২৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আয়োজন দেখতে ক্লিক করুন
মূল সাইট দেখতে ক্লিক করুন

ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে কন্যাশিশুর ক্ষমতায়ন ও নেতৃত্ব

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস পালিত হয় ১১ অক্টোবর। এ বছর এর প্রতিপাদ্য ‘গার্লস ভিশন ফর দ্য ফিউচার’। এ উপলক্ষে ১০ অক্টোবর ২০২৪ রাজধানীর প্রথম আলো কার্যালয়ে এক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে ইউনিসেফ বাংলাদেশ। আলোচনার সারমর্ম এই ক্রোড়পত্রে ছাপা হলো। এটি আলোচকদের ব্যক্তিগত মতামত, এর জন্য আয়োজকদের দায় নেই।

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণকারীরা। ১০ অক্টোবর ২০২৪, ঢাকার প্রথম আলো কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

অংশগ্রহণকারী

এমা ব্রিগহাম

ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি, ইউনিসেফ বাংলাদেশ

উমামা ফাতেমা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

নাজিফা জান্নাত

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভারসিটির শিক্ষার্থী ও  বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

ফারিহা হোসেন

শিক্ষার্থী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

হেমা চাকমা

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

মেঘা খেতান

শিক্ষার্থী, সিটি ইউনিভারসিটি

রাফিয়া রেহনুমা

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ক্যামেলিয়া শারমিন চূড়া

শিক্ষার্থী,  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

 

মিম

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ স্কুল

সানজিদা আক্তার

শিক্ষার্থী, মিরপুর বাংলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ

ফারাবী জামান

শিক্ষার্থী, বিএএফ শাহীন কলেজ

ইশাল খান

শিক্ষার্থী, সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ

জুনাইরা ইসলাম নুবা

ছাত্রী, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ

কাজী আশরাফি আন্নি

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী, বরিশাল সরকারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়

ফারিয়া সুলতানা

ইয়ুথ মেন্টর গ্রুপ সেভ দ্যা চিলড্রেন; প্রাক্তন সেন্ট্রাল মেম্বার এনসিটিএফ

রাজিয়া সুলতানা

শিক্ষার্থী, সরকারী শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ

সঞ্চালনা

লাবণ্য প্রজ্ঞা

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে আয়োজিত গোলটেবিল বৈঠক শেষে অংশগ্রহণকারীরা। ১০ অক্টোবর ২০২৪, ঢাকার প্রথম আলো কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

আলোচনা

এমা ব্রিগহাম

ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি, ইউনিসেফ বাংলাদেশ

আমি বাংলাদেশে প্রায় দুই বছর ধরে কাজ করছি। এ সময়ে আমি অনেক মেধাবী কিশোরী ও তরুণীর সঙ্গে পরিচিত হয়েছি, যাঁরা নানা রকম বাধা পেরিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের সফলতা আমাকে সব সময় অনুপ্রাণিত করে।

বাংলাদেশে কিশোরী ও নারীদের প্রতিনিয়তই নানা রকম প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। এটা সত্যিই হতাশাজনক যে বাংলাদেশের প্রায় ৪২ শতাংশ কিশোরী (১৫–১৯ বছর) রক্তস্বল্পতায় ভোগে। এ ছাড়া এখানে প্রতি দুজন কিশোরীর মধ্যে একজনের ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়ে যায়। শিশুবিবাহের কারণে কিশোরীরা স্কুল থেকে ঝরে পড়ে। তারা অল্প বয়সে গর্ভবতী হয়। ফলে ওই কিশোরী ও তার নবজাতক নানা ধরনের স্বাস্থ্যগত জটিলতায় ভোগে।

বাংলাদেশ বিগত জুলাই-আগস্ট মাসে কঠিন এক সময় পার করেছে। এ সংকটকালে কিশোরী-তরুণীদের ভূমিকা ছিল অসামান্য। মাঠের আন্দোলনে ছেলেদের সঙ্গে মেয়েদেরও সমানতালে অংশগ্রহণ করতে আমরা দেখেছি।

