স্বাধীন ও জবাবদিহিমূলক মানবাধিকার কমিশনের লক্ষ্যে সংস্কার প্রস্তাব
এম্বাসি অব সুইজারল্যান্ড ইন বাংলাদেশের সহায়তায়, ইউএনডিপি বাংলাদেশের স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস পলিসিজ অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রকল্পের আয়োজনে ‘টুওয়ার্ডস অ্যান ইনডিপেনডেন্ট অ্যান্ড ক্রেডিবল এনএইচআরসি: এজেন্ডাস ফর রিফর্ম’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় গত ২৮ নভেম্বর ২০২৪। এ আয়োজনে গবেষণা সহায়তা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার অন বাজেট অ্যান্ড পলিসি (সিবিপি)।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া
মানবাধিকারকর্মী ও অ্যাডভোকেট, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট
আমাদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ধারণা ভারতীয় মানবাধিকার কমিশনের ধারণা থেকে নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি ১৯৯৩ সালের প্যারিস নীতিমালার অনেকগুলো বিষয় নিয়েই জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠিত হয়। আর এ–বিষয়ক আইন হয়েছে ২০০৯ সালে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯। আইনের ৩(২) উপধারায় বলা হয়েছে, কমিশন একটি সংবিধিবদ্ধ স্বাধীন সংস্থা হবে এবং এর স্থায়ী ধারাবাহিকতা থাকবে। সংবিধিবদ্ধ স্বাধীন সংস্থা, এ শব্দগুলো আমাদের আলোচনার বড় জায়গাজুড়ে থাকবে।
প্রকৃত অর্থেই তারা স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে কি না? কমিশনকে নিয়ে প্রথম প্রশ্নই আসে এর নিয়োগপ্রক্রিয়া নিয়ে। আইনে একটা বাছাই কমিটির কথা আছে। এ কমিটির সদস্য কারা হবেন, তা ধারা ৭-এ বলা আছে। রাষ্ট্রপতি বাছাই কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী নিয়োগ প্রদান করবেন। বাছাই কমিটিতে সংসদের স্পিকার, আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, আইন কমিশনের চেয়ারম্যান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও দুজন সংসদ সদস্য থাকেন, যাঁরা স্পিকার কর্তৃক মনোনীত হবেন। ফলে এ কমিটির মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের অনুগত কাউকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টা থেকেই যাচ্ছে। সুতরাং এই বাছাই কমিটি স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন নিয়োগ দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।
মানবাধিকার কমিশনকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। আমরা তাদের তদন্ত করার ক্ষমতা খুব একটা চর্চা করতে দেখিনি। আবার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্ষেত্রে সরাসরি কোনো তদন্তের ক্ষমতা আইনের মধ্যে দেওয়া হয়নি। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তো প্রায়ই নানা রকম মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থেকেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এ ধরনের মারাত্মক মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে মানবাধিকার কমিশনের সরাসরি তদন্ত করার এখতিয়ারই না থাকলে তার প্রভাব কী, তা বাংলাদেশের নাগরিকেরা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে।
