জনপ্রশাসন সংস্কার প্রস্তাব: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

এম্বাসি অব সুইজারল্যান্ড ইন বাংলাদেশের সহায়তায় ইউএনডিপি বাংলাদেশের স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস পলিসিজ অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রকল্পের আয়োজনে ‘ট্রান্সফর্মিং বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন: ওভারকামিং চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড শেপিং রিফর্মস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় ৪ ডিসেম্বর ২০২৪। দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনে প্রচার সহযোগী ছিল প্রথম আলো। গবেষণা সহায়তা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি।

৪ ডিসেম্বর ২০২৪ দ্য ডেইলি স্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘ট্রান্সফর্মিং বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন: ওভারকামিং চ্যালেঞ্জ অ্যান্ড শেপিং রিফর্মস’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরাছবি: শুভ্র কান্তি দাশ

আলোচনা

রিজওয়ান খায়ের

রিজওয়ান খায়ের

সদস্য, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

সংস্কারের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক অঙ্গীকার অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। গত ৫৩ বছরে অনেক কিছু ঘটেছে, কিন্তু সংস্কার সম্ভব হয়নি রাজনৈতিক অঙ্গীকারের অভাবে। আমলাতন্ত্র তখনই সংস্কার করবে, যখন এটি ধাক্কা খাবে। মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর বা ভারতে সংস্কার হয়েছে রাজনৈতিক সদিচ্ছার কারণে। আমাদের সংস্কার প্রতিবেদনে যা–ই থাকুক, রাজনৈতিক ঐকমত্য না হলে প্রতিবেদনটি এক টুকরা কাগজ ব্যতীত আর কিছুই হবে না। এটাই বাস্তবতা। সংস্কার দীর্ঘমেয়াদি একটি প্রক্রিয়া। আমাদের শুরু করতে হবে। পরবর্তী ধাপগুলো বর্তমান সরকার করবে নাকি রাজনৈতিক সরকার করবে, সে ঐকমত্যটা গুরুত্বপূর্ণ। শুরু থেকেই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জনপ্রশাসনের কাজকে আমরা সংজ্ঞায়িত করিনি। ১৯৭২ সালের সংস্কার কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন করা হয়নি। তারা ১৯৭৪ সালে তা জমা দিয়েছিল।

নতুন বাস্তবতায় ২০২৪–এ এসে কেমন জনপ্রশাসন চান, তা তরুণ জনগোষ্ঠীকেই ঠিক করতে হবে। তাদের চাওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, তাদের চাহিদা রাজনৈতিক দলগুলো পূরণ করবে। আমলাদের চাহিদা হতেও পারে, না–ও পারে।

আমরা কমিশনের সব সদস্য মনে করি, মেধার ভিত্তিতেই পদোন্নতি, পদায়ন ও বদলি হতে হবে। এ জন্য আমাদের পিএসসির সঙ্গে সংযোগ থাকতে হবে। তা না হলে যত প্রশিক্ষণই দিই না কেন, তার চরিত্র বদলাবে না। প্রক্রিয়া ও কাঠামো সংস্কার করা সহজ, কিন্তু আচরণ বদলানো অনেক কঠিন। বিকেন্দ্রীকরণ করা জরুরি, এটি করা গেলে স্থানীয় পর্যায়ে চাহিদা তৈরি হবে। জনগণকে ছোট ছোট কাজে আর সচিবালয়ে আসতে হবে না।

খোন্দকার মোহাম্মদ আমিনুর রহমান

খোন্দকার মোহাম্মদ আমিনুর রহমান

সদস্য, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

জুলাই আন্দোলন চাকরির কোটা ইস্যু থেকে শুরু হলেও এতে সব শ্রেণির মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। শিক্ষার্থীরা নেতৃত্ব দিয়েছে, জনগণ তাতে অংশ নিয়েছে। এর কারণ কেবল পাবলিক সার্ভিস সংস্কারের জন্য নয়, বরং নানা কারণে তারা সংক্ষুব্ধ ছিল। এর মধ্যে অন্যতম, চারদিকে প্রচুর দুর্নীতি ছিল।