কন্যাশিশুদের সব ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ ও তাদের নেতৃত্ব বিকাশের জন্য ইউনিসেফ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। স্টেম এডুকেশনের (সায়েন্স, টেকনোলজি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও ম্যাথমেটিকস) সঙ্গে কিশোরীদের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি, তাদের জীবনদক্ষতা বিকাশ, সার্ফিং, সেলফ-ডিফেন্সের মতো অপ্রচলিত নানা খেলাধুলায় নারীদের অংশগ্রহণের সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য আমরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিচ্ছি। এ ছাড়া কমিউনিটি পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবাগুলো নিশ্চিত করার লক্ষ্যেও আমরা কাজ করছি। ইউনিসেফ শিশুদের জন্য হটলাইন নম্বর ১০৯৮ চালু করতে সহায়তা করেছে। এখানে সেবা দেওয়ার জন্য সার্বক্ষণিক প্রশিক্ষিত লোকজন থাকেন।

আমরা জানি, তোমরা সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছ। বাংলাদেশের কিশোরী ও তরুণীরা তাদের ভবিষ্যৎ সমাজ নিয়ে কী চিন্তা করছে, তাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশাগুলো কী, তা জানতেই আজ আমরা একত্র হয়েছি। আজকের এই কিশোরী ও তরুণীদের এসব প্রত্যাশা যেন নীতিনির্ধারকসহ সবার কাছে পৌঁছায়, তার জন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। কিশোরী ও তরুণীদের এই আত্মবিশ্বাস ও নেতৃত্বের গুণাবলিকে পূর্ণভাবে বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে।

পাশাপাশি মনে রাখতে হবে, আমাদের নিজেদের অধিকার নিয়ে আমাদের নিজেদেরই কথা বলতে হবে; পরিবর্তন আনতে উদ্যোগী থাকতে হবে।

লাবণ্য প্রজ্ঞা

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

আজকের গোলটেবিল বৈঠকে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উদ্‌যাপিত হচ্ছে কন্যাশিশুদের মতামত, নেতৃত্ব ও উদ্যোগকে গুরুত্ব দিয়ে। আমরা কন্যাশিশুদের অধিকার অর্জনের ক্ষেত্রে তাদের সব অগ্রগতিকে স্বীকৃতি দিই, সম্মান জানাই।

বাংলাদেশের পাঁচ দশকের ইতিহাসের দিকে তাকালে নারীর গুরুত্বপূর্ণ কিছু অর্জন দেখতে পাই। বাংলাদেশে শিক্ষাক্ষেত্রে নারীর সাফল্য চোখে পড়ার মতো। শহর, গ্রাম ও হাওরাঞ্চলের নারীরা এগিয়ে চলেছে। চাকরি ও খেলাধুলার ক্ষেত্রে মেয়েদের সাফল্যজনক অর্জন খুবই প্রশংসনীয়। নারীরা বিমান চালাচ্ছে, পুলিশ কিংবা সেনাসদস্যদের মতো চ্যালেঞ্জিং পেশাতেও নারীদের অংশগ্রহণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে আমরা দেখি, কন্যাশিশু, কিশোরী, তরুণী কিংবা নারী—সবাই কোনো না কোনোভাবে বৈষম্য অথবা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। কন্যাশিশুর বিরুদ্ধে হওয়া সব ধরনের বৈষম্য তাদের যোগ্যতা বিচারের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে যায় এবং একটি জাতিকে সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে এটির দায়ভার বহন করতে হয়।

উমামা ফাতেমা

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নারীসংক্রান্ত বিষয়ে কেউই কথা বলতে চায় না। একই সঙ্গে আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যে নারীরা সেই অর্থে সম্পৃক্ত হতে পারে না। রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও বেশি গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে। নারীর প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোকে আরও অনেক বেশি সহনশীল হতে হবে। যেমন কোনো নারী ধর্ষণ বা হেনস্তার শিকার হলে তাদের পাশে স্থানীয় সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর দাঁড়ানো উচিত। তাহলে সমাজের মধ্যে এই হেনম্তাগুলো ধীরে ধীরে কমে আসবে। 

আর একই সঙ্গে নারী ঐক্যের ধারণ শুরু থেকে তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। আমি যখন আরেকজন নারীর সঙ্গে থাকি, তখন আমরা দুজনেই সম্মিলিতভাবে এগিয়ে যেতে পারি। এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত হলে এখান থেকে নারী নেতৃত্ব উঠে আসা আরও অনেক সহজ হবে। তখন দেখা যাবে একজন নারী অন্য একজন নারীকে সামনের দিকে এগিয়ে আনছেন।