কোনো প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা চেয়ারম্যান কীভাবে কাজ করছেন, এর ওপর নির্ভর করবে না। প্রতিষ্ঠান নিশ্চয়ই চেয়ারম্যানের কার্যক্রমের ওপর ভিত্তি করে দাঁড়াতে পারে না। প্রতিষ্ঠান হিসেবে কমিশনের যে চরিত্র দাঁড় করানোর কথা ছিল, তা দাঁড় করানো যায়নি। এর অন্যতম কারণ হচ্ছে আইনের ভিত্তিগুলো দুর্বল। এগুলো সংস্কার করা খুবই জরুরি। ১৩ ধারায় বলা হয়েছে, চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে কেউ আদালতের দ্বারস্থ হলে সুপ্রিম কোর্ট থেকে মানবাধিকার কমিশনের মাধ্যমে তদন্ত করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে জমা দেওয়ার কথা বলা যাবে। এ চর্চাগুলো আমরা দেখিনি; অর্থাৎ বিচার বিভাগের সঙ্গে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের যে সম্পর্কের জায়গা তৈরি হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি।
মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলেও কমিশনের কেবল সুপারিশ দেওয়ার মধ্যে আটকে থাকার বৈশিষ্ট্য রয়েছে; অর্থাৎ তারা প্রতিবেদন প্রকাশ ও সুপারিশ দেওয়ার মতো কাজের মাধ্যমে একটা চাপ প্রয়োগকারী গোষ্ঠী হিসেবে থেকে যান। অথচ এর বাইরেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন চাইলে বাংলাদেশের সংবিধানের ১০২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আদালতে রিট করতে পারবেন। বিগত ১৩ বছরে কমিশনের পক্ষ থেকে এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখিনি। এ সময়ের মধ্যে মানবাধিকারের মারাত্মক কোনো লঙ্ঘন ঘটেনি, এমন নয়। তারা প্রয়োজন মনে করেনি বা অত দূর পর্যন্ত যেতে পারেনি। এ ছাড়া অবসরপ্রাপ্ত সচিবদের কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগও দেওয়া হয়েছে। এটি প্যারিস মূলনীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। পাশাপাশি অন্যান্য মন্ত্রণালয় থেকে ডেপুটেশনে বিভিন্ন কর্মকর্তাদের নিয়ে আসার প্রবণতাতেও আমাদের আপত্তি রয়েছে।
শিরিন হক
প্রধান, নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন
মানবাধিকার কমিশন নিয়ে সবচেয়ে বড় হতাশার জায়গা হলো, গৎবাঁধা কিছু জায়গার বাইরে তারা কোনো প্রশ্ন বা সমস্যা উত্থাপন করেনি। মৃত্যুদণ্ড মানবাধিকারের ভয়াবহ একটি লঙ্ঘন। কিন্তু এ মৃত্যুদণ্ড নিয়ে মানবাধিকার কমিশন কোনো দিন কথা বলেনি। এ দেশে মৃত্যুদণ্ডের বিলুপ্তি চাই, আইনের মধ্যে মৃত্যুদণ্ড থাকবে না—এ রকম কোনো কথা আপনাদের কাছ থেকে শুনিনি। আমরা অনেক আন্তর্জাতিক সনদে স্বাক্ষর করেছি। এসব সনদের সঙ্গে রাষ্ট্রের সব আইন, নীতি ও বিধি সামঞ্জস্যপূর্ণ করা প্রসঙ্গে রাষ্ট্রের বাধ্যবাধকতার জায়গায় আমরা চরমভাবে ব্যর্থ। বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আমরা পিছপা হই।
মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীন তদন্ত ক্ষমতা নিয়ে অনেক আগে থেকেই কথা হচ্ছে। নারী আন্দোলনের পক্ষ থেকেও এ দাবি জানানো হয়েছে। এটি না থাকলে অনেক কিছুই মানবাধিকার কমিশন করতে পারবে না, তা কেবল মুখের বুলি হয়েই থাকবে। মানবাধিকারের বিষয়ে কোনো রাষ্ট্রের তিনটি দায়িত্ব রয়েছে। প্রথমত, মানবাধিকারকে শ্রদ্ধা করা ও রাষ্ট্রের নাগরিকেরাও যেন মানবাধিকারকে শ্রদ্ধা করেন, তা নিশ্চিত করায় পদক্ষেপ নেওয়া।
