শবে বরাত পালনের তাৎপর্য
শবে বরাত মুসলমানদের জন্য একটি আচরণীয় ধর্মীয় দিবস। আরবি শাবান মাসের পঞ্চদশ রাতে এটি পালিত হয়। এই উপমহাদেশে শবে বরাত পালিত হয় প্রধানত সৌভাগ্য রজনী হিসেবে।
শবে বরাত পালনের বিশেষ তাৎপর্য আছে। মুসলমানদের ধারণা, এ রাতে পরবর্তী বছরের ভাগ্য লিপিবদ্ধ হয়। সারা রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি এবং আল্লাহর থেকে ক্ষমা প্রার্থনা করলে গুনাহ মাফ হয় বলে আশা করা হয়।
আল্লাহর অনুগ্রহের রাত
ফারসি ভাষায় ‘শব’ শব্দের অর্থ রাত। আর ‘বরাত’ শব্দের অর্থ সৌভাগ্য। আরবিতে একে বলে লাইলাতুল বরাত, অর্থাৎ সৌভাগ্যের রাত। হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, আল্লাহ এই রাতে তাঁর বান্দাদের গুনাহ মাফ করে দেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। পবিত্র এই রাতে তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পরম করুণাময় আল্লাহর অনুগ্রহ লাভের আশায় নফল নামাজ পড়েন, কোরআন তিলাওয়াত করেন এবং জিকিরে মগ্ন থাকেন। অতীতের পাপ-অন্যায়ের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করার সময়ও এটি। একই সঙ্গে ভবিষ্যৎ জীবনের কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা।
অনেকেই এ দিন রোজা রাখেন এবং গোপনে দান-খয়রাতের কাজ করে থাকেন। অনেকে, এই রাতে তাঁদের বিগত নিকটাত্মীয়দের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে প্রার্থনার আয়োজন করেন। রাতে ধর্মপ্রাণ মুসলোনেরা আত্মীয়, প্রতিবেশী ও দুস্থদের মধ্যে নানা রকমের খাদ্য বিতরণ করে থাকেন। মসজিদ ও কবরস্থানে গিয়ে প্রার্থনা করেন।
ভাষাভেদে ভিন্ন নাম
স্থানভেদে ভাষা অনুযায়ী এই দিবস ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। ইরান ও আফগানিস্তানে নিম শাবান, তুরস্কে বিরাত কান্দিলি, ভারতীয় উপমহাদেশে শবে বরাত বা নিফসু শাবান। ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে এই দিনটি পালন করা হয় দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া জুড়ে।
ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, আজারবাইজান, তুরস্ক, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, কাজাখস্তান, তুর্কমিনিস্তান, কিরগিজস্তান শবে বরাতের উৎসব পালন করে।
রমজানের আগমনী
পবিত্র শবে বরাতে সন্ধ্যার পর অনেকে কবরস্থানে যান। আপনজনদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দোয়া করেন তাঁরা।
পবিত্র শবে বরাত মুসলিমদের কাছে এককথায় রমজানের আগমনী বার্তা বয়ে আনে, কারণ আরবি ক্যালেন্ডার অনুসারে শাবান মাসের পরেই আসে রমজান মাস। তাই শবে বরাতের রাত থেকে রমজানের প্রস্তুতিও শুরু হয়ে যায় পুরোদমে।