সুরা মুহাম্মদের বিষয়বস্তু
সুরা মুহাম্মদ পবিত্র কোরআনের ৪৭তম সুরা। বিশ্বাসী ও অবিশ্বাসীদের পার্থক্য এবং সত্যের জন্য জিহাদের কথা বলা হয়েছে। হিজরতের পরে যুদ্ধ শুরুর আগেই যুদ্ধের নির্দেশ দিয়ে মদিনায় সুরাটি নাজিল হয়েছিল। সুরাটির প্রথমেই বলা হয়েছে যে, এখন দুটি দলের মধ্যে মোকাবিলা হচ্ছে। একটি দল সত্যকে মেনে নিতে অস্বীকার করছে এবং আল্লাহর পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আরেক দল মেনে নিয়েছে যে আল্লাহর পক্ষ থকে তাঁর বান্দা মুহাম্মাদ (সা.)–এর ওপর সত্য নাজিল হয়েছে। আল্লাহ সুস্পষ্টভাবে বলেছেন যে প্রথম দলটির সব চেষ্টা ও কাজকর্ম তিনি নিষ্ফল করে দিয়েছেন এবং শেষ দলটির অবস্থা সংশোধন করে দিয়েছেন।
ধনসম্পদ নিয়েও এতে বলা হয়েছে। ধন আল্লাহর দান। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ধনী বা গরিব রাখেন। আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করা এবং অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো ধনীর কর্তব্য। ইসলাম ও মানুষের উপকারে সম্পদ ব্যয়ে কার্পণ্য করা অনুচিত। আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় না করে কার্পণ্য করা হারাম। এ জন্য কোরআনে জাহান্নামের কথা বলা হয়েছে। সাধারণ খাতেও খরচ না করে কার্পণ্য করা মন্দ অভ্যাস।
নবীজি (সা.) নিজেও উম্মতদের এই অভ্যাস ছাড়ার তাগিদ দিয়েছেন। তিনি কৃপণতা থেকে আল্লাহর কাছে মুক্তি চাইতেন। কারণ কৃপণতা আল্লাহর অপছন্দ। মুমিনকে যেমন মিতব্যয়ী হতে হবে, তেমনই কৃপণও হওয়া যাবে না।
আল্লাহ বলেন, ‘দেখ, তোমরাই তারা যাদের আল্লাহর পথে ব্যয় করতে বলা হচ্ছে, অথচ তোমাদের অনেকে কৃপণতা করছ; যারা কার্পণ্য করে তারা কার্পণ্য করে নিজেদেরই প্রতি। আল্লাহ অভাবমুক্ত এবং তোমরা অভাবগ্রস্ত, যদি তোমরা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করো তাহলে তিনি অন্য জাতিকে তোমাদের স্থলাভিষিক্ত করবেন; তারা তোমাদের মতো হবে না।’ (আয়াত: ৩৮)
অবিশ্বাসীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, তারা আল্লাহর সাহায্য ও দিকনির্দেশনা থেকে বঞ্চিত। ঈমানদারদের বিরুদ্ধে তাদের কোনো প্রচেষ্টাই কার্যকর হবে না। তারা দুনিয়া ও আখেরাত দুই ক্ষেত্রেই খারাপ পরিণামের সম্মুখীন হবে। আল্লাহর নবীকে মক্কা থেকে বের করে দিয়ে তারা মনে করেছিল বড় সফলতা পেয়েছে। প্রকৃতপক্ষে প্রকৃতপক্ষে নিজেদের ধ্বংস ডেকে এনেছে।