দ্বিতীয়ত, মানবাধিকারের সুরক্ষা দেওয়া। তৃতীয়ত, এসব পূরণ হচ্ছে কি না, তা নিশ্চিত করা। সুরক্ষার বিষয়ে কেবল রাষ্ট্র না, তৃতীয় পক্ষের লঙ্ঘনের বিষয়ও দেখা জরুরি। সুতরাং, মানবাধিকার সম্পর্কে রাষ্ট্রের দায়িত্ব পরিষ্কারভাবে মানবাধিকার কমিশনকে জানানো আছে। যাঁরা মানবাধিকার কমিশনের দায়িত্বে আছেন, তাঁরা তাঁদের দায়িত্ব ও বাধ্যবাধকতা কী আছে, তা ভালো করে জানেন। তারপরও যদি তাঁরা সেগুলো বিবেচনায় না নেন, তবে কোনো মানবাধিকার কমিশনই সফল হবে না।
কামাল উদ্দিন আহমেদ
সাবেক চেয়ারম্যান, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ
আমরা সবাই সত্যিকারের স্বাধীন একটা মানবাধিকার কমিশন চাই। আইনের ২৩ ধারায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন নিজের বাজেট করে জানিয়ে দেবে এবং তা বাস্তবায়িত হবে। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে সেটি করা হয় না। আমরা বরাদ্দের অর্থ শেষ করতে পারি না। বাজেট বণ্টনের সীমাবদ্ধতা তুলে দেওয়া উচিত, যেন মানবাধিকার কমিশন বড় পরিসরে কাজ করতে পারে।
আইনের ১৮ ধারায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনীর ক্ষেত্রে কমিশনের কার্যক্ষমতাকে অগ্রাহ্য করা হয়েছে, তা তুলে দেওয়া উচিত। আমরা এটি বারবার বলেছি ও লিখিত আকারে জমা দিয়েছি।
মানবাধিকারের বিষয়ে আমাদের ধারণার কমতি রয়েছে। মানবাধিকারের ধারণা অনেক বিস্তৃত। বাংলাদেশের কোনো কমিশনকে এত বিষয় নিয়ে কাজ করতে হয় না। আমরা অনেকগুলো আইনের খসড়া মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি, যা এখনো অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। আমরা বারবার বৈষম্য বিলোপ আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কথা বলেছি। গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ আইনের খসড়া পাঠিয়েছি। যৌন হয়রানি প্রতিরোধ ও সুরক্ষা আইনের বিষয়েও আমরা সুস্পষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছি।
মানবাধিকার কমিশন সরকারকে কোনো সুপারিশ করলে তা তারা বাস্তবায়ন না করলে, কমিশনের তা প্রয়োগ করার কোনো ক্ষমতা নেই। মানবাধিকার কমিশনকে আরও কার্যকর করার জন্য এই ক্ষমতা আইন সংশোধন করে প্রয়োগ করার ক্ষমতা সংযোজন করা উচিত।
নিরুপা দেওয়ান
সদস্য, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং সাবেক সদস্য, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ
প্রান্তিক মানুষদের মানবাধিকার সব সময়ই লঙ্ঘিত হচ্ছে। পার্বত্য বা সমতলের আদিবাসীদের ক্ষেত্রে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ধরনটা ভিন্ন। আমাদের মনে হয় যেন আমরা এ দেশের নাগরিকই না। মানবাধিকার নিয়ে কথা বললেই আমরা ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে চিহ্নিত হই। আমাদের চলাফেরার স্বাধীনতাও অনেক ক্ষেত্রে নেই। চলাফেরার সময় আমাকে পথিমধ্যে জিজ্ঞেস করা হয় কোথায় যাব বা কোথা থেকে আসছি। মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত বেশির ভাগ অধিকার আমাদের এখানে অনুপস্থিত। এমতাবস্থায় মানবাধিকার কমিশনকে অনেক বেশি স্বাধীন করতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আমাদের এখানে সবচেয়ে বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী। তারা কমিশনের ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকেন। তাহলে আমরা করব কী?