জনপ্রশাসন সংস্কারে এর আগেও ১৭টি কমিশন হয়েছে, তাতে কোনো কাজ হয়নি। আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের কমিশনের পরিণতিও যেন একই রকম না হয়। অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার জবাবদিহিমূলক সরকার। তাই আমি আশা করছি, আমলাতন্ত্রকে জনমুখী করতে আমাদের সুপারিশ যদি উপযুক্ত মনে হয়, তাহলে সরকার তা গ্রহণ করবে।

দেশ স্বাধীনের পর থেকেই দুর্নীতি শুরু হয়েছে, আর এর বিস্ফোরণ ঘটেছে বিগত ১৫ বছরে। সরকারি কাজে ব্যক্তিগত পর্যায়ের চেয়ে অনেক বেশি দুর্নীতি হয় প্রকল্পগুলোয়। কিন্তু সে বিষয়গুলোকে এড়িয়ে যাওয়া হয়। কেউ পাঁচ হাজার টাকা আত্মসাৎ করল, দুদক তাকে ধরল। এটা করে কোনো লাভ হবে না। আমাদের পুরো ব্যবস্থাকে বদলাতে হবে, জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।

নতুন বাংলাদেশ নির্মাণে যেসব সংস্কার কমিশন হয়েছে, তাদের প্রতিটি প্রতিবেদনের ওপর গুরুত্বারোপ করেই এগোতে হবে। গণতন্ত্র থাকলে দুর্নীতি কম হয়। কারণ, তখন মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সরকারকে সরিয়ে দিতে পারে।

অন্তর্বর্তী সরকার সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সম্পদের বিবরণ দিতে বলেছে। এটা ভালো একটা প্রক্রিয়া। আমরা এটা কেবল আয়কর রিটার্নের সময় জমা দিতাম। এরপর আর কোনো কার্যক্রম ছিল না। সম্পদের বিবরণ স্বচ্ছতা আনতে সহায়তা করবে।

কাজী মারুফুল ইসলাম

কাজী মারুফুল ইসলাম

অধ্যাপক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রচেষ্টার একটা জায়গা হচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার। জুলাইয়ে যে আন্দোলন হয়েছে, তার সূচনা কিন্তু জনপ্রশাসনে চাকরির মাধ্যমে প্রবেশের সমান সুযোগের দাবি থেকেই। শিক্ষার্থী-জনতা বৈষম্যহীন বাংলাদেশের স্বপ্নে আন্দোলন করেছে।

জনপ্রশাসনের যেসব সমস্যা, তা আমাদের কাছে পরিষ্কার। প্রধান সমস্যা ছিল জবাবদিহিহীন সরকারি প্রশাসনযন্ত্র, যা একটি ফ্যাসিস্ট রেজিম সৃষ্টি করেছিল। যেসব সংকটের কারণে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা একনায়কতান্ত্রিক হয়ে উঠেছে, তার অন্যতম কারণ ছিল প্রশাসনযন্ত্রকে প্রচণ্ডভাবে রাজনৈতিকভাবে দলীয়করণ। পাশাপাশি এটি কেন্দ্রভিত্তিক সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল ছিল।

আন্তক্যাডার বৈষম্য সিভিল সার্ভিস অকার্যকর হওয়ার অন্যতম কারণ। এটি পেশাজীবী ক্যাডারকে নিরুৎসাহিত করে, নৈতিকভাবে দুর্বল করে ও কাজের ক্ষেত্রে অনাগ্রহ সৃষ্টি করে।

আমাদের অনেক ঔপনিবেশিক আইনকানুন আছে যা সংস্কার করা জরুরি। সরকারি চাকরি আইন নতুন করে চিন্তা করতে হবে। সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা আপিল বিধিমালা, সরকারি কর্মচারী আচরণবিধির মতো পুরোনো আইনগুলো হালনাগাদ করা জরুরি। পদায়ন ও পদোন্নতি নীতিমালা স্বচ্ছ ও মেধার ভিত্তিতে সুনির্দিষ্ট করতে হবে।

