সুরা কমরে চাঁদ দুই ভাগ হওয়ার বিবরণ
সুরা কমর পবিত্র কোরআনের ৫৪তম সুরা। মুহাম্মদ (সা.)–এর নবুয়ত যে কুরাইশরা তার সত্যতা প্রমাণের জন্য তাঁকে বলেন চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করে দেখাতে। মহানবী (সা.) তখন তাঁর আঙুল দিয়ে ইঙ্গিত করলে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। কেউ কেউ এই ঘটনাকে বিশেষ ধরনের চন্দ্রগ্রহণ বলে ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। নুহ (আ.)-এর সম্প্রদায়, আদ জাতি, লুত (আ.)-এর সম্প্রদায় এবং ফেরাউন সত্যের আমন্ত্রণ পেয়েও তা অস্বীকার করে। এর শাস্তি হিসেবে তারা চিরতরে লুপ্ত হয়ে যায়। বিপরীতে বিশ্বাসীদের জন্য রয়েছে জান্নাতের পুরস্কার।
সুরার শুরুতেই একটি অলৌকিক ঘটনার কথা বলা হয়েছে। এর পর বলা হয়েছে, মুহাম্মদ (সা.)–এর দেখানো নিদর্শন দেখেও কাফেররা যে মুখ ফিরিয়ে নেয় তার পরিণতি সম্পর্কে। এর প্রমাণ দিতে আল্লাহ ইতিহাসের উদাহরণ দিয়েছেন।
বর্ণনা করেছেন নূহ (আ.)–এর সম্প্রদায়, আদ জাতি, সামুদ জাতি, লুত (আ) এর জাতি, ফেরাউনের পরিণতি। একেক জাতিকে আল্লাহ শাস্তি দিয়েছেন একেক উপায়ে, বেশির ভাগ সময়েই প্রাকৃতিক শক্তি দিয়ে। একেক জাতির পরিণতির বর্ণনা করার পর পরই আল্লাহ বলেছেন, ‘আমি এ কোরআনকে উপদেশ লাভের সহজ উৎস বানিয়ে দিয়েছি। এমতাবস্থায় উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?’ ১৭, ২২, ৩২ ও ৪০ আয়াতে এ কথার পুনরাবৃত্তি এসেছে। এরপর আল্লাহ আগের সঙ্গে বর্তমান জাতির তুলনা এবং আখিরাতে এর খারাপ পরিণতির কথা বর্ণনা করেছেন। এর পর বিশ্বাসীদের ভালো পরিণতির কথা দিয়ে সুরার ইতি টেনেছেন।
এ সুরায় মহানবী (সা.)-এর আঙুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার বয়ান রয়েছে। নবীজি (সা.) তখন মক্কার মুশরিক ও ইহুদিদের একত্ববাদের দাওয়াত দিচ্ছেন। আবু জাহেলের নেতৃত্বে তাদের একটি দল এসে বলল, মুহাম্মদকে তারা আল্লাহর রাসুল হিসেবে মেনে নেবে, যদি তিনি চাঁদকে দু্ই ভাগ করে দেখাতে পারে।
জিলহজ মাসের ১৪ তারিখ নবীজি (সা.) আল্লাহর কাছে দোয়া করেন। এর পর আঙুল দিয়ে ইশারা করলে চাঁদ দুই ভাগ হয়ে যায়। চাঁদ এত স্পষ্টভাবে দুই ভাগ হয়ে গিয়েছিল যে ব্যবধানের মাঝখান দিয়ে হেরা পর্বত দেখা যাচ্ছিল। আবু জাহেল বলল, এটা জাদু। মক্কার বাইরে থাকা লোকেরাও যখন তাকে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার তথ্য দিল, তখনও সে বলল, এটা জাদু। মুশরিকেরা নবীজির (সা.) মোজেজাকে জাদু বলে আখ্যা দিয়েছিল।
ইহুদিরা তাওরাতে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার ব্যাপারটি আগেই জানত। তারা ইসলাম গ্রহণ করে।