২০১০ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত দুই মেয়াদে আমরা মানবাধিকার কমিশনের দায়িত্ব পালন করেছি। আমাদের দুর্বলতা ছিল। তারপরও আমরা চেষ্টা করেছি। সারা বাংলাদেশ চষে বেড়িয়েছি। মানবাধিকার কমিশন সরকার ও জনগণের মধ্যে যে সমন্বয় করবে, তা যেন নির্ভেজাল হয়। সেভাবেই আইনগুলো প্রণয়ন করতে পারলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন শক্তিশালী হবে।
সেবাস্টিন রেমা
সচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ
মানবাধিকার কমিশনের কাছে আমাদের সবার প্রত্যাশা অনেক। এই প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে কাঠামোগত যে পরিবর্তন হওয়া প্রয়োজন, সেদিকে নজর দিয়ে একে শক্তিশালী করা গেলে পরিবর্তন আসবেই। মানবাধিকার কমিশন একটি সুপারিশ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান। মানবাধিকার সুরক্ষা বিষয়ে কমিশনের বিভিন্ন সুপারিশসমূহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানসমূহ বাস্তবায়ন করলেই এটি শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করতে পারবে।
মানবাধিকার কমিশনকে আরও কার্যকর করার জন্য ও মানবাধিকার সুরক্ষায় সরকার ও কমিশনের মধ্যে সহযোগিতামূলক সম্পর্ক প্রয়োজন। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সিটিজেন চার্টারে মানবাধিকারের বিষয়টি, মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে বা মানবাধিকারের বিষয়ে তাদের যে দায়দায়িত্ব, তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। কমিশনের জেলা কমিটি রয়েছে, যা জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়। সুতরাং জেলা প্রশাসকের দায়দায়িত্বের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রাধিকার হিসেবে মানবাধিকারের বিষয়টিকে যুক্ত করতে হবে। জেলা প্রশাসকের নেতৃত্ব জেলা পর্যায়ের এই কমিটিকে আরও সক্রিয় ও কার্যকর করা গেলে জেলা পর্যায়ে অনেখানি মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়গুলোর সমাধান সম্ভব।
কাজী মারুফুল ইসলাম
অধ্যাপক, উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মানবাধিকার কমিশনের ক্ষেত্রে আমরা আইনের সংস্কারের কথা বলব, কিন্তু একই সঙ্গে এসব দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কোনো রকম জবাবদিহির মধ্যে আনতে না পারলে কোনো লাভ হবে না।
রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন বাহিনী বা রাষ্ট্রীয় দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অনেক সময় মানবাধিকারের লঙ্ঘন করেন। তাঁদের আইনের আওতায় আনতে চাইলে মানবাধিকারের বৃহৎ বাস্তুসংস্থানে আমাদের কাজ করা দরকার। এ বাস্তুসংস্থানে মানবাধিকার কমিশন একটিমাত্র প্রতিষ্ঠান। তাদের একটা ভূমিকা অবশ্যই আছে। কিন্তু এর সঙ্গে যদি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নির্বাহী বিভাগের সমন্বয় না করলে একটা সংকটের জায়গা বা শূন্যতা তৈরি হয়।
মানবাধিকার কমিশনকে জনবান্ধব প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চাইলে এর সঙ্গে নাগরিক সমাজের সংযোগকে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক প্রয়োজন।