সব সিদ্ধান্ত রাজধানী থেকে, সচিবালয় থেকে নেওয়া হলে সংকটের সমাধান সম্ভব নয়, একে কার্যকরভাবে বিকেন্দ্রীকরণ করতে হবে। উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদকে ক্ষমতায়িত করতে হবে। প্রশাসনের যেসব স্তর নাগরিকদের সেবা প্রদানের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, সে জায়গাগুলোয় নিয়মিতভাবে গণশুনানির ব্যবস্থা আইনগতভাবে নিশ্চিত করতে হবে। মেধা, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে পদোন্নতি এবং পদায়ন নীতিমালা সংস্কার করা প্রয়োজন।

ওমর ফারুক

ওমর ফারুক

সচিব ও রেক্টর, বিসিএস প্রশাসন একাডেমি

আমলাদের কেবল দোষারোপই করা হয়, কিন্তু ভেতর থেকে দেখার প্রয়াস কমই দেখা যায়। আমলারা কতটুকু দায়ী, সেটিও পরিমাপের বিষয় আছে। এ সমস্যার মূলে রয়েছে রাজনৈতিকভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার। আসলে আমলাতন্ত্র একটি ঘোড়ার মতো। আমরা (আমলাতন্ত্র) যদি ঘোড়া হই, রাজনীতিবিদেরা সেটির ওপর সওয়ার। সুতরাং রাজনীতিবিদেরা যেদিকে যাবেন, আমি আরেক দিকে যেতে পারব না। রাজনীতি ঠিক না হলে বা গণতান্ত্রিক চর্চা ঠিক না হলে আমলাতন্ত্র কখনো ঠিক হবে না।

আমাদের নিয়োগপ্রক্রিয়ায় নানা রকম ত্রুটি রয়েছে। প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় মেধা যাচাইয়ের কোনো সুযোগ নেই, এটি কেবল বাছাইয়ের একটা প্রক্রিয়া।

এসিআর পদ্ধতির মাধ্যমে যে মূল্যায়ন করা হয়, তা গোপন রাখা হয়। মূল্যায়ন তো উন্মুক্ত প্রতিবেদন হওয়ার কথা। আমার কোথায় দুর্বলতা আছে, তা আমি না জানলে কীভাবে সংশোধন করব। এখানে বস্তুনিষ্ঠ একটা মূল্যায়নের ব্যবস্থা থাকা উচিত।

মাঠ প্রশাসনের কাজে আমরা অনেক সময় নানা রকম হয়রানির শিকার হই। আমার পরামর্শ থাকবে, মন্ত্রিপরিষদ ও তথ্য মন্ত্রণালয়ে আইএসপিআরের মতো মিডিয়া সেল রাখা যেতে পারে, যেখান থেকে সাংবাদিকদের তথ্য সংগ্রহ সহজ হবে।

আন্তক্যাডার দ্বন্দ্বের সমাধানে একটি কমিটি করতে হবে। আমাদের ২৭টি ক্যাডার আছে, এত ক্যাডারের প্রয়োজন নেই। এটি কমিয়ে আনতে হবে। সংস্থাপন মন্ত্রণালয় নাম পরিবর্তন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় করা হয়েছে। আমি মনে করি, এর নাম বদলে জনসেবা মন্ত্রণালয় করা যেতে পারে।

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান

মোহাম্মদ মিজানুর রহমান

অতিরিক্ত সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়

আমলাতন্ত্র নির্ভর করে রাজনৈতিক নেতৃত্বের সদিচ্ছার ওপর। আমাদের দেশে পদ্ধতিগতভাবে আমলাতন্ত্রকে দুর্বল করে রাখা হচ্ছে। কেবল রাজনৈতিক নেতারা আমলাতন্ত্রকে খাটো করেনি, বরং এখানে আরও অনেক ক্রীড়ানক আছে। আমরা আমলাতন্ত্র বলতে কেবল প্রশাসনিক সার্ভিসকে বুঝি, অথচ আমাদের মোট ২৭টি ক্যাডার আছে। অনেক বিষয়ের সঙ্গে প্রশাসনিক সার্ভিসের কোনো সম্পর্কই নেই।

