তারেক রহমান ক্ষমা না চাইলে বিএনপির ভবিষ্যৎ নেই: কাদের সিদ্দিকী
কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান জনগণের কাছে ক্ষমা না চাইলে তাঁর দলের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে গঠিত হওয়া জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট জোট ছেড়ে দেওয়া প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর একজন সহকর্মীর নেতৃত্বে ঐক্যফ্রন্ট গঠিত হয়েছিল কিন্তু ঐক্যফ্রন্টের নেতা ড. কামাল হোসেন নয়, বিএনপি। বিএনপির নেতৃত্বে বা আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে আমি এখন আর বেহেশতেও যেতে রাজি না।’
কাদের সিদ্দিকী আরও বলেন, ‘হাওয়া ভবনের জন্য তারেক রহমান যতক্ষণ জনগণের কাছে ক্ষমা না চাইবেন এবং জনগণ যতক্ষণ পর্যন্ত তাঁকে ক্ষমা না করবে ততক্ষণ পর্যন্ত বিএনপির কোনো ভবিষ্যৎ নাই।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার সময় আওয়ামী লীগের নেতাদের ভূমিকা নিয়ে গতকাল এক অনুষ্ঠানে প্রশ্ন তুলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ প্রসঙ্গে কাদের সিদ্দিকী বলেন, তিনি সে সময় প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। কিন্তু সে সময় যারা প্রতিবাদ করেছিলেন তাদের নাম প্রধানমন্ত্রী না নেওয়ায় আক্ষেপ প্রকাশ করেন আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংসদ।
আলোচনা সভায় রাজাকারের তালিকা প্রকাশ নিয়ে সমালোচনা করেন বক্তারা। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান বলেছেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সরকার সংখ্যালঘুদের, মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকারের তালিকায় নাম দিয়েছে। বাসদের বরিশালের সদস্যসচিব মনীষা চক্রবর্তীর বাবা মুক্তিযোদ্ধা তপন কুমার চক্রবর্তী ও তার ঠাকুরমা ঊষা রানি চক্রবর্তীর নাম রাজাকারের তালিকায় আসায় সমালোচনা করেন বাসদ সাধারণ সম্পাদক।
খালেকুজ্জামান বলেন, এখন গণতন্ত্রের নামে পরিবারতন্ত্র, স্বৈরতন্ত্র চলছে, দিনে ভোট আগের রাতে হয়ে যাচ্ছে। ভারত প্রসঙ্গে বলেন, ভারত নিজের প্রয়োজনে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছিল। কিন্তু এখন বন্ধুত্বের নামে জিম্মি করা হচ্ছে।
রাজাকারের তালিকায় মুক্তিযোদ্ধাদের নাম আসাকে কলঙ্কিত ঘটনা উল্লেখ করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এত বছর পরে একটা তালিকা প্রকাশ করা হল সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা রাজাকারের তালিকায় স্থান পেল। যারা ক্ষমতায় থেকে এসব করে তাদের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তালিকা যাচাই না করায় তাদেরও সমালোচনা করেন তিনি।
ভারত থেকে অনুপ্রবেশের ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ করতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন মান্না। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনাও করেন।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি চিকিৎসক জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাস্তায় নামতে হবে।
রাজাকার ও মুক্তিযোদ্ধাদের একই তালিকায় স্থান দেওয়ায় সংশ্লিষ্টদের বিচার চান গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করা হয়েছে।
নাগরিক ঐক্যের কেন্দ্রীয় কমিটির সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সারের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, জেএসডির স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন প্রমুখ।