সে ক্ষেত্রে তাদের চিরাচরিত মানবসম্পদ বাড়ানোর যে বন্দোবস্ত, তার বাইরে এসে মানবাধিকার নিয়ে ইতিমধ্যে মাঠপর্যায়ে যারা কাজ করছে, তাদের সঙ্গে কার্যকর সম্পর্ক তৈরি করা যেতে পারে। এর মধ্য দিয়ে এসব প্রান্তিক সম্প্রদায়কে যুক্ত করতে পারলে এটি অনেক বেশি কার্যকর হবে।
শেখ হাফিজুর রহমান
অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মানবাধিকার কমিশন গঠন করার উদ্দেশ্য হচ্ছে মানবাধিকারের সংরক্ষণ করা। মানবাধিকারের সংরক্ষণ করা পুরো রাষ্ট্রের কাজ, এটি কেবল মানবাধিকার কমিশনের কাজ নয়। মানবাধিকার সুরক্ষার জন্যই আমাদের রাষ্ট্র গঠন ও মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। রাষ্ট্রের কাজ হচ্ছে মানবাধিকার রক্ষা এবং কেউ তা লঙ্ঘন করলে তার বিচার করা। আমলা, পুলিশ বা সংসদ সদস্য বা যে কেউ মানবাধিকার লঙ্ঘন করলে তা বিবেচনায় নিয়ে নিয়ন্ত্রণ ও বিচারের আওতায় আনায় ভূমিকা রাখতে পারে। সুতরাং মানবাধিকার কমিশনকে আমরা নজরদারি প্রতিষ্ঠান বলতে পারি। কিন্তু এ জায়গায় আমাদের মানবাধিকার কমিশন বিশেষ করে রাষ্ট্র দ্বারা সংঘটিত অপরাধের ক্ষেত্রে কিছু করতে পারেনি।
মানবাধিকার কমিশন পরিচালনা করতে হলে মানবাধিকার বিষয়ে বিশেষায়িত একজন ব্যক্তিকেই নিয়োগ দিতে হয়। আমাদের মানবাধিকার কমিশন সংস্কারে প্রথমেই নিয়োগপ্রক্রিয়াকে জোরদার করতে হবে। সেখানে যেন প্রধান বিচারপতি, আইনজীবী, আইন বিশেষজ্ঞ বা মানবাধিকার বিশেষজ্ঞকে নিয়োগ দেওয়া হয়। মানবাধিকার কমিশনকে কিছু নির্বাহী ক্ষমতা দিতে হবে। আমরা নখদন্তহীন কোনো মানবাধিকার কমিশন চাই না।
মালেকা বানু
সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ
সরকার এমনি এমনি একটা মানবাধিকার কমিশন গঠন করেনি। এর পেছনে একটা নাগরিক আন্দোলন ছিল, যার মধ্যে নারী আন্দোলনও ছিল। তাদের একটা চাহিদার ভিত্তিতেই কমিশন গঠিত হয়েছিল। আমরা তো সব সময়ই একটা শক্তিশালী ও স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন চাইব। মানবাধিকার সুরক্ষার দায়িত্ব তো রাষ্ট্রেরই। আমরা গুম, খুনের বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মতো মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা বলছি। কিন্তু প্রতিদিন কত নারীর মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে, এটা কী মানবাধিকার কমিশন দেখছে? এ বিষয়টা আমরা বারবার মানবাধিকার কমিশনকে বলেছি।
নিয়োগপ্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে মানবাধিকার বা নারীর অধিকার সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ ও সংবেদনশীল মানুষকেই আমরা দায়িত্বে চাই৷ তাদের নিয়োগের এ প্রক্রিয়া অবশ্যই স্বচ্ছ হতে হবে। কীভাবে, কোন নামগুলো আসছে, তা সবার জানতে হবে। কোন বিবেচনায় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত আমলারা পরপর তিনবার কমিশনের চেয়ারম্যান হলেন, তা আমাদের কাছে বোধগম্য নয়। আমাদের অবশ্যই অনেক জায়গায় সংস্কার প্রয়োজন। সাতজনের মধ্যে একজন নারী সদস্য রাখার কথা বলা হয়েছে। আমরা এখানে দুজনের সুপারিশ করছি। এখন তো মানবাধিকার কমিশনই নেই। যত দ্রুত সম্ভব মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
আনোয়ারুল হক
সহকারী আবাসিক প্রতিনিধি, ইউএনডিপি বাংলাদেশ