পৃথিবীর অনেক অনেক দেশ এ বিষয়গুলো অনেক আগেই সমাধান করেছে। রুয়ান্ডার কথাই ধরুন। গণহত্যার পর সেখানে অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও অর্থায়ন বিভাগে মাত্র সাতজন সদস্য ছিলেন। দুই-তিন দশকের মধ্যে এখন সেই অর্থনৈতিক পরিকল্পনা ও অর্থায়ন বিভাগ বর্তমানে দেশটির সেরা একটি বিভাগে পরিণত হয়েছে। এটা সম্ভব হয়েছে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত ও সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্বের কারণে।

রাষ্ট্র নির্মাণের বৃহৎ নকশায় আমলাতন্ত্রকে রাখতে হবে। তা না হলে আমাদের কাজের কাজ কিছুই হবে না। আমাদের ক্ষয় শুরু হয়েছে একদম শুরু থেকেই। সব ব্যর্থতার মূলে রয়েছে ১৯৭২ সালের সংস্কার কমিটি। ১৯৭১ সালে আমরা যখন স্বাধীন হই, ভারতের স্বাধীনতার বয়স তখন ২৪ বছর। আমরা তাদের শাসনপদ্ধতি থেকে কোনো শিক্ষা নিইনি।

বাংলাদেশে অতীতে এ ধরনের কমিশন হয়েছে, কিন্তু তাদের প্রতিবেদন বাস্তবায়িত হয়নি। এ জন্য একে রাজনৈতিক এজেন্ডায় আনতে হবে, তবেই সংস্কার কার্যকর হবে।

আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান

আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান

অতিরিক্ত সচিব, তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগ

যেকোনো ব্যবস্থাকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় আনলে তা থেকে ভালো সুফল পাওয়া যায়। সরকারের বিভিন্ন সেবাকে মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চাইলে অনলাইন সেবার বিকল্প নেই। আগে যেসব সেবা নেওয়ার জন্য মানুষকে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে যেতে হতো, পুরোপুরি না হলেও তার অনেকগুলোই এখন ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে দেওয়া হয়। সামনের দিনগুলোয় এসব সেবা আরও জোরদারে সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জনপ্রশাসন সংস্কারে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে। একই সঙ্গে উপাত্তের নিরাপত্তা, গোপনীয়তা, ঝুঁকি নিয়েও ভাবার সময় এসেছে। এ জন্য আমাদের ভিত্তি মজবুত করতে হবে। এই ভিত্তি মজবুতের জন্য আমাদের ডিজিটাল সাক্ষরতা লাগবে। আমরা যদি আইসিটি খাতের জ্ঞান না অর্জন করি, তাহলে তৃতীয় পক্ষের সহয়তায় এপিআই বা সফটওয়্যার তৈরি করে কোনো লাভ হবে না। আমাদের নিজেদেরই একে ধারণ করতে হবে। আমাদের আগে একটা ব্যাকবোন তৈরি করতে হবে যে আমরা কীভাবে উপাত্তের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারি। ইদানীং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। এর নৈতিক ব্যবহার নিয়েও ভাবতে হবে।

আমরা ইতিমধ্যে ডি-নথি বা ই-নথি কার্যক্রম চালু করেছি। সেখানে কোন ফাইল কখন জমা হয়, তা রেকর্ডেড থাকে। প্রতিটি ফাইলেরই একটি নির্দিষ্ট সময় আছে যে আমি কত দিন তা রাখতে পারব।

আমাদের যে অনলাইনে আয়কর জমা দেওয়ার পদ্ধতি চালু হয়েছে, সেখানে উপাত্তের নিরাপত্তা নিয়ে আরও সচেতন হতে হবে।

