একান্ত মানচিত্র বাংলার
একজন মানুষও কখনো হয়ে যায়
অতুলন মহার্ঘ্য প্রতীক।
তখন আমরা সবাই তাকে পতাকার মতো ওড়াই।
মহামূল্য নীলকান্তমণি নয় সে
যে প্রতিটি স্বতন্ত্র অনামিকা শোভিত করবে
আকাশি জৌলুশে।
বরং সে ঠিক সূর্যের মতোই একা।
প্রত্যেকেরই চোখের সামনে খোলা। সবাইকে ছুঁয়ে আছে,
আমরা পারিনি ছুঁতে। প্রতিটি ব্যক্তিগত দিগন্তের মতো,
নিষ্ঠুর দূরায়ত অথচ কত কাছাকাছি।
তাকে তোমার আজন্মলালিত স্মৃতি বলা যায়।
কোটি রজনীর দুঃখে, কোটি মৃত্যুর শিলাখণ্ডে
পাবে তাকে হাস্যময় অমোঘ শ্বেতপদ্ম।
সাত কোটি প্রবল নদীর রক্ত খরস্রোতে
তিলে তিলে গড়া।
এখন পতাকার মতো সে আলাদা, তবু যত খুশি
তাকে ওড়াও ওড়াও। প্রতিবার তোমার হৃৎপিণ্ডের
সমস্ত আরক্ত রং দেখো, তোমার জলজ পরিপার্শ্বের
সমগ্র শ্যামলিমায় ঘন হয়ে যাও। যে আজ
সমস্ত শরীর মেলে দিয়ে একান্ত মানচিত্র বাংলার,
আপামর বাংলা। আজীবন হয়তো সমস্বর হয়ে গেছে।
দৈনিক বাংলা, ১১ জানুয়ারি ১৯৭২