আমরা কাগজে-কলমে কী করছি, সেটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, মানুষজন মানবাধিকার কমিশন বা মানবাধিকার পরিস্থিতিকে কীভাবে দেখছে, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণ মানুষের কাছে মানবাধিকার কমিশনকে জবাবদিহিমূলক হতে হবে। কোথাও কোনো মানুষের মানবাধিকার লঙ্ঘন হতে দেখলে যেন অভিযোগ করা যায়, সে ব্যবস্থা রাখতে হবে। ডিজিটাল মাধ্যমে এর ব্যবস্থা করা কঠিন কিছু নয়।
একটি বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন প্রতিষ্ঠান গঠনের জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯–এর সংশোধন প্রয়োজন। কমিশনকে স্বাধীন ও সংবিধিবদ্ধ করার ক্ষেত্রে কোন জায়গায় চ্যালেঞ্জগুলো আছে, আমরা তা জানি। সে জায়গায় কাজ করতে হবে। নিয়োগপ্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক হলে হবে না, একটা সক্ষম গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে বাজারব্যবস্থা, সুশীল সমাজ ও রাষ্ট্রের মধ্যে ত্রিভুজাকৃতি সম্পর্ক থাকার কথা। অংশীজনের সঙ্গে সহযোগিতার বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে স্ব-উদ্যোগী হতে হবে। মানবাধিকারকর্মীদের সব সময় মানবাধিকার কমিশনের বন্ধু হতে হবে। মানবাধিকারকর্মীরা কোথাও বিপদে পড়লে, একে কমিশনকে তার নিজের ব্যর্থতা মনে করতে হবে।
সুমাইয়া ইসলাম
নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ নারী শ্রমিক কেন্দ্র (বিএনএসকে)
চাকরি নিয়ে নারীদের বিদেশ যাওয়ার সংখ্যা ও নির্যাতিত হয়ে তাঁদের মৃতদেহ ফিরে আসার সংখ্যা দেখলেই বোঝা যাবে, মানবাধিকার কী পরিমাণে লঙ্ঘিত হয়। আগের মানবাধিকার কমিশন সৌদি আরবে এক গৃহকর্মী হত্যা মামলায় লড়াই করেছে। এ লড়াইয়ে সফলতার মুখও দেখেছে কমিশন।
বিদেশে নারী শ্রমিকের বিশ্রাম ও অবসরের অধিকার সম্পূর্ণরূপে অনুপস্থিত। গন্তব্য দেশগুলোর মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে একত্র হয়ে কাজ করা দরকার। আমরা বাংলাদেশের মানবাধিকার লঙ্ঘন একেবারে শূন্যে নামিয়ে আনতে চাই। প্রধান উপদেষ্টা ‘তিন শূন্যের’ কথা বলেছেন। আমরা বলব, চতুর্থ শূন্য হিসেবে মানবাধিকার লঙ্ঘন শূন্যে নামিয়ে আনতে হবে।
সাইদ আহমেদ
প্রোটেকশন কো–অর্ডিনেটর, এশিয়া প্যাসিফিক, ফ্রন্টলাইন ডিফেন্ডারস
আইনে সীমাবদ্ধতা থাকলেও অনেক সময় সৃজনশীলতা প্রয়োগ করে নানান কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়। বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন দেশের ক্ষেত্রে একটা আদর্শ ঠিক করে দেয়। কিন্তু আমাদের কমিশনকে তা করতে দেখিনি।
বাছাই কমিটি দেখে মনে হয়, তা সরকারের কর্তৃত্বপূর্ণ। আইনে রয়েছে, বাছাই কমিটি প্রতিটি পদের বিপরীতে দুজন করে নাম রাষ্ট্রপতির কাছে প্রস্তাব করবে। তার মধ্য থেকে প্রতিটি পদে রাষ্ট্রপতি একজন করে মনোনীত করবেন। আমরা এত বছরে কোনো দিন জানিনি, কার নাম গিয়েছিল, তাঁদের মধ্যে রাষ্ট্রপতি কাকে নিয়োগ দিলেন। আর কমিশনের বাজেট এখনো আইন মন্ত্রণালয় থেকেই আসে। কিন্তু আইনে সরাসরি অর্থবছরে কমিশনের নামে বাজেট বরাদ্দ থাকতে হবে বলে বলা হয়েছে।
সাবিনা ইয়াসমিন লুবনা
সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার, ঢাকাস্থ সুইজারল্যান্ড দূতাবাস