মো. আবু জাফর রিপন

মো. আবু জাফর রিপন

পরিচালক, বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি)

বাংলাদেশ লোকপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (বিপিএটিসি) সরকারি চাকরিজীবীদের প্রশিক্ষণের সর্বোচ্চ প্রতিষ্ঠান। আমরা সরকারি চাকরিজীবীদের বিভিন্ন পর্যায়ে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। প্রথমেই নবীন সরকারি চাকরিজীবীদের আমরা ভিত্তিমূলক প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও সরকারি–বেসরকারি প্রখ্যাত ব্যক্তিদের সেখানে প্রশিক্ষক হিসেবে আমন্ত্রণ জানানো হয়। প্রশিক্ষণার্থীদের কীভাবে জবাবদিহির আওতায় আনা যায়, নাগরিকবান্ধব সেবা প্রদান করা যায়, সে বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। বাংলাদেশের জবাবদিহি নিশ্চিতের কিছু উপাদান আছে, যেমন তথ্য অধিকার আইন, বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি (এপিএ), শুদ্ধাচার পুরস্কার—এই বিষয়গুলো সম্পর্কে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি।

সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে ওয়ান–স্টপ সার্ভিসসহ আমাদের বিভিন্ন ডিজিটাল টুলস আছে। এগুলোর সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন। এটি করা গেলে দুর্নীতি অনেক ক্ষেত্রেই কমে যেত বলে আমি মনে করি।

ফেরদৌস আরফিনা ওসমান

ফেরদৌস আরফিনা ওসমান

অধ্যাপক, লোকপ্রশাসন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আমরা কেমন জনপ্রশাসন চাই? জনপ্রশাসনকে কি শুধু সেবা প্রদানের একটা উপকরণ হিসেবে দেখতে চাই, নাকি জনপ্রশাসনকে রাষ্ট্র তৈরির একটা হাতিয়ার হিসেবে দেখতে চাই, তা ঠিক করতে হবে।

কেন্দ্রমুখিতা আমাদের প্রশাসনের জন্য একটা সমস্যা। এ জায়গায় বিকেন্দ্রীকরণ প্রয়োজন। নিয়োগ ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে রাজনৈতিক হস্তক্ষেপমুক্ত করাটা খুবই জরুরি।

কাঠামোগত সংস্কারের ক্ষেত্রে বর্তমানে সিভিল সার্ভিসের ক্যাডারের সংখ্যা অনেক বেশি। ক্যাডারের সংখ্যা কমানো যায় কি না, মন্ত্রণালয়ের সংখ্যা কমানো যায় কি না, তা ভেবে দেখতে হবে।

নিয়োগের ক্ষেত্রে বিসিএস পরীক্ষাপদ্ধতিকে পরিবর্তন করতে হবে। প্রশ্নের প্যাটার্নে মুখস্থ বিদ্যাকে উৎসাহিত না করে তার দক্ষতা ও অর্জিত জ্ঞানকে বাস্তবে প্রয়োগ করার সক্ষমতা আছে কি না, সেদিকে জোর দিতে হবে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্বচ্ছ একটা নীতিমালা করা প্রয়োজন, যাতে তিনি জানতে পারেন কেন তাঁর পদোন্নতি হয়নি।

