প্রার্থী ১৯, তিনজন আলোচনায়
রাজধানীর দক্ষিণ-পূর্ব প্রান্তের শ্যামপুর-কদমতলী এলাকায় এবার একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যেই প্রবল প্রতিদ্বন্দ্বিতা। মনোনয়ন চাইছেন ১৯ জন। তবে এখন পর্যন্ত প্রার্থিতা চূড়ান্ত হয়নি। এই নির্বাচনী এলাকায় (ঢাকা-৪) ধানের শীষ প্রতীক কে পাচ্ছেন—তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বলছেন, প্রার্থীর সংখ্যা বেশি হলেও আলোচনা মূলত তিনজনকে নিয়ে। কেন্দ্র থেকে নির্দেশনা না আসা পর্যন্ত প্রার্থী নিয়ে দ্বিধা কাটবে না।
একসময় বৃহত্তর ডেমরা এলাকা নিয়ে ছিল ঢাকা-৪ আসন। ২০০৮ সালের নবম সংসদ নির্বাচনের আগে এই আসন ভেঙে দুটি আসন করা হয়। এখন শ্যামপুর-কদমতলী এলাকা নিয়ে ঢাকা-৪ আসন। বাকি অংশ নিয়ে ঢাকা-৫ আসন।
অবিভক্ত ঢাকা-৪ আসনে ১৯৯১ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত বিএনপির হয়ে নির্বাচন করেন সালাহ উদ্দিন আহমেদ। তিন দফা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি দুই দফায় বিজয়ী হন। এরপর আসনটি ভাগ হলে সালাহ উদ্দিন আহমেদ ২০০৮ সালের নির্বাচনে ঢাকা-৫ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হন। এ সময় ঢাকা-৪ আসন থেকে নির্বাচন করেন মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আবদুল হাই। তিনি এবার মুন্সিগঞ্জ থেকে নির্বাচন করতে চান। ফলে ঢাকা-৪ আসনে নতুন প্রার্থী মনোনয়নের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, সালাহ উদ্দিন আহমেদ ঢাকা-৪-এর পাশাপাশি ঢাকা-৫ আসন থেকেও দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। তবে তিনি ঢাকা-৫ আসন থেকেই নির্বাচন করতে আগ্রহী। তিনি চান ঢাকা-৪ আসনে বিএনপির হয়ে মনোনয়ন পাক তাঁর ছেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তানভীর আহমেদ রবীন। তানভীর আহমেদও ঢাকা-৪ আসনে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন।
>ঢাকা-৪ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৪৫ হাজার ৯০৮। প্রার্থিতা নিয়ে অনিশ্চয়তা, আসছে নতুন মুখ।
ঢাকা-৪ আসনে বাবা-ছেলেসহ ১৯ জন দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন। মনোনয়ন ফরম সংগ্রহকারীদের মধ্যে রয়েছেন শ্যামপুর থানা বিএনপির সভাপতি আ ন ম সাইফুল ইসলাম, কদমতলী থানা বিএনপির সভাপতি মীর হোসেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মেয়ে অপর্ণা রায়, জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) নেতা এম এ মালেক, শ্যামপুর থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলিমুল আলী, মহিলা দলের নেত্রী হামিদা বানু, শ্যামপুর থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও সাবেক কমিশনার মোজাম্মেল হোসেন, কদমতলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কমিশনার আবদুর রাশেদ, কদমতলী থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক বাদল রানা, শ্যামপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা, শ্যামপুর থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মাহবুব, কদমতলী থানা মহিলা দলের সভানেত্রী রাজিয়া সুলতানা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর খান, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি হুমায়ুন, দনিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জুম্মন মিয়া ও বৃহত্তর শ্যামপুর থানা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি আবদুর রাজ্জাক। আরেকজন প্রার্থীর নাম সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে অনেকেই ডামি প্রার্থী রয়েছেন। মূলত তানভীর আহমেদ, সাইফুল ইসলাম ও মীর হোসেনের মধ্যেই প্রার্থিতা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। আলোচিত এই তিনজনের কেউই আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেননি। তাই তাঁদের মধ্যে যে কেউ দলীয় মনোনয়ন পেলে সেটি হবে বিএনপির এই আসনে নতুন মুখ।