সুইজারল্যান্ড দূতাবাস থেকে সহায়তার ক্ষেত্রে মানবাধিকারকে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচনা করে হয়। আমাদের বিভিন্ন সময়ের মূল্যায়নে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মানবাধিকার বিষয়ে সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির কাজ, স্থানীয় পর্যায়ে উপস্থিতি ও কমিশনের জনবলের দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়টি উঠে এসেছে। চেয়ারম্যানসহ পুরো কমিশনের নিয়োগ একটা গোপনীয়তার মধ্যে হয়ে থাকে। এ রকম সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে নেতৃত্ব অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। নেতৃত্ব শক্ত না হলে এ ধরনের প্রতিষ্ঠান ঠিকভাবে কাজ করে না। নেতৃত্বের আগ্রহের ওপরে এর স্বাধীনভাবে কাজ করা নির্ভর করে। এখন তো মানবাধিকার কমিশনই নেই। যত দ্রুত সম্ভব মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।
সুমিতা রবিদাস
সমন্বয়কারী, বাংলাদেশ কমিউনিটি রেডিও অ্যাসোসিয়েশন
পাহাড় নিয়ে অনেক কথা হলেও সমতলের আদিবাসীদের নিয়ে খুব কমই কথা হয়। সরকারের পক্ষ থেকে সমতলের আদিবাসীদের প্রাধান্য দিয়ে কোনো কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে, এমন কোনো দৃশ্য চোখে পড়ছে না।
মানবাধিকার কমিশনের কার্যক্রম জেলা পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। বিশেষ করে আদিবাসী অধ্যুষিত জেলাগুলোয় এ কার্যক্রমকে উপজেলা পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে। ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত একটা সেল করার দাবি জানাচ্ছি।
আদিবাসীবিষয়ক বিভিন্ন সমস্যা একেবারে ইউনিয়ন পর্যায়ে পর্যন্ত সমাধান করা সম্ভব হবে। মানবাধিকার কমিশনের সঙ্গে বিচার বিভাগের সমন্বয় জরুরি। সমতলের আদিবাসীদের জন্য পৃথক ভূমি কমিশনের দাবিটি সময়ের দাবি।
সাইদ মহিউদ্দিন দানেশ
সিনিয়র প্রজেক্ট অফিসার, অবয়ব
বাংলাদেশে মানবাধিকার সুরক্ষা পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। দেশের মূলধারার জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রেই মানবাধিকার কমিশন মানবাধিকারের সুরক্ষা দিতে পারছে না, সেখানে বাংলাদেশের যেসব সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী আছে—তা হোক লিঙ্গগত, ধর্মীয় বা জাতিগত—তাদের ক্ষেত্রে মানবাধিকার কমিশন কী করতে পারে, তা বোঝাই যাচ্ছে।
মানবাধিকার সুরক্ষায় সব সংস্কার ও নীতি অবশ্যই অন্তর্ভুক্তিমূলক হতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে একজন ব্যক্তির অধিকার লঙ্ঘনকে মানবাধিকারের একটি মৌলিক লঙ্ঘন হিসেবে স্বীকার করা হবে ও তার সম্বোধন করা হবে। সুতরাং আমরা বলতে চাই, যে নীতিমালা ও সংস্কারই করি বা করব, তা যেন সবার জন্য হয়। একজন মানুষের অধিকারও যদি লঙ্ঘিত হয়, তাকে মানবাধিকারের লঙ্ঘন হিসেবে দেখতে হবে।
সরস্বতী দাস
প্রোগ্রাম অফিসার, দলিত উইমেন ফোরাম
বহু বছর আগে প্রস্তাবিত বৈষম্যবিরোধী আইনের খসড়াটি এখনো পাস হয়নি। দুঃখজনক হচ্ছে, এই বিল নিয়ে অনেক বছর ধরে আলোচনা হচ্ছে। জাতীয় সংসদের কমিটিতে এটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে, কিন্তু বিলটি আর আলোর মুখ দেখেনি।
