আফগান মেয়েরা ক্রিকেট খেলবেন অস্ট্রেলিয়ায়
২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান সরকার ক্ষমতায় গ্রহণের পর দেশটির আইন ও শাসনকাঠামোয় বড় ধরনের পরিবর্তন আসে। এই পরিবর্তনের জেরে অন্য অনেকের সঙ্গে দেশ ছাড়েন আফগানিস্তানের বেশ কিছু নারী ক্রিকেটার। এর পর থেকে আফগানিস্তানে মেয়েদের ক্রিকেট কার্যত বন্ধই আছে।
তিন বছরের বেশি সময় পর আফগানিস্তানের কোনো নারী ক্রিকেট দল আবারও মাঠে নামতে যাচ্ছে। ২০২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি মেলবোর্নের জাংশন ওভালে আফগানিস্তান নারী একাদশ নামের একটি দল ক্রিকেট উইদাউট বর্ডার্স একাদশের মুখোমুখি হবে। অস্ট্রেলিয়ায় শরণার্থী হিসেবে থাকা আফগান মেয়েদের নিয়ে ম্যাচটি আয়োজনে সহযোগিতা করছে অস্ট্রেলিয়া সরকার ও ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)।
তালেবান ক্ষমতায় আসার পর আফগানিস্তানের ছেলেদের দলের সঙ্গে কোনো দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলেনি অস্ট্রেলিয়া। ২০২১ সালের নভেম্বরে হোবার্টে একটি টেস্ট এবং ২০২৩ সালের মার্চে সংযুক্ত আরব আমিরাতে তিন ওয়ানডের সিরিজ খেলার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া–আফগানিস্তানের। কিন্তু তালেবান-শাসিত আফগানিস্তানে নারী ও কন্যাশিশুদের আর্থসামাজিক অবস্থার অবনতিকে কারণ দেখিয়ে সিরিজ দুটি বাতিল করে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া।
দেশ ছেড়ে আফগান নারী ক্রিকেটারদের অনেকে অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা ও মেলবোর্নে থাকেন। তাঁদের সংগঠিত করে ৩০ জানুয়ারি টি–টোয়েন্টি ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছে। একই দিন মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) শুরু হবে অস্ট্রেলিয়া–ইংল্যান্ড মেয়েদের অ্যাশেজও।
আফগানিস্তানের নারীদের নিয়ে ম্যাচ আয়োজনে বিশেষভাবে সহযোগিতা করছে অস্ট্রেলিয়া সরকার। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রধান নির্বাহী নিক হোকলে এ বিষয়ে বলেছেন, ‘আফগানিস্তানের নারী দল অস্ট্রেলিয়ায় স্থানান্তরিত হওয়ার পর ক্রিকেট অঙ্গনের অনেকে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে। এই ম্যাচটির মধ্য দিয়ে সেই কাজের একধরনের উদ্যাপনও হতে যাচ্ছে।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি আনন্দিত যে তাদের একসঙ্গে খেলার যে আকাঙ্ক্ষা, সেটা এই প্রদর্শনী ম্যাচ দিয়ে পূরণ হতে যাচ্ছে। যা দিবারাত্রির নারী অ্যাশেজ টেস্ট ঘিরে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে দারুণ একটি সংযোজনও হতে যাচ্ছে।’
২০২০ সালে আফগানিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া ১৭ নারী ক্রিকেটার এ বছরের শুরুতে আইসিসিকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। সেই চিঠিতে তাঁরা অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসী দল গঠনের ব্যাপারে সাহায্যের আবেদন করেন।
চিঠিতে আফগান নারী ক্রিকেটারদের পক্ষ থেকে লেখা হয়েছিল, ‘আমাদের লক্ষ্য নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ও প্রদর্শনে একটি অভিবাসী দল গঠন করা, যা আফগানিস্তানে যেসব নারী আছে, তাঁদেরও আশা জোগাবে। পাশাপাশি আফগান নারীরা যে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন, তার দিকে চোখ ফেরানোও আমাদের লক্ষ্য। আফগানিস্তানের পুরুষ দলের মতো আমাদেরও লক্ষ্য শীর্ষ স্তরে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা। আমরা সেসব মেয়েকে দলে নিতে চাই ও প্রশিক্ষণ দিতে চাই, যারা ক্রিকেট ভালোবাসে এবং বিশ্বের বুকে নিজের প্রতিভা প্রদর্শন করতে চায়।’