নিজেদের মাঠেই বাংলাদেশ এখন দর্শক
>বাংলাদেশকে ৩-০ গোলে হারিয়ে বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপের ফাইনালে বুরুন্ডি।
স্কোরলাইন বলছে বুরুন্ডির সামনে উড়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিক দল হয়েও ৩-০ গোলের হার তো এমন কিছুরই ইঙ্গিত দেয়। তবে কথাটি পুরোপুরি সঠিক নয়। এক জসপিন শিমিরামানার ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের কাছেই হেরে গিয়েছে বাংলাদেশ। হ্যাটট্রিক করেছেন বুরুন্ডির তরুণ এই ফরোয়ার্ড। ফাইনালের আগেই ৭ গোল হয়ে গেল শিমিরামানার। ওদিকে নিজেদের আয়োজিত বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের ফাইনালে বাংলাদেশ এখন কেবলই দর্শক।
শিমিরামানার ব্যক্তিগত ফুটবল–শৈলীর কোনো জবাব জানা ছিল রায়হান হাসানদের কাছে। দুর্দান্ত গতির সঙ্গে বলের নিয়ন্ত্রণ, পায়ের কারুকাজের সঙ্গে মাথাতেও সমান দক্ষ এই খেলোয়াড়। তবে প্রথম দুটি গোলে কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না বাংলাদেশের রক্ষণভাগ। গোলমুখ থেকে বিনা বাধায় জোড়া গোল করে প্রথমার্ধেই ফাইনাল নিশ্চিত ব্যবস্থা করে দিয়েছেন শিমিরামানা। সুযোগ পেলেই গোলে পরিণত করেছেন। আর বাংলাদেশের সাদ উদ্দিন, রাকিবেরা গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে পারেননি। যাঁর ওপর গোলের আশা করা যেত, সেই মতিন মিয়া ম্যাচের শুরুতেই হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট নিয়ে মাঠের বাইরে।
বুরুন্ডি মূলত বাংলাদেশের বাঁ প্রান্তকেই গোলমুখ খোলার রাস্তা হিসেবে ব্যবহার করেছে। তিনটি গোলই হজম করেছে বাঁ প্রান্ত থেকে আসা বলে। এতে লেফটব্যাক রহমত মিয়ার দুর্বলতা প্রকাশ পায়। কিন্তু তাঁকে প্রয়োজনীয় সমর্থন দিতে ব্যর্থ হয়েছেন লেফট উইঙ্গার ইব্রাহিম। এ ছাড়া বাঁ দিকের সেন্টারব্যাক রায়হান হাসানও ছিলেন সাদামাটা। ফলে, বুরুন্ডি বারবার আক্রমণ করেছে তাদের ডান প্রান্ত দিয়ে।
৪৩ মিনিটের প্রথম গোলে শিমিরামানাকে আটকাতে ব্যর্থ হন রায়হান। ব্লানচার্ডের কাটব্যাক গোলমুখে বিনা বাধায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে দেখেশুনে জালে জড়িয়েছেন। তিন মিনিট পরে গোলমুখ থেকেই বিনা বাধায় জসপিনের হেডে ২-০। বাংলাদেশের ডিফেন্ডাররা না থাকলে ভারসাম্য হারিয়েও শরীর বাঁকিয়ে যেভাবে বলে মাথা ছুঁয়েছেন, কৃতিত্বটা শিমিরামানাকে দিতেই হবে।
দ্বিতীয়ার্ধে পুরোপুরি বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। একের পর আক্রমণে মনে হচ্ছিল গোল ব্যবধান কমানো সময়ের ব্যাপার মাত্র। শুরুতেই সুযোগটা পেয়েছিলেন সাদ। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও গোল করতে ব্যর্থ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারত ম্যাচের গোলদাতা। বদলি রাকিবও সুযোগ পেয়েছিলেন গোল ব্যবধান কমানোর। কিন্তু তাঁর নেওয়া শট ক্রসবার উঁচিয়ে বাইরে। রাকিব-সাদরা যেন বুঝিয়ে দিলেন তাঁদের সঙ্গে শিমিরামানার পার্থক্য।
৭৯ মিনিটে শিমিরামানা নিজেকে নিয়ে গিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। গতির ঝড় তুলে ডান প্রান্তে বল নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ভেতরের দিকে প্রবেশ করে কোনাকুনি শটে ৩-০।
শনিবার শিরোপার লড়াইয়ে বুরুন্ডির প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফিলিস্তিন।