না, সেই বিষয়ে তাঁরা আমাদের পরবর্তী সময়ে জানাবেন। এ বিষয়ে আমরা প্রক্রিয়াটি চালু রাখব।’
সভায় উপস্থিত বোর্ড পরিচালক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান বলেছেন, ‘ক্রীড়া উপদেষ্টা জানতে চেয়েছেন সভাপতি ছাড়া কাজ করতে বোর্ডের কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না। সভাপতির অনুপস্থিতিতে গঠনতন্ত্র মেনে অন্য কেউ দায়িত্ব নিতে পারবেন কি না, জানতে চেয়েছেন সেটাও।’
গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিসিবির পরিচালনা পর্ষদে সহসভাপতির দুটি পদ থাকলেও বোর্ড কখনোই সহসভাপতি নির্বাচন করেনি। বর্তমান সংকটময় পরিস্থিতির বড় কারণ সেটাই। সক্রিয় পরিচালকদের সংখ্যা ৯–১০ জন হয়ে গেলে যেহেতু বিসিবি কোরাম (ন্যূনতম ৯ জন) সংকটে পড়বে না, সভাপতির অনুপস্থিতিতে অন্তর্বর্তী সময়ে সহসভাপতিই পারতেন বোর্ড চালাতে।
অবশ্য কোরাম পূর্ণ হলে এখনো বোর্ড সভা ডেকে সহসভাপতি নির্বাচন সম্ভব। সভাপতি পদত্যাগ করলে সম্ভব নতুন সভাপতি নির্বাচন করাও। কিন্তু সে ক্ষেত্রে প্রশ্ন—সভাপতির অনুপস্থিতিতে বোর্ড সভাটা ডাকবে কে?
সূত্র জানিয়েছে, এ ব্যাপারে আইনি পরামর্শ নিতে পারে বোর্ড। তবে ক্রীড়া উপদেষ্টার মতো বোর্ড কর্মকর্তাদেরও অগ্রাধিকার—নারী টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা আগে নির্বিঘ্নে হয়ে যাক বাংলাদেশে।