‘অধিনায়ক হিসেবে খুশি; কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে হিংসা হচ্ছে’—২০২৩ সালের সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদের পুরস্কার পাওয়া ফারজানা হককে পাশে রেখে বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানার রসিকতা। পরে জানালেন জাতীয় দল সতীর্থ ফারজানার পুরস্কার পাওয়ার সম্ভাবনাকে উপলক্ষ করেই এসেছেন ক্রীড়া পুরস্কার অনুষ্ঠানে।
২০১৫ সালের বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদ মাবিয়া আক্তারের হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছেন ফারজানা। বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের টপ অর্ডার ব্যাটার পুরস্কার পেয়েছেন ইতিহাসগড়া এক বছর পার করে। গত বছরের আগে মেয়েদের ওয়ানডেতে বাংলাদেশের ব্যাটারদের কোনো শতক ছিল না। জুলাইয়ে মিরপুরে ভারতের বিপক্ষে সে অপেক্ষা ঘোচান ফারজানা। বছরের শেষ দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে করেন আরেকটি শতক। সব মিলিয়ে সে বছর মেয়েদের ওয়ানডেতে ফারজানার রানের গড় ছিল ৪৬।
বাংলাদেশের হয়ে ১৪৯টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা ফারজানা পুরস্কার পাওয়ার পর বলেন, ‘পুরস্কার সব সময়ই সম্মানের, আনন্দের। সবচেয়ে ভালো লাগে যখন বাংলাদেশের জার্সিটা পরি, দেশের হয়ে খেলতে পারি, দেশকে জেতাতে পারি। এটিই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। সব সময় লক্ষ্য থাকে দেশের হয়ে কিছু করা। কত দিন খেলব জানি না, কিন্তু যতটুকুই পারি, দেশের জন্য অনেক বড় কিছু করার ইচ্ছা আছে।’
পুরস্কারের চেয়েও ক্রীড়াবিদদের এ মিলনমেলাই যেন ফারজানার কাছে বড়, ‘অনেক আগে থেকে এ পুরস্কার দেখে আসছি। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, এটা অনেক সম্মানের একটা জায়গা। সব ক্রীড়াবিদ একত্র হয় বলে ভালো লাগার একটা ব্যাপার থাকে। এটাও সবসময় উৎসাহ দেয়।’
ফারজানার আগে ক্রিকেটার হিসেবে সর্বশেষ বর্ষসেরা নারী ক্রীড়াবিদের পুরস্কার জিতেছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক সালমা খাতুন। ফারজানার আশা, পরের প্রজন্ম ছাড়িয়ে যাবে তাঁদেরকেও, ‘আমি তরুণদের বলব, সাফল্যের দিকে না তাকিয়ে নিজের প্রক্রিয়ার কথা ভাবতে। তাহলেই ভালো কিছু হবে। তারা ভালো সুযোগ–সুবিধা পাচ্ছে। সবাই চেষ্টাও করছে। আমার আগেও সালমা আপুরা এ পুরস্কার পেয়েছেন। নিজের কাজটা ঠিকঠাক করতে পারলে আমার সমসাময়িক এবং পরের প্রজন্মের ক্রীড়াবিদেরা আরও সাফল্য পাবে।’
জাতীয় দলের হয়ে বেশ ব্যস্ত সময় ফারজানাদের সামনে। ঘরের মাঠে ভারতের সঙ্গে সিরিজ এ মাসেই, এ বছর দেশের মাটিতে আছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও। ব্যক্তিগত সাফল্য ছাপিয়ে এখন তাঁর দৃষ্টি দলীয় সাফল্য অর্জনের দিকে। নিজেকে ‘বাস্তববাদী’ মনে করা ফারজানা বলছেন, বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলটা খুব একটা ভারসাম্যপূর্ণ না হলেও সমন্বিত পারফরম্যান্সে সম্ভব ভালো কিছু করা।