আমাদের দেশের শহরগুলো কেমন যেন মাঠহীন হয়ে গেছে। যে কয়েকটা মাঠ আছে, সেগুলোও ছেলেদের দখলে। তাই মেয়েদের খেলাধুলার জন্য মাঠ বরাদ্দ করার সুপারিশ জানাচ্ছি। স্কুলগুলোতে মেয়েদের খেলার মাঠ থাকা নিশ্চিত করতে হবে। শিশু থেকে কিশোরী বয়সের মেয়েদের খেলাধুলায় উৎসাহী করে তুলতে হবে।

নাজিফা জান্নাত

ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক

শিশুর বিকাশে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জায়গা হচ্ছে পরিবার। একটি কন্যাশিশু কতটা বিকশিত হবে, তা নির্ভর করে তার বেড়ে ওঠার পরিবেশের ওপর। তাই শিশুর প্রতি যেকোনো ধরনের আচরণের ব্যাপারে মা–বাবার অবশ্যই সচেতন হতে হবে।

পরিবারের পর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কন্যাশিশু ও কিশোরীদের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব বিকশিত করার সুযোগ তুলনামূলকভাবে কম। তাই শিক্ষাক্ষেত্রে আঞ্চলিক ও গ্রামপর্যায়ে মেয়েরা যাতে স্কাউট দল, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইত্যাদির মাধ্যমে নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ পায়, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। যাতে নেতৃত্বের গুণাবলি বিকশিত হয়, সে জন্য পরিবার ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নেতৃত্ব দেওয়ার সুযোগ তৈরি করতে হবে। স্কাউট দল, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ইত্যাদিতে অংশগ্রহণের জন্য শিশুকে উৎসাহ দিতে হবে। শুধু শহরেই নয়, উপশহর ও গ্রামাঞ্চলেও এমন সুযোগ তৈরি করতে হবে। শিশুদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের সচেতন হতে হবে।

শৈশবে আমি সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ‘মিনা কার্টুন’ দেখেছি। আমি শৈশবে এ অনুষ্ঠান থেকেই জেন্ডারবৈষম্যের বিষয়টি জানতে পেরেছি। কীভাবে এসব সমস্যার সমাধান করা যায়, তা সম্পর্কেও ধারণা পেয়েছিলাম। সুতরাং বর্তমানে এ ধরনের কোনো অনুষ্ঠান করা যায় কি না, সেটি ভেবে দেখার অনুরোধ থাকবে। এতে বর্তমান প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীরাও বিষয়গুলো বুঝতে ও সচেতন হতে পারবে।  ‘নারীরা দুর্বল’ –এই প্রান্তিক ধারণাকে নারী-পুরুষ সবার মাথা থেকে মুছে ফেলতেই হবে।

ফারিহা হোসেন

শিক্ষার্থী, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

কন্যাশিশুরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হলে, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে জানলে পরবর্তী সময়ে তাদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলি বিকাশিত হবে। নারী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তিতে যেই টাকা দেওয়া হতো, আমার মতে তা যথেষ্ট নয়। বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে এর পরিমাণ বাড়ানো উচিত। এখনো গ্রামাঞ্চলের কন্যাশিশুদের একটা বড় অংশ প্রাথমিক শিক্ষার পরেই ঝরে পড়ছে। বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে। অনেক অভিভাবক কন্যাশিশুর পড়াশোনার জন্য খরচ করতে চান না। তাই তারা যেন বিনা খরচে পড়াশোনা করতে পারে, সে সুপারিশ করব।

কন্যাশিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে। নানাভাবে হয়রানির শিকার বা মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত কিশোরী ও তরুণীদের মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন করে মনস্তাত্ত্বিক নিয়োগ দিতে হবে। কিশোরীদের অভিভাবকদের সঙ্গে শিক্ষকদের যোগাযোগ থাকাও বেশ জরুরি।

আজকাল গণপরিবহনে নারীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। যেমন গণপরিবহনে সিটের পেছনে থেকে কাঁচি দিয়ে নারীর পোশাক কেটে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে বলে জেনেছি। এ ধরনের ঘটনা রুখে দিতে সরকারকে সচেষ্ট হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি। গণপরিবহনে অবশ্যই এক বা একাধিক নিরাপত্তাকর্মী রাখতে হবে। কারণ, বাসের সিসি ক্যামেরা অনেক সময় ভেঙে ফেলছে। তাই এটি যথেস্ট নয়। আর নারীদের জন্য আলাদা বাস থাকলে আরও ভালো হয়।