আসিফ মোহাম্মদ শাহান

আসিফ মোহাম্মদ শাহান

অধ্যাপক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

১৯৭২ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত আমরা জনপ্রশাসনের ক্ষেত্রে একটি প্রশ্নের উত্তর পাইনি বা পাওয়ার চেষ্টাও করিনি। রাজনৈতিক দলগুলো জনপ্রশাসনকে রাজনৈতিকীকরণ করেছে। এটি করা হয়েছে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে, চুক্তিভিত্তিক পদোন্নতি বাড়িয়ে, পদোন্নতি বা বদলির বিষয়গুলোকে পুঁজি করে। এ সমস্যা সমাধান না করতে পারায় আমরা রাজনীতি ও প্রশাসনের সম্পর্ক কী রকম হবে, তা নির্ধারণ করতে পারিনি। রাজনীতি ও প্রশাসনের সম্পর্ক হবে পরিপূরক, একটি অন্যটিকে পরিপূর্ণ করবে। এর মানে এটা নয় যে আমলাতন্ত্র খুব অতিমাত্রায় শক্তিশালী হবে যে তারা জনগণের চাহিদাকে অস্বীকার করবে। আবার এতটাও দুর্বল হবে না যে সে ক্ষমতাকে প্রশ্ন করতে পারে না এবং ক্ষমতাসীনরা তাকে দিয়ে যা ইচ্ছে তা–ই করাবে। এ জায়গায় একটা ভারসাম্য নিশ্চিত করা জরুরি। এ ভারসাম্য নিশ্চিত করতে আমলাতন্ত্রের পেশাদারত্বে জোর দিতে হবে।

আনোয়ারুল হক

আনোয়ারুল হক

সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি, ইউএনডিপি বাংলাদেশ

ইউএনডিপির অভিজ্ঞতা বলে, কোনো উদ্যোগই সামনে এগোতে পারবে না যদি একটি রাজনৈতিক সমঝোতা ও মালিকানাবোধ তৈরি না হয়। আমাদের পুরো প্রশাসনব্যবস্থায় একটা সংস্কার প্রয়োজন। বিকেন্দ্রীকরণ নিয়েও কথা হওয়া প্রয়োজন। পুরো রাষ্ট্র কীভাবে চলবে, কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় সরকারের ভূমিকা ও সম্পর্ক কী হবে, আমলাতন্ত্র ও নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্যে জবাবদিহির যে অস্পষ্টতা রয়েছে, সে বিষয়গুলো নিয়ে কথা বলা প্রয়োজন।

ইউএনডিপির পক্ষ থেকে কিছু সুপারিশ তুলে ধরছি। প্রথমত, প্রশাসনকে জেন্ডার রেসপন্সিভ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বাংলাদেশে ডিজিটাল সেবা বাস্তবায়নের সঙ্গে ইউএনডিপি জড়িত। ভূমি, পাসপোর্টসহ অনেকগুলো সেবাই ইতিমধ্যে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় এসেছে। আমাদের স্মার্ট সার্ভিস ডেলিভারিতে যেতে হবে। সেবা গ্রহণের প্রক্রিয়াকে সহজ ও জনবান্ধব করতে হবে। তৃতীয়ত, দুর্নীতির যে শ্বেতপত্র প্রকাশিত হয়েছে, সেখানে বলা হয়েছে, দুর্নীতি প্রতিরোধের ক্ষেত্রে আমাদের একটা বড় ব্যর্থতা হলো রাষ্ট্র, বাজার ও সুশীল সমাজ একাকার হয়ে গেছে। এ বিষয়গুলো আর যাতে না ঘটে, তা নিয়ে ভাবতে হবে।

মো. আজহার উদ্দিন

মো. আজহার উদ্দিন

সদস্য, জাতীয় নাগরিক কমিটি

বিগত সরকার ১৫ বছর ধরে তার সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় জনগণকে যুক্ত করেনি। কারণ, তারা জনগণের কাছে ভোটের জন্য নির্ভরশীল ছিল না। গণতন্ত্র থাকলে জনগণের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

অনেক বছর ধরে একটা ধারণা ছিল যে বিসিএস পরীক্ষার নিয়োগপ্রক্রিয়া অনেকটা স্বচ্ছভাবে হয়। কিন্তু বিগত সরকারের সময়ের কিছু ঘটনা এ ধারণাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। এই জায়গায় সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই হবে। পররাষ্ট্র, পুলিশ ও প্রশাসনে সাধারণ পরীক্ষা দিয়ে প্রবেশের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বিশেষায়িত যে প্রশিক্ষণ তার মাধ্যমে প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া প্রয়োজন। এগুলো বিসিএসের সাধারণ পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়ার জায়গা নয়। এ জায়গাগুলোকে বিশেষ খাত হিসেবে আলাদা করে ভাগ করে স্বাধীনভাবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

