‘এখনো সব জায়গাতেই আওয়ামী প্রেতাত্মারা বসে আছে’, মানববন্ধনে আমিনুল

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামনে বক্তব্য রাখছেন আমিনুল ইসলামপ্রথম আলো

ক্রীড়াঙ্গনকে অবিলম্বে দলীয়করণমুক্ত করার দাবি উঠেছে। আর এই দাবিতে আজ পল্টন জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামনে মানববন্ধন করেছেন গত ১৫ বছরে ক্রীড়া ফেডারেশনের ‘বঞ্চিতরা’। বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদের ব্যানারে আয়োজিত এই মানববন্ধনে বিএনপি–ভাবাপন্ন সংগঠকই বেশি ছিলেন। অনেক মুখই এসেছেন, যাঁরা ক্রীড়াঙ্গনে অচেনা। আবার কিছু মুখ দেখা গেছে, যাঁরা শেখ হাসিনা সরকারের সময়ও ক্রীড়া ফেডারেশনে ছিলেন। এখন ঝোপ বুঝে বিরোধী পক্ষে যোগ দিয়ে ক্রীড়াঙ্গনে সংস্কারের দাবি তুলেছেন।

আরও পড়ুন

মানববন্ধনে অগ্রণী তিনটি মুখ বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন, বাংলাদেশ অ্যাথলেটিকস ফেডারেশনের সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম ও জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। তাঁদের উপস্থিতিতে মানববন্ধনের মূল সুর ছিল, ক্রীড়াঙ্গনে বিভিন্ন ফেডারেশনে থাকা কমিটি ভেঙে অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি করতে হবে। সেখানে ঠাঁই হবে ‘বঞ্চিত’ ও ‘নিবেদিতপ্রাণ’ সংগঠকদের।

আবদুস সালাম তেমনটাই বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্রীড়াঙ্গনকে দলীয়করণ করার কারণে প্রতিটি জায়গায় তারা ব্যর্থ। এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে অনতিবিলম্বে তাদের চলে যেতে হবে। সরকারের কাছে বলব, এদের বিদায় করুন। এদের আর কোনোভাবে ক্ষমতায় রাখা যাবে না। আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে পরবর্তীকালে নির্বাচন করতে হবে।’

মানববন্ধনে আমিনুলের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও ডাকসুর সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল কবীর খোকন (ডানে)
প্রথম আলো

বিএনপির ক্রীড়া সম্পাদক আমিনুল হক ক্রীড়াঙ্গনে সংস্কার নিয়ে ছিলেন সোচ্চার, ‘গত ১৫ বছরে আওয়ামীপন্থীরা অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনসহ বাংলাদেশের সব কটি ক্রীড়া ফেডারেশনে এমনভাবে দলীয়করণ ও রাজনৈতিকীকরণ করেছে, এখনো সব জায়গাতেই আওয়ামী প্রেতাত্মারা বসে আছে। যারা স্বৈরাচারী কায়দায় রাজনৈতিকীকরণ করেছে, মাঠের ক্রীড়া সংগঠকদের বঞ্চিত করেছে, এমন লোকগুলোকে আমরা আর ফেডারেশনে দেখতে চাই না। আমরা ক্রীড়াঙ্গনেও সংস্কার চাই, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সর্বোচ্চ সংস্কার চাই।’

আরও পড়ুন

বাফুফের সংস্কার প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম সেরা গোলকিপার আমিনুল, ‘বাফুফেতে স্বৈরাচারী কায়দায় যাঁরা চেয়ার দখল করে আছেন, তাঁদের রেখে বাংলাদেশে ফুটবল উন্নয়ন হবে না। ফিফার নিয়ম রক্ষা করে একটা পথ বের করতে চাই। এখন যাঁরা আছেন, তাঁরা স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবেন। তারপর অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির মাধ্যমে আমরা নির্বাচনে যেতে চাই।’ সরকার বদলের পর আবাহনী, শেখ জামাল ও ফর্টিস ক্লাবে ভাঙচুর, লুটপাটের নিন্দা জানিয়ে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন আমিনুল।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া সাঁতার ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহবুর রহমানের গলায়ও একই সুর। তিনি বলেন, ‘বর্তমানে যারা সাঁতার ফেডারেশনের আছে, তারা দুর্নীতি করার জন্য এসেছে। তাদের বিদায় করতে হবে।’

জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সামনে মানবন্ধনে অংশ নিয়েছিল বেশ কিছু ক্রীড়া ফেডারেশন
প্রথম আলো

মানববন্ধনে ছিলেন সাবেক ফুটবলার ছাইদ হাসান কানন, সাবেক অ্যাথলেট রাজিয়া সুলতানা অনু, মিলজার হোসেন, মাহবুবা বেলী, নেলী জেসমিন, আখেরুন নেছা, খুরশিদা খুশি প্রমুখ। অ্যাথলেটিক ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ আলমসহ আরও কয়েকজন অ্যাথলেটিকস সংগঠক। অনেক দিন পর এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ক্রীড়াঙ্গনে দেখা গেছে বিএনপির সরকারের সময় সাঁতার ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বগুড়ার নেতা সম্পাদক সৈয়দ আমিনুল হক দেওয়ান সজল ও ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন বুলবুলকে।

আরও পড়ুন