একজন নারী যখন নিজে উপার্জন করা শিখবেন, তখন তাঁর নেতৃত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরির্বতন আসবে।

ক্যামেলিয়া শারমিন চূড়া

শিক্ষার্থী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়

আমি বরাবরের মতোই নারীদের নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দিতে চাই। আমাদের নারীবান্ধব সমাজ তৈরির চেষ্টা করতে হবে। ভয় দেখিয়ে নারীদের নিরাপত্তা ও সম্মান নিশ্চিত করতে পারব না। একেবারে শিকড় থেকে নারীবান্ধব সমাজ তৈরিতে কী কী করা যায়, সে বিষয়ে রাষ্ট্রকে সচেতনভাবে পদক্ষেপ নিতে হবে। আমাদের পরিবার নিরাপত্তার নামে বাল্যবিবাহ দেয়। সুতরাং প্যারেন্টিংয়ের বিষয়টিও এখানে গুরুত্বপূর্ণ।

পারিপার্শ্বিক পরিবেশ নিরাপত্তার নামে নারীদের খেলাধুলার অধিকার কেড়ে নেয়, নিরাপত্তার নামে নারীর শিক্ষা-উচ্চশিক্ষা থেমে যায়, উদ্যোক্তা হতে বাধা দেয়।

নিরাপত্তার নামে এমন প্রহসন আসলে নারীরা কখনোই  চায় না। নিরাপত্তার নামে ভয় দেখিয়ে গেলে নারীরা তাদের মতামত দিতে কুণ্ঠাবোধ করতেই থাকবে এবং নারী নেতৃত্বের অভাব তৈরি হয়। স্বপ্নবান নারীরা তাদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য নিরাপত্তার খাতিরে নিজ দেশ থেকে অন্য দেশে চলে যাবে, এতে মেধা পাচার হবে।

নারীদের নিরাপত্তা না থাকলে আমরা বড় কোনো স্বপ্নই দেখতে পারব না। দেশের অর্ধেকের বেশি জনগোষ্ঠী নারী। যদি তাদের অধিকার নিশ্চিতই না হয়, তাহলে এই প্রহসনমূলক স্বাধীনতার ফল ভোক্তা কেবল পুরুষেরাই হয়, তবে বলা যায়, দেশের উন্নয়ন আসলে থেমেই থাকে। সুতরাং রাষ্ট্রকে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। আমরা নারীদের জন্য এবং তাদের অধিকারের জন্য নিরাপদ বাংলাদেশ চাই। একটি মেয়ে যা হতে চায়, করতে চায়, সে যেন তা–ই করতে পারে। শারীরিক, মানসিক এবং চলাফেরার ক্ষেত্রে সে যেন নিরাপদ থাকে। সাইবার নিরাপত্তা নিয়েও উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

হেমা চাকমা

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

জাতির সংকটে নারীরা নারী হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে অংশগ্রহণ করেছে। নতুন বাংলাদেশে সেই নারীদের বিভিন্ন নীতিনির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় অংশগ্রহণ আরও দৃশ্যমান করা প্রয়োজন। বাংলাদেশে কোনো মেয়ে ধর্ষণের শিকার হলে সে সব ক্ষেত্রে বিচার পায় না। গণপরিবহন, গণপরিসর—সব জায়গাতেই মেয়েরা হেনস্তার শিকার হচ্ছে, নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। সুতরাং ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ বিনির্মাণে আইনের প্রয়োগ ও বিচার ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

স্কুলে মিড ডে মিল বা টিফিন পেলে শিক্ষার ক্ষেত্রে মেয়েদের অংশগ্রহণের সংখ্যা বাড়বে। বাংলাদেশের নারীদের স্বাস্থ্যবিমার আওতায় আনতে হবে। পার্বত্য অঞ্চলে নারী ও পুরুষের মজুরিবৈষম্য নিরসন করতে হবে। আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য ও মাসিক স্বাস্থ্যসংক্রান্ত উপকরণ ও সেবা সহজলভ্য করতে হবে। সাইবার নিরাপত্তাও একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা মেয়েরা জনগোষ্ঠীর অর্ধেক, আমরা সব সময় সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মাণে আগ্রহী। এ জন্য সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