মো. সিরাজুল ইসলাম

মো. সিরাজুল ইসলাম

সিনিয়র একাডেমিক কো–অর্ডিনেটর, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়

আমি মনে করি সংস্কারের জন্য সরকারকে উল্লম্ব জবাবদিহির পরিবর্তে আনুভূমিক জবাবদিহির বিষয়গুলোয় জোর দেওয়া উচিত। জনগণ কীভাবে জনপ্রশাসনে অংশগ্রহণ করতে পারে, বা জনপ্রশাসন যখন কোনো পাবলিক পলিসি নির্ধারণ করে, তখন একেবারে নকশা পর্যায় থেকেই কীভাবে জনগণকে নিয়ে যৌথভাবে কাজ করা যায়, তা ভাবতে হবে৷

পাশাপাশি এটি বাস্তবায়নেও জনগণকে যুক্ত করতে হবে। জেলা প্রশাসনের কোনো কমিটি জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি শিক্ষার্থী ও নাগরিক প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা যেতে পারে৷ এ কমিটি বাজেট প্রণয়ন থেকে কর্মসূচি বাস্তবায়ন পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ের কাজ সময়মতো পর্যালোচনা করলে আনুভূমিক জবাবদিহির বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এভাবেই প্রশাসনে সক্ষমতার মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে।

কামরুল ইসলাম খান

কামরুল ইসলাম খান

ব্যবসায় উন্নয়ন প্রধান, ইনটেলিয়ন টেকব্রিজ

আমি একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ব্যক্তি। সরকারি সেবা ক্ষেত্রে আমার মতো বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের চাওয়া হচ্ছে প্রযুক্তির প্রবেশযোগ্যতা যেন আমাদের জন্য সহজ করা হয়, তার ব্যবস্থা করা। সরকারি ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশনগুলো আমাদের ব্যবহার উপযোগী নয়। এই জায়গায় সরকারকে নজর দিতে হবে।

আমাদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি কর্ম কমিশন বিসিএস পরীক্ষায় শ্রুতিলেখকের সুবিধা চালু করেছে৷ কিন্তু যেসব শ্রুতিলেখক সরবরাহ করা হয়, তাঁরা অনেকেই মানসম্পন্ন নন। এতে করে আমাদের অসুবিধা হয়। এ জন্য আমরা নিজেরাই শ্রুতিলেখক ঠিক করতে চাই, পিএসসি তাঁদের যাচাই করবে।

প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কিছু সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্র চিহ্নিত করে সেখানে তাঁদের জন্য আলাদা নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।

নেইল গান্ধী

নেইল গান্ধী

সিনিয়র গভর্ন্যান্স অ্যাডভাইজার, ব্রিটিশ হাইকমিশন, ঢাকা

যুক্তরাজ্য সরকার বাংলাদেশের জনগণ ও জনপ্রশাসনের উন্নয়নকে সমর্থন করে। আমরা সিভিল সার্ভিস ও জনসেবা প্রদান উন্নতকরণে উল্লেখযোগ্য সময় ধরে বাংলাদেশকে সহায়তা করছি। একই কাজে আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং ভবিষ্যত সরকারগুলোকে সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত রয়েছি। আমরা মনে করি, এখন বাংলাদেশে জনপ্রশাসনের উন্নয়নের সময়। জনপ্রশাসনের উদ্দেশ্য নিয়ে চিন্তা করার, যোগ্য ব্যক্তিদের নিয়োগের জন্য নিয়োগপদ্ধতি পরিবর্তন করার এবং সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন, কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক সিভিল সার্ভিস গঠনের সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ এই পরিবর্তনের নেতৃত্ব দেবে, আমরা জনপ্রশাসনের উন্নতিতে আমাদের দক্ষতা, নেটওয়ার্ক সহায়তা প্রদান এবং তহবিল সরবরাহ করতে প্রস্তুত। সংস্কার কমিশনের কাজ হলো কার্যকর সংস্কারগুলো চিহ্নিত করা, তবে বাংলাদেশের জনগণ, ভবিষ্যৎ সরকার ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব হলো এই সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা এবং সংস্কারগুলো সবার জন্য কার্যকর করা।

