ষড়যন্ত্রকারীদের নতুন ‘প্লট’ সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার: মির্জা ফখরুল
‘সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে’—এটা ষড়যন্ত্রকারীদের নতুন ‘প্লট’ (ষড়যন্ত্র) বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তাদের মূল টার্গেট (লক্ষ্য) হচ্ছে দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করে ভারতের সাহায্যে নিয়ে আবার যদি কিছু করা যায়।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দলের নেতা-কর্মী এবং ছাত্র-জনতাসহ সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
ষড়যন্ত্রের নতুন নতুন কৌশল আবিষ্কার হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন নতুন একটা প্লট নিয়েছে ষড়যন্ত্রকারীরা। সেটা কী, সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘ম্যাডাম (বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) খুব সুন্দর করে বলেছেন যে বাংলাদেশে কোনো সংখ্যালঘু নেই। সবাই বাংলাদেশের নাগরিক, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান—আমরা সবাই মিলে স্বাধীনতাযুদ্ধ করেছি, দেশ স্বাধীন করেছি; কিন্তু তারা আজ হিন্দু সম্প্রদায়, হিন্দু সম্প্রদায় বলে তাদের আলাদা করে দিতে চায়, আমরা তাদের সঙ্গে একমত নই।’
ষড়যন্ত্রকারীরা ভারতের সাহায্য নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় বলে অভিযোগ করেন বিএনপি মহাসচিব। এ প্রসঙ্গে তিনি ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, জনগণ যখন গর্জে ওঠে, তখন তাদের সামনে কোনো কিছুই আর দাঁড়াতে পারে না।
আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ঝামেলা না করে ভালোয় ভালোয় আত্মসমর্পণ করেন। যাঁরা এখনো বাইরে আছেন, এদিক-ওদিক ঘুরছেন, তাঁরা একবার দেখুন; চরম প্রতাপশালী আইনমন্ত্রী, প্রবল প্রতাপশালী উপদেষ্টা, কী অবস্থায় তাঁদের নিয়ে গেছে কোর্টে। তাঁদের বিচার করতে হবে আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী আইনে।’
অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করার কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর জনগণ আস্থা রেখেছে, তারা একটু স্বস্তি ফিরিয়ে দিয়েছে। তারা নির্বাচন দেবে, একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দেবে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণ তাদের ভোট দিয়ে তাদের সরকার গঠন করবে—আমরা সেটাই চাই। আমরা চাই, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তন হোক। আমরা যৌক্তিক সময় দিতে চাই।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকারকে আপনারা সাহায্য করবেন। এটা হচ্ছে অভ্যুত্থানের সরকার, আন্দোলনের ফসল। আমরা তাদের সহযোগিতা দেব, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা গণতন্ত্রের পক্ষে থাকে এবং গণতান্ত্রিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করে।’ এ প্রসঙ্গে তিনি এ-ও বলেন, ‘একটা কথা আমি পরিষ্কার করে বলতে চাই, গণতন্ত্র, গণতন্ত্র এবং গণতন্ত্রের কোনো বিকল্প নাই। ...খালেদা জিয়া মুক্ত হয়েছেন, কিন্তু তারেক রহমান এখনো দেশে ফিরে আসতে পারেননি, তাঁকে ফিরিয়ে আনতে হবে। আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিনের পরিচালনায় অবস্থান কর্মসূচিতে আরও বক্তব্য দেন স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ও সেলিমা রহমান, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আবদুস সালাম, ভাইস চেয়ারম্যান আসাদুজ্জমান রিপন, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির প্রমুখ।