আমাদের কলোনির বস্তিতে সিটি করপোরেশনের কর্মীদের জন্য আবাসন–সুবিধা সুরক্ষিত আছে। কিন্তু এর বাইরে ব্যক্তিগতভাবে পরিচ্ছন্নতা কাজে যুক্ত ব্যক্তিরা চাকরির পাশাপাশি ভাড়া বাসা খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়ে। তাঁদের কাজের সুযোগও সীমিত। এই সব বৈষম্য মোকাবিলা করার জন্য, আমি দৃঢ়ভাবে বৈষম্যবিরোধী বিল অবিলম্বে কার্যকর করার এবং সবার জন্য সুরক্ষা ও সমতা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধানে এর অন্তর্ভুক্তির আহ্বান জানাচ্ছি।
সুপারিশ
বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সংস্কার বিচ্ছিন্নভাবে করা যাবে না। একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক সংস্কার পরিকল্পনার অবিচ্ছেদ্য উপাদান হিসেবে সংস্কার করতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের সব ধরনের ঘটনাকে জিরো টলারেন্স নীতিতে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
কমিশনকে একটি জবাবদিহিমূলক, স্বচ্ছ ও জনবান্ধব প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলা। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে কমিশনের মধ্যে একটি ট্রাইব্যুনালসদৃশ প্যানেল গঠন করা।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। সব সীমাবদ্ধতা অপসারণ করে জাতীয় মানবাধিকার আইন ২০০৯ সংশোধন করতে হবে। বাছাই কমিটির দ্বারা স্বচ্ছ নিয়োগপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের অনুগত ব্যক্তিদের নিয়োগ প্রদান বন্ধ করা নিশ্চিত করা। প্রধান বিচারপতি/বিচারপতি, আইনজীবী, আইন বা মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ, মানবাধিকারকর্মী নিয়োগ দেওয়া।
মানবাধিকার কমিশনকে বিস্তৃত ক্ষমতা প্রদান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রতিরক্ষা বাহিনী কর্তৃক সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তদন্ত ক্ষমতা প্রদান।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রক্রিয়াকে দ্রুততর, স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক করার লক্ষ্যে ডিজিটাল সিস্টেমকে শক্তিশালী করা।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন ২০০৯ যথাযথ বাস্তবায়নে ও কমিশনের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে যথাযথ বিধি প্রণয়ন বা সংশোধন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করা।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করতে সুশীল সমাজ এবং মানবাধিকারকর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় ও সহযোগিতা জোরদার করা।
আদিবাসীদের জন্য (সমতলসহ) পৃথক ভূমি কমিশন গঠন করা এবং এর সঙ্গে মানবাধিকার কমিশনের সমন্বয় করা। আদিবাসী, দলিত ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর বৈষম্য দূর করার জন্য বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়ন ও কার্যকর করা এবং সবার জন্য সুরক্ষা ও সমতা নিশ্চিত করা।
মানবাধিকার কমিশন এবং বিচার বিভাগের মধ্যে সমন্বয় থাকা।
এ ছাড়া গোলটেবিল বৈঠকে আরও অংশগ্রহণ করেন: মাহমুদুল হাসান, প্রজেক্ট ম্যানেজার, লু্বনা ইয়াসিন, হিউম্যান রাইটস এক্সপার্ট, সাবরিনা শারমিন, কমিউনিকেশনস অ্যান্ড নলেজ ম্যানেজমেন্ট এক্সপার্ট, স্ট্রেনদেনিং ইনস্টিটিউশনস পলিসিজ অ্যান্ড সার্ভিসেস প্রজেক্ট, ইউএনডিপি বাংলাদেশ, কৃষ্ণ কুমার সাহা, সহকারী অধ্যাপক, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। সঞ্চালনা করেন তানজিম ফেরদৌস, ইনচার্জ, এনজিও ও বিশেষ ক্রোড়পত্র, দ্য ডেইলি স্টার