নাজিয়া হাশমি

নাজিয়া হাশমি

সিনিয়র গভর্ন্যান্স অ্যাডভাইজার, ইউএনডিপি

আমি তিনটি বিষয় সম্পর্কে বলতে চাই। প্রথমত, আমরা চাই সংস্কার কমিশন তরুণ আমলাদের জন্য একটি কাঠামো নিয়ে ভাবুক। এই প্রশাসনকে সত্যিকার অর্থে পরিবর্তন করতে হলে তরুণদের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী ভূমিকায় রাখতে হবে। প্রশাসনে শুধু তাদের উপস্থিতি নয়, তাদের নতুন ধারণা ও উদ্যম দিয়ে পরিবর্তন আনার সুযোগ দিতে হবে।

দ্বিতীয়ত, জনসাধারণের সেবার সুবিধার্থে সিভিল সার্ভিসকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহারের সক্ষমতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। এখন আমরা চাইলে বা না চাইলেও কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা আমাদের কাজ করার ধরনে বিপ্লব ঘটাচ্ছে।

তৃতীয়ত, তরুণদের অংশগ্রহণ নিয়ে অনেক কথা বলা হয়, কিন্তু বিভিন্ন প্রজন্মের মধ্যে কীভাবে কাজ করতে হয়, তা সঠিকভাবে শেখানো হয় না। সরকারি প্রশাসনে এ বিষয়ে জোর দিতে হবে। আমি সিভিল সার্ভিস সংস্কারের একটি মূল উপাদান হিসেবে সংস্কার কমিশনের কাছে এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়ার অনুরোধ জানাই।

সুপারিশ:

১. নিয়োগপ্রক্রিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি: সময় কমাতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রার্থীদের দক্ষতা, সমস্যা-বিশ্লেষণ ও সমাধান সামর্থ্য যাচাই করে যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ নিশ্চিত করা।

২. স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকরণ: নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে স্বচ্ছ নীতিমালা প্রণয়ন এবং রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ মুক্ত রাখা।

৩. আইন প্রণয়ন: ঔপনিবেশিক আইন সংস্কার করে সরকারি চাকরি আইনগুলো আধুনিক ও প্রাসঙ্গিক করে হালনাগাদ করা।

৪. জেন্ডার রেসপনসিভ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রশাসন: সিভিল সার্ভিসের সব কাঠামো ও সেবাকে জেন্ডার রেসপনসিভ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করা।

৫. দুর্নীতি প্রতিরোধে জবাবদিহি: সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর্যায়ে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কাঠামোগত ব্যবস্থা (যেমন জনশুনানি, অভিযোগ দায়েরের পদ্ধতি) শক্তিশালী করা।

৬. নেতৃত্বের সমন্বয়: তরুণ ও সিনিয়র প্রজন্মের কর্মকর্তাদের মধ্যে নেতৃত্বের সমন্বয়কে সিভিল সার্ভিস সংস্কারের একটি মূল উপাদান হিসেবে বিবেচনা করা।

৭. ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার: জনসেবা উন্নত করতে সিভিল সার্ভিসের প্রতিটি স্তরে ডিজিটাল প্রযুক্তি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারকে অগ্রাধিকার দেওয়া।

৮. বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য সুযোগ: বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য আলাদা নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।

এ ছাড়া গোলটেবিল বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মার্গা পিটার্স, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় লোক প্রশাসন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান, মানবাধিকারকর্মী ইলিরা দেওয়ান, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক কৃষ্ণ কুমার সাহা, ইউএনডিপির এসআইপিএস প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহমুদুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাইশা ফারাহ। সঞ্চালনায়: তানজিম ফেরদৌস, ইনচার্জ, এনজিও ও বিশেষ ক্রোড়পত্র, দ্য ডেইলি স্টার।