রাফিয়া রেহনুমা

শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নতুন প্রজন্মের নারীরা ভীষণ আত্মবিশ্বাসী। তারা নিজেদের পরিচিত বৃত্তের বাইরে গিয়েও বড় কিছু অর্জন করতে জানে। পুরুষদের সঙ্গে সমান তালেই সমাজের সব দায়িত্ব তারা পালন করে। কিন্তু সমস্যা তখনই হয়, যখন তার প্রাপ্ত অধিকার সে পায় না। নতুন বাংলাদেশ তৈরিতে নারী শিক্ষার্থীদের সমান অবদান রয়েছে।

আমরা জীবনের সব ক্ষেত্রে অধিকার বুঝে পেতে চাই।

রাষ্ট্র বিদ্যমান সামাজিক সাংস্কৃতিক বাস্তবতার দ্বারা অনেক বেশি নিয়ন্ত্রিত হয়। নারীর শিক্ষার অধিকার, সাংস্কৃতিক অধিকার, মতপ্রকাশের অধিকার, রাজনৈতিক অধিকার বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রকে পুরুষতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণের বাইরে স্বতন্ত্র অবস্থান প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

দেশের অর্ধেক জনসংখ্যাকে যুগ যুগ ধরে কাঠামোগত জেন্ডার বৈষম্যের মাধ্যমে পিছিয়ে রাখা হয়েছে। তাদের এগিয়ে আনার মূল দায় এবং দায়িত্ব রাষ্ট্রের। পরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নকে বাস্তবায়ন করতে হবে।

আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক নারী নিজ দায়িত্ববোধ থেকে এসেছিলেন, তাঁরা প্রত্যেকে পুরুষের সমান ঝুঁকি মাথায় নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন। দেশ গঠনের কাজেও অংশগ্রহণ করতে তাঁরা সমান যোগ্য।

মেঘা খেতান

শিক্ষার্থী, সিটি ইউনিভার্সিটি

স্কুল-কলেজে কন্যাশিশুদের খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধা তুলনামূলক কম। পড়াশোনা ছাড়াও অন্যান্য মানসিক চাপ মুক্তির জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কন্যাশিশুদের খেলাধুলার সুযোগ খুবই প্রয়োজন।

কন্যাশিশুদের শিক্ষার ক্ষেত্রে যত্ন নিতে হবে। অর্থাভাবে কোনো কন্যাশিশু যাতে শিশুশ্রমে যুক্ত না হয়, সে বিষয়ে নীতিনির্ধারকদের গুরুত্বের সঙ্গে ভাবতে হবে।

বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তন একজন কিশোরীর জীবনে স্বাভাবিক ঘটনা। আমি আমার কাছের অনেককেই দেখেছি তারা বয়ঃসন্ধিকালীন পরিবর্তনকে স্বাভাবিকভাবে নিতে পারে না। তাদের আমরা বোঝানোর চেষ্টা করলেও তারা সব সময় বুঝতে চায় না। তারা বোঝার চেষ্টা করে না, তারা বলে আমার সঙ্গেই কেন এমনটা হচ্ছে! এ ক্ষেত্রে তাদের অনেক সময় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ দেখানোর প্রয়োজন হয়, থেরাপির প্রয়োজন হয়। ঢাকার বাইরের অঞ্চলগুলোতে এ সুবিধা একেবারেই নেই। বিষয়টির প্রতি আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে।

মিম

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী,

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ স্কুল

আমাদের সমাজে অনেকে বাল্যবিবাহকে অর্থনৈতিক সমাধান মনে করে। অনেকে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিয়ে দেয়। কিছু জায়গায় বাল্যবিবাহ রীতির মতো হয়ে গেছে।

মাসিক হলে বিয়ের বয়স হয়ে গেছে, এই ধারণা কারও কারও মধ্যে আছে। কেউ ছেলেদের দ্বারা হয়রানির শিকার হলেও তাকে বিয়ে দিয়ে দেয়। এসব বিষয়ে থেকে মুক্তির জন্য সবার আগে শিক্ষা নিশ্চিত হোক, এটাই  চাই।

সানজিদা আক্তার

শিক্ষার্থী, মিরপুর বাঙলা স্কুল অ্যান্ড কলেজ

কিশোরীরা জেন্ডার বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। অভিভাবকেরা আর্থিক সচ্ছলতা থাকার পরও পড়াশোনা বন্ধের চাপ দেন, যেন বাল্যবিবাহ দিতে পারেন। কিশোরীদের ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

