>বিসিবির সহযোগিতায় এই কদিনের ব্যক্তিগত অনুশীলন ক্রিকেটারদের করোনাভীতি কাটিয়ে মাঠে ফেরার সাহস দিচ্ছে।
করোনাকালে ক্রিকেটারদের অনুশীলনে খুব বেশি কিছু হয়নি। ক্রিকেটাররা আলাদা করে ফিটনেসের কাজ করেছেন। ইনডোরে কিছু ব্যাটিং–বোলিং অনুশীলন, এই তো! তবু নতুন স্বাভাবিকতার শুরুতে এটুকু করতে পেরেই খুশি ক্রিকেটাররা। এই কদিনের অনুশীলনে সন্তুষ্ট ঢাকার বাইরের ক্রিকেটাররাও।
ব্যক্তিগত অনুশীলনটা খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে সেরেছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। সাত দিনের অনুশীলন শেষে বেশ খুশি ২২ বছর বয়সী এই ক্রিকেটার। কাল খুলনা থেকে মুঠোফোনে বলছিলেন, ‘অভিজ্ঞতা খুব ভালো হয়েছে। সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে, মাঠ ফাঁকা পেয়েছি। আন্তর্জাতিক ভেন্যু হওয়ায় সুযোগ–সুবিধা ভালো।’ মিরাজের অতৃপ্তি একটাই, অনুশীলনের জন্য পাননি মাঝ উইকেট, ‘সেন্টার উইকেট পেলে ভালো হয়, বোলিংটা ভালোভাবে করা যায়। স্কিলের অনুশীলন করতে পারলে পরিপূর্ণ হয়।’ ঈদের পর অনুশীলনের জন্য ঢাকায় চলে আসার ইচ্ছা তাঁর। যদিও জানেন, খুলনার মতো অত বেশি সময় নিয়ে অনুশীলনের সুযোগ হবে না মিরপুরে।
খুলনায় অনুশীলন করেছেন নুরুল হাসানও। ব্যাটিং অনুশীলন নিয়ে কিছুটা অতৃপ্তি থাকলেও ব্যক্তিগত অনুশীলনে তিনি খুশি। সীমিত পরিসরে হলেও এই অনুশীলন থেকেই বড় প্রাপ্তি খুঁজে পাচ্ছেন ২৬ বছর বয়সী উইকেটকিপার–ব্যাটসম্যান, ‘যেহেতু একবার অনুশীলন শুরু হয়েছে, ঈদের পর হয়তো আরও বড় পরিসরে হতে পারে। এটা ভালোভাবে শেষ হওয়ায় এখন আশা দেখতে পাচ্ছি—দেশে ক্রিকেট ফিরবে। একটা সাহসের দরকার ছিল। এই অনুশীলন সেই সাহসটা বাড়িয়েছে। নিশ্চিত এটা আমাদের কাজে দেবে।’
তরুণ স্পিনার নাঈম হাসান চট্টগ্রামে শুধু ফিটনেসের কাজে সীমাবদ্ধ থাকেননি, মাঝেমধ্যে হাতও ঘুরিয়ে নিয়েছেন ঘাসের মাঠে। ‘ফিটনেসের পাশাপাশি হালকা ড্রিল করেছি। উইকেট থাকলে খুব ভালো হতো, ঈদের পর হয়তো দিতে পারে।’ বলছিলেন নাঈম। সিলেটে পেসার খালেদ আহমেদেরও বোলিং করা হয়নি। বিসিবির নির্দেশনা মেনে শুধু জিমে কাজ করেছেন। কাল সিলেট থেকে মুঠোফোনে নিজের অভিজ্ঞতা বলছিলেন খালেদ, ‘ঘরবন্দী থাকার সময়ও ফিটনেস নিয়ে কাজ করেছি। কিন্তু বাড়ির আবহ আর মাঠের পরিবেশ এক নয়। মাঠে গিয়ে ভালো হয়েছে।’ বিসিবি অনুমতি দিলে ঈদের পর বোলিং শুরু করতে আগ্রহী খালেদ।
ব্যক্তিগত অনুশীলন নিয়ে মুশফিক–নাঈম–খালেদদের সন্তুষ্টিতে ঈদের পর অনুশীলন শুরু করার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন আরও অনেক ক্রিকেটার। বিসিবি যদি আবারও এ রকম অনুশীলনের ব্যবস্থা করে, সেখানে ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়বে বলেই শোনা যাচ্ছে। আর খেলোয়াড়ের সংখ্যা বাড়লেও অনুশীলনে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করেন নুরুল, ‘খেলোয়াড়ের সংখ্যা বাড়লে পরিবেশটাও হয়তো সেভাবে তৈরি করা হবে। অন্যান্য দেশে দেখুন, ঘরোয়া ক্রিকেট শুরু হচ্ছে। বসে থেকে থেকে আমরা অনেক পিছিয়ে গেছি। হতাশা পেয়ে বসেছিল। মাঠে গিয়ে সেটা অন্তত কাটিয়ে ওঠা গেছে।’
সেপ্টেম্বর–অক্টোবের শ্রীলঙ্কা সফরের কথা শোনা গেলেও বিসিবি এখনই দলীয় অনুশীলন আয়োজনে আগ্রহী নয়। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান কাল প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘ঈদের পরও ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত অনুশীলনের সুযোগ দেওয়া হবে। পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলেই আমরা দলীয় অনুশীলনের চিন্তা করব। পরিস্থিতি ভালো না হওয়া পর্যন্ত আসলে কোনো পরিকল্পনা করা যাচ্ছে না।’