ইংল্যান্ডের কাছে তিন শ-সাড়ে তিন শ রান কোনো সমস্যা না!
>নটিংহামে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে পাকিস্তানকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে ইংল্যান্ড। টানা দুই ইনিংসে সাড়ে তিন শ ছুঁই ছুঁই সংগ্রহ তাড়া করে জিতল ইংল্যান্ড
বিশ্বকাপে দলীয় ইনিংসে ৫০০ রান করা সম্ভব? ইংল্যান্ড বলছে সম্ভব। হেসে উড়িয়ে দিতে পারেন। তবে গত বছর নটিংহামে ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ ৪৮১ রানের রেকর্ডটি কিন্তু ইংল্যান্ডের। আর ওয়ানডেতে ৩০০ রান করা কিংবা ৩০০–র ওপাশে রান তাড়া করে জেতাকে প্রায় অভ্যাসে পরিণত করেছে দলটি। তাই কেউ পারলে সেটি ইংল্যান্ডের দ্বারাই সম্ভব।
নিয়মিতই ৩০০–র ওপাশে রান করছে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থানীয় দলটি। বিশ্বকাপে এই ইংল্যান্ডকে তাই সমীহ করতেই হবে প্রতিপক্ষ দলগুলোর। কাল যেমন নটিংহামেই সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ৩৪০ রান তুলেছিল পাকিস্তান। কাজ হয়নি। ৩ বল হাতে রেখে ইংল্যান্ড জিতেছে ৩ উইকেটে।
এ ওয়ানডে সিরিজ যাঁরা দেখছেন, তাঁরা জানেন, ইংল্যান্ডের ব্যাটিং অর্ডার কতটা শক্তিশালী। সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ৩৭৩ রান তুলে শেষ পর্যন্ত ১২ রানে জিতেছিল ইংল্যান্ড। পরের দুটি ম্যাচে ৩৪০-এর ওপাশে রান তাড়া করে জিতেছে জস বাটলারের দল। ২০১৫ বিশ্বকাপের পর ইংলিশ ব্যাটিং কতটা পাল্টেছে, তা বলছে পরিসংখ্যান—সবশেষ বিশ্বকাপের আগে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে ৩৪ ইনিংসে ৩০০–র বেশি রান তুলেছিল দলটি। কিন্তু বিশ্বকাপের পর এই চার বছরে ইংল্যান্ড সেই একই কাজ করল ৩৭ বার!
চলতি সিরিজে অন্তত ব্যাট হাতে পাকিস্তান চেষ্টার কোনো কমতি রাখেনি। ওয়ানডে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে টানা তিন ইনিংসে ৩৪০-এর বেশি রান তোলার কীর্তি গড়েছে সরফরাজ আহমেদের দল। জিততে পারেনি একটি ম্যাচেও। উল্টো ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে টানা তিন ইনিংসে ৩৪০-এর বেশি রান তুলেও হারতে হয়েছে সব ম্যাচেই। কাল বাবর আজমের সেঞ্চুরিতে (১১৫) ভর করে সাড়ে তিন শ ছুঁই ছুঁই স্কোর পেয়েছিল পাকিস্তান। এই সংগ্রহ পুঁজি করেও দলটিকে হারতে হয়েছে জ্যাসন রয়ের দুর্দান্ত এক ইনিংসের কাছে।
ইংলিশ ওপেনারের সময়টা এমনিতেই ভালো যাচ্ছে না। ম্যাচের আগের রাতে বেশির ভাগ সময় তাঁকে থাকতে হয়েছে হাসপাতালে। রয়ের সাত সপ্তাহ বয়সের মেয়ে এভারলি অসুস্থ হয়ে পড়েছিল। তাঁকে সময় দেওয়ায় আগের রাতে তেমন একটা ঘুমোতে পারেননি ২৮ বছর বয়সী এ ব্যাটসম্যান। এই ক্লান্তি নিয়ে মাঠে নেমেই ম্যাচ জেতানো সেঞ্চুরি করে বসেন রয়। ৪ ছক্কা ও ১১ চারে ৮৯ বলে খেলেছেন ১১৪ রানের ইনিংস। এর মধ্যে সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন ৭৫ বলে। শেষ দিকে বেন স্টোকসের অপরাজিত ৭১ রান বড় ভূমিকা রেখেছে ইংল্যান্ডের জয়ে। তবে হাসপাতালে সন্তান আর মাঠে ইংল্যান্ড বিপদমুক্ত হওয়ায় রয়ের মন নিশ্চয়ই এখন শান্ত।
পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ড ২০১৯ বিশ্বকাপে রয়ের এমন ঝোড়ো ব্যাটিংয়েই তাকিয়ে আছে। বিশেষ করে তিন শতাধিক রান তাড়া করার ম্যাচে রয়ের ব্যাট যেন আরও চওড়া হয়ে ওঠে। ওয়ানডেতে ইংলিশ ওপেনারের এটি অষ্টম সেঞ্চুরি। এর মধ্যে তাঁর ৫টি সেঞ্চুরি এসেছে তিন শতাধিক রান তাড়া করার ম্যাচে। ৩০০–র বেশি রান তাড়া করার ম্যাচে রয়ের চেয়ে বেশি সেঞ্চুরি আছে শুধু বিরাট কোহলির (৯)।