শিশুশ্রম বন্ধ করতে হবে। শিশু সহায়তা নম্বর ১০৯৮-কে সরকারিভাবে প্রচার করা হোক। আমাদের অনেকেই মাদ্রাসায় পড়াশোনা করেন। ধর্মীয় শিক্ষকদের দ্বারা মাসিক স্বাস্থ্যের বিষয়গুলো সম্পর্কে তাদের সচেতন করতে হবে।

কাজী আশরাফি আন্নি

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী, বরিশাল সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়

সঠিক খাদ্যাভ্যাস আমাদের পরিপূর্ণ শারীরিক এবং মানসিক বিকাশের জন্য জরুরি প্রয়োজন। স্কুলের টিফিনে মানসম্মত খাবার সরবরাহ করা দরকার।

আমরা কিশোরীরা রক্তস্বল্পতায় ভুগছি, এটা প্রতিরোধে সরকারি উদ্যোগে সাপ্তাহিক আয়রন ফলিক অ্যাসিড (WIFA) সরবরাহ ও গ্রহণ নিশ্চিত হওয়া জরুরি। যেটা ইতিমধ্যে বিদ্যালয়ে পুষ্টি কার্যক্রমের মাধ্যমে শুরু হয়েছে।

সর্বোপরি সুস্থ থাকার জন্য শরীরচর্চা ও খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তোলার গুরুত্ব সম্পর্কে আমরা আগের থেকে অনেক বেশি সচেতন হয়েছি, শিক্ষকেরাও এ ব্যাপারে আমাদের অনেক সহযোগিতা করেন, তবে আরও বেশি খেলার উপকরণ স্কুলে নিশ্চিত করা দরকার।

ইশাল খান

শিক্ষার্থী, সেন্ট ফ্রান্সিস জেভিয়ার্স গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ

আমাদের বাবা-মায়েরা ছেলেমেয়ের মধ্যে বৈষম্য করেন। অনেক অভিভাবক ভাবেন, ছেলেরাই বড় হয়ে পরিবারের দায়িত্ব নেবে। তাই তাঁরা পরিবারের যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের সময় ছেলেদের মতামতকে বেশি প্রাধান্য দেন। ফলে নিজেদের পরিবার ও সমাজে ছেলেরাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। এ কারণে তাঁরা নারীদের সম্মান করেন না। এ ক্ষেত্রে পরিবারের অনেক দায় রয়েছে।

এ ছাড়া আমাদের দেশের নারীরা অনেক সময় সমাজ ও পরিবারের অনেক অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত মেনে নেয় শুধু নিজের অজ্ঞতার কারণে। সে জন্য ডিজিটাল অ্যাকসেস বৃদ্ধি করা জরুরি। কারণ, ডিজিটাল টেকনোলজি ব্যবহার করার মাধ্যমে যেকোনো বিষয়ে নিজের অজ্ঞতা দূর করা সম্ভব।

জুনাইরা ইসলাম নুবা

ছাত্রী, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ

পুরুষের মধ্যে নারীদের মতামত মূল্যায়ন করা হয় না। পুরুষ ধরেই নেয়, এই ভাবনা দিয়ে জীবন চলে না। এভাবে একপর্যায়ে নারী মতামত দেওয়া বন্ধ করে দেয়। তাই নারীকে শিক্ষিত করার পাশাপাশি মতামত প্রকাশের পরিবেশ দিতে হবে। ধর্ষণের শিকার বা যৌন নির্যাতনের ঘটনায় ভুক্তভোগী বিবাহিত বা অবিবাহিত হোক, ন্যায়বিচারের জন্য সে যেন সাংবিধানিকভাবে আপিল করতে পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে।

ফারিয়া সুলতানা

ইয়ুথ মেন্টর গ্রুপ সেভ দ্যা চিলড্রেন এবং সাবেক কেন্দ্রীয় সদস্য, এনসিটিএফ

আমাদের প্রথম চাওয়া হচ্ছে নিরাপত্তা। আমরা কিশোরীরা অনেক সময় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগি, সেটা স্কুল-কলেজ হোক বা ইন্টারনেট জগৎ হোক। এ জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার নিয়ে কিশোরীদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আওতায় আনতে হবে।

অনেক মেয়ে শিশুশ্রমিক হিসেবে মানুষের বাসায় ও হোটেলে কাজ করে। তাদের  পড়াশোনার সুযোগ করে দিতে হবে। ন্যাপকিনের ব্যবহার পদ্ধতি, মাসিক স্বাস্থ্যের মৌলিক বিষয়গুলো পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা বা নাটিকা হিসেবে প্রদর্শন

