টেস্টে এ বছর যেখানে অস্ট্রেলিয়া–ভারত–পাকিস্তানের ওপরে বাংলাদেশ

চলতি বছর ৪ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশের জয় ৩টিতেশামসুল হক

ওয়ানডে বিশ্বকাপের বছর এটি। টেস্ট নিয়ে খুব একটা আলোচনা তাই ছিল না। দলগুলোর পরিকল্পনার কেন্দ্রে ছিল ওয়ানডে বিশ্বকাপ। তাই স্বাভাবিকভাবেই দলগুলো এ বছর কম টেস্ট খেলেছে।

বাংলাদেশ চলতি বছরে টেস্ট খেলেছে মাত্র ৪টি, যেখানে গত বছর বাংলাদেশ টেস্ট ম্যাচ খেলেছিল ১০টি। তবে টেস্ট ক্রিকেটে এ বছর বাংলাদেশকে সফলই বলতে হবে। ৪ ম্যাচের মধ্যে জয় ৩টি। গত বছর ১০ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ মাত্র ১টি ম্যাচই জিততে পেরেছিল। শুধু জয়ের দিক থেকেই নয়, খেলার ধরনেও এ বছর একটা বার্তা দিয়েছে বাংলাদেশ।

আরও পড়ুন

এ বছর বাংলাদেশ টেস্টে রান করেছে ৪.০৬ রেটে। দ্রুত রান তোলার দিক থেকে ইংল্যান্ডের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। বহুল আলোচিত ‘বাজবল’ খেলা ইংল্যান্ড ৮ টেস্টে ওভারপ্রতি রান তুলেছে ৪.৮৭। ৮ টেস্টের মধ্যে ইংল্যান্ডের জয় ৪ ম্যাচে, হেরেছে ৩ ম্যাচ ও ড্র হয়েছে ১টি। এ বছরে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা অস্ট্রেলিয়া। তারা খেলেছে ১৩টি টেস্ট।

এ বছরে সবচেয়ে বেশি টেস্ট খেলেছে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতা অস্ট্রেলিয়া
এএফপি

অস্ট্রেলিয়া ছাড়া আর কোনো দলই ১০টির বেশি টেস্ট খেলেনি। ১৩ টেস্ট অস্ট্রেলিয়ার জয় ৬টিতে, হার ৪টি ও ৩টি ড্র। সবচেয়ে কম টেস্ট খেলেছে আফগানিস্তান—১টি।
শুধু বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডই এ বছর ৪–এর বেশি রেটে রান করতে পেরেছে।

দ্রুত রান তোলায় ইংল্যান্ড, বাংলাদেশের পরই আছে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান। ৭ টেস্ট খেলা কিউইরা রান তুলেছে ৩.৫২ রেটে। ৫ টেস্ট খেলা পাকিস্তান ওভারপ্রতি করেছে ৩.৪৯ রান।

৭ টেস্টে নিউজিল্যান্ডের জয় ৪ ম্যাচে, হার ২টিতে ও ১ টি ড্র। পাকিস্তানের জয় ২ ম্যাচে। হেরেছে ২ ম্যাচ, ড্র করেছে ১টি। সর্বোচ্চ ১৩ টেস্ট খেলা অস্ট্রেলিয়া খেলেছে প্রথাগত টেস্ট ক্রিকেটই। রান তুলেছে ৩.৩১ করে । আরেক পরাশক্তি এ বছর ৮ টেস্ট খেলে জিতেছে ৩ ম্যাচ, ২টি হারের পাশাপাশি হেরেছে ৩টি। রান তুলেছে ৩.৩৬ করে।

আরও পড়ুন

এ বছর নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগে আয়ারল্যান্ড ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট খেলেছিল বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে একটি জয়ের আগে সেই দুই টেস্টেও পেয়েছে জয়। আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা এসেছে ৫৪৬ রানে, যা টেস্ট ইতিহাসে রানের ব্যবধানে তৃতীয় সর্বোচ্চ জয়। আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয় প্রত্যাশিতই ছিল। তবে এই দুই টেস্টে বাংলাদেশ জয়ের সঙ্গে একটা বার্তা দিয়েছে—টেস্ট ক্রিকেটেও নতুন কিছু করার বিষয়ে ভাবছে তারা!

গত জুনে আফগানিস্তানকে ৫৪৬ রানে হারিয়েছিল বাংলাদেশ
শামসুল হক

গত এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হওয়া একমাত্র টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ ওভারপ্রতি রান তুলেছে ৪.৫৮ রান। দ্বিতীয় ইনিংসে রানরেট বেড়েছিল আরও—ওভারপ্রতি ৫.০৭। এরপর আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে হওয়া একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশ দুই ইনিংসেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের রানরেট ছিল ৪.৪৪। আর দ্বিতীয় ইনিংসে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৫.৩১।

আরও পড়ুন

নিউজিল্যান্ড সিরিজের প্রথম টেস্টে অবশ্য বাংলাদেশ অতটা আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পারেনি। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ রান তোলে ৩.৬৩ রেটে। দ্বিতীয় ইনিংসে তা কমে দাঁড়ায় ৩.৩৫। যদিও এ টেস্টেই প্রথমবার সাদা পোশাকের ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে জয় পায় নাজমুলের দল।

প্রথম আলো

দ্বিতীয় টেস্টে মিরপুরে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের রানের চাকা আরও ধীরে চলে। বাংলাদেশ রান তোলে মাত্র ২.৫৯ রেটে। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও আক্রমণাত্মক ক্রিকেটে ফেরে বাংলাদেশ। কঠিন উইকেটে রান তোলে ৪.১১ রেটে।

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের বড় পরীক্ষাটা অবশ্য আগামী বছর। ২০২৪ সালে পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারতের মতো বড় দলের বিপক্ষেও যে টেস্ট খেলবে। এই সিরিজগুলোতেও কি আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে পারবে বাংলাদেশ?

আরও পড়ুন