এশিয়া কাপে চোখ রাখবেন যে লড়াইয়ে
দেশের বিপক্ষে দেশের লড়াই। আর সেই লড়াইয়ের ভেতরে থাকে ছোট ছোট অনেক লড়াই। নির্দিষ্ট বোলার-ব্যাটসম্যানের মধ্যকার ছোট ছোট ওই সব লড়াই নির্ধারণ করে দেয় ম্যাচের গতিপথ। তিন দিন পর শুরু হতে যাওয়া এশিয়া কাপেও দেখা মিলবে লড়াইয়ের ভেতরের ছোট ছোট লড়াইয়ের। তবে কিছু লড়াই নিয়ে কৌতূহল থাকে আগে থেকেই। সবাই দেখার অপেক্ষায় আছে, এমন কিছু লড়াইয়ের তালিকা করেছে ইএসপিএনক্রিকইনফো। তবে সেই লড়াইয়ে নামতে হলে লড়াইয়ের যোদ্ধাদের দলকে আগে নিশ্চিত করতে হবে সুপার ফোর খেলা।
বাবর বনাম রশিদ: যা দেখার অপেক্ষায় সবাই
দর্শকেরা তো বটেই, স্বয়ং বাবর আজম আর রশিদ খানই এই লড়াইয়ের অপেক্ষায় থাকার কথা। বাবরের জন্য অপেক্ষা ‘প্রতিশোধ নেওয়ার’, রশিদের জন্য ‘আবারও দেখিয়ে দেওয়ার’। স্বীকৃত টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত পাঁচবার রশিদের মুখোমুখি হয়েছেন বাবর। আউট হয়েছেন পাঁচবারই। আউটের আগে যে কয়টা বল খেলতে পেরেছেন, সেখানেও খুব দাপুটে ছিলেন না বাবর—৪৮ বল খেলে ৫৯ রান। এশিয়া কাপে পাকিস্তান-আফগানিস্তান ম্যাচে তাই বাবর-রশিদের মুখোমুখি হওয়ার দৃশ্যটি বাড়তি মাত্রা যোগ করবে নিশ্চিতভাবে। দুই প্রতিবেশী দেশের ম্যাচ অবশ্য গ্রুপ পর্বে নেই। দুই দল সুপার ফোরে উঠলেই কেবল দেখা হবে।
কোহলি বনাম হাসারাঙ্গা: যে লড়াই কেবল শুরু
প্রতিপক্ষ, বন্ধু আবার প্রতিপক্ষ। কি, গোলমেলে লাগছে বিষয়টি? খোলাসা করা যাক। ভারত-শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হলে বিরাট কোহলি-ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা একে অপরের প্রতিপক্ষ। আর সেটিই ঘটেছে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে। তবে আইপিএলে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে একসঙ্গে খেলেছেন দুজন, সেই সুবাদে বন্ধু। বেঙ্গালুরুর হয়ে সর্বশেষ মৌসুমে দলগত সর্বোচ্চ ২৬ উইকেটও শিকার করেছেন হাসারাঙ্গা। সামনে এশিয়া কাপে ভারত-শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হওয়া মানে বন্ধু থেকে আবারও প্রতিপক্ষে পরিণত হবেন কোহলি-হাসারাঙ্গা। এমনিতে এখন পর্যন্ত প্রতিপক্ষ হিসেবে কেউ কারও চেয়ে এগিয়ে নেই। একবারই মুখোমুখি হয়েছিলেন। যেখানে ৬ বলে কোহলি নিতে পেরেছেন ৪ রান, উইকেট তুলতে পারেননি হাসারাঙ্গা। তারপরও হাসারাঙ্গা-কোহলির লড়াই দেখতে হবে। কারণ, ২৫ বছর বয়সী হাসারাঙ্গা হচ্ছেন সেই লেগ স্পিনার, যিনি বাঁহাতির চেয়ে ডানহাতি ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে বেশি সফল। এখন পর্যন্ত তাঁর টি-টোয়েন্টিতে নেওয়া ১১৬ উইকেটের ৮৬টিই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের। বিপরীতে লেগ স্পিনের বিপক্ষে কোহলির সাফল্যও কম নয়, গড়ে ৬২ রান।
রাজাপক্ষে বনাম শাদাব: অনেকের কাছেই অজানা যে লড়াই
রিস্ট স্পিন হিটার হিসেবে খ্যাতি আছে ভানুকা রাজাপক্ষের। ৩০ বছর বয়সী এই বাঁহাতি সাধারণত তিন-চারে ব্যাটিং করেন। পাকিস্তান-শ্রীলঙ্কা মুখোমুখি হলে তাঁর সঙ্গে দেখা হয়ে যাবে শাদাব খানের। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এখন পর্যন্ত তিনবার মুখোমুখি হয়েছেন এই দুজন। যেখানে ২৯ বলে ৪৫ রান তুলেছেন ৩০ বছর বয়সী লঙ্কান বাঁহাতি, শাদাব আউট করতে পেরেছেন মাত্র একবার।
মুশফিক বনাম হার্দিক পান্ডিয়া: যে লড়াইয়ের অপেক্ষায় ক্রিকেট
গত ছয় বছরে বিশ্ব অনেক কিছুই দেখেছে। একটি ভাইরাস, একটি ভ্যাকসিন, নতুন তারকা, নতুন নাচ। কিন্তু এই ছয় বছরে একটা ব্যাপার ঘটেইনি, টি-টোয়েন্টিতে হার্দিক পান্ডিয়া বনাম মুশফিকুর রহিমের দেখা। ২০১৬ সালের ২৩ মার্চ পান্ডিয়ার ওভারে ভারতকে বিশ্বকাপ থেকে প্রায় ছিটকে দিচ্ছিলেন মুশফিক। ৬ বলে ১১ রানের সমীকরণ যখন সামনে, পান্ডিয়াকে টানা দুই চার মেরে লক্ষ্য ৩ বলে ২ রানে নামিয়ে এনেছিলেন বাংলাদেশের উইকেটপকিপার ব্যাটসম্যান। জয় নাগালে চলে আসায় বাতাসে ঘুষি মেরে আর সহাস্য উল্লাসে আগাম উদ্যাপনও করে ফেলেছিলেন তিনি। প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টির শেষ ওভার বল হাতে নেওয়া হার্দিক ‘ডেথ বোলার’ হয়ে ওঠেন এর পরপরই। শেষ ২ বলে আউট করেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহকে, জিতে যায় ভারত। এশিয়া কাপে যদি বাংলাদেশ-ভারতের দেখা হয়ে যায়, তাহলে মুশফিক-হার্দিকের মুখোমুখি লড়াই নিশ্চয়ই উপভোগ্য কিছু হয়ে উঠবে।