করা যেতে পারে৷ মানসিক স্বাস্থ্যসেবা হটলাইন নম্বর ১০৯ সক্রিয় করতে হবে।

রাজিয়া সুলতানা

শিক্ষার্থী, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি

অনেকেই ধরে নেন প্রযুক্তি মেয়েদের জন্য নয়। নারীরা নিজেরাও মাঝেমধ্যে এমনটি ভাবে। দুঃখজনক হলেও সত্যি যে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া নারী শিক্ষার্থীর কম্পিউটার প্রযুক্তি সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানটুকুও নেই। তাই নারীদের জন্য তথ্য ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা আরও জোরদার করা প্রয়োজন। যেকোনো বয়সভেদে, দেশের যেকোনো প্রান্তের সব নারী যেন কম্পিউটার ছাড়াও অন্যান্য স্মার্টফোনভিত্তিক সবকিছু শেখার সুযোগ পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কর্মক্ষেত্রে যেকোনো লিঙ্গভেদে সমান সুযোগ দিতে হবে। নারীরা কম দায়িত্বশীল, এই ধারণা থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। সর্বোপরি নারীদের স্বাস্থ্য রক্ষায় সবাইকে সচেষ্ট হতে হবে। নারীদের স্বাস্থ্যগত চিকিৎসার খরচ কমাতে হবে। এ জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে সচেতনতামূলক উদ্যোগ নিতে হবে।

ফারাবী জামান

শিক্ষার্থী, বিএএফ শাহীন কলেজ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, ১৫-২৯ বছর বয়সী ছেলেমেয়েদের মৃত্যুর তৃতীয় বৃহত্তম কারণ হচ্ছে সুইসাইড, যা মানসিক স্বাস্থ্য দ্বারা প্রভাবিত হয় এবং সমাজে সহিংসতার অন্যতম কারণ এটি।

ফলে বলা যায়, মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিরাট প্রভাব বিস্তার করছে। কিন্তু মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর না দেওয়া আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। এটাকে অনেক জায়গাতেই অবহেলা করা হয়। পরিবার বা আশপাশের মানুষ এটাকে ‘ঢং করা’ , ‘আদিখ্যেতা দেখানো’ হিসেবে দেখে।

তাই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সবাইকে সচেতন করা গেলে অনেক কিছুর সমাধান হবে। এ বিষয়ে প্রশিক্ষণ বা পরামর্শ দেওয়ারও ব্যবস্থা করতে হবে। একজন শিখলে সে আরও পাঁচজনকে শেখাতে পারবে। রক্তশূন্যতা ও বাল্যবিবাহ—দুটিই বড় সমস্যা।

সুপারিশ

  • লোকস্থান, রাস্তাঘাট ও গণপরিবহনে নারী ও কিশোরীদের যৌন হয়রানি বন্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিন।

  • নীতিমালা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়ায় তরুণ নারী নেতৃত্ব ও প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করুন।

  • আঞ্চলিক ও গ্রাম পর্যায়ের স্কুল ও কমিউনিটিতে বিতর্ক ও গার্ল স্কাউটের মতো কর্মযজ্ঞ বৃদ্ধি করে নারী নেতৃত্বের সম্ভাবনাকে লালন ও পরিবারে বৈষম্যমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।

  • কন্যাশিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখা ও স্কুল থেকে ঝরে পড়ার চাপ প্রতিরোধে প্রণোদনা বাড়ানো জরুরি।

  • কিশোরীদের মানসিক সুস্থতার প্রয়োজনীয়তার গুরুত্ব দিন এবং স্কুলে সাইকো–সোশ্যাল ও মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা বাড়ান। এ বিষয়ে গণসচেতনতা তৈরি করুন।

  • কিশোরী ও নারীর ক্ষমতায়নে সরকারি বরাদ্দ ও সহায়তায় কর্মসূচি গ্রহণ করুন।

  • বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

  • কিশোরীদের খেলাধুলায় উৎসাহী করতে হবে এবং স্কুলে কিশোরীদের খেলাধুলার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করতে হবে।

  • নারী ও কিশোরীদের জন্য তথ্য ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা আরও জোরদার করা প্রয়োজন। যেকোনো প্রান্তের সবাই যেন কম্পিউটার ছাড়াও অন্যান্য স্মার্টফোনভিত্তিক সবকিছু শেখার সুযোগ পায়, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।