ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন, অস্পষ্ট বক্তব্য: ফখরুল
নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যকে ‘অস্পষ্ট’ বলে অভিহিত করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি অবিলম্বে নির্বাচনের স্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) দাবি করেছেন।
আজ ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণের পর দলটির মহাসচিব এ কথা বলেন।
মহান স্বাধীনতা দিবস ও পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ভাষণে তিনি বলেন, এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে।
প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি অত্যন্ত হতাশ হয়েছেন যে গতকাল প্রধান উপদেষ্টা যে বক্তব্য রেখেছেন, সেই বক্তব্যে তিনি নির্বাচনের রোডম্যাপের কথা বলেননি। তাঁরা হতাশ হয়েছেন যে তাঁর বক্তব্যে তিনি স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানের (বীর উত্তম) নাম একবারও উচ্চারণ করেননি। অথচ এটাই ইতিহাস। তাঁরা আবার চান না, আওয়ামী লীগ যে ইতিহাস বিকৃত করেছে, এখন আবার সেই ইতিহাস বিকৃত হোক। প্রকৃত সত্যকে উদ্ঘাটিত করে জনগণের যে আকাঙ্ক্ষা—একটি গণতান্ত্রিক সরকার, সেই গণতান্ত্রিক সরকারে যত দ্রুত ফিরে যাওয়া যাবে, সমস্যাগুলো ততই সমাধান হবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, এটা (এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে) অত্যন্ত অস্পষ্ট কথা। ডিসেম্বর থেকে জুন...ছয় মাস। সুতরাং, এটা কোনো রোডম্যাপ (পথনকশা) দেওয়া হয়নি। তাঁরা বারবার স্পষ্ট রোডম্যাপ ও দ্রুত নির্বাচনের কথা বলে আসছেন। তা না হলে যে সংকটগুলো সৃষ্টি হচ্ছে, এগুলো কাটবে না।
মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁর দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য নির্বাচনের কথা বলছে না। বিএনপি জাতির স্বার্থে, জাতিকে রক্ষা করার স্বার্থে, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে রক্ষা করার স্বার্থেই নির্বাচনের কথা বলছে, নির্বাচিত সংসদ ও সরকারের কথা বলছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, তাঁরা আশা করছেন অন্তর্বর্তী সরকার অতি দ্রুত ন্যূনতম সংস্কারগুলো করে অর্থাৎ যেগুলো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন, তা সম্পন্ন করে নির্বাচনের ঘোষণা দেবে।
আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ও স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে দলটির কয়েক হাজার নেতা-কর্মী শেরেবাংলা নগরে জিয়াউর রহমানের সমাধিস্থলে যান। তাঁরা দলটির প্রতিষ্ঠাতার সমাধিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। ফাতিহা পাঠ করেন।
এই সময় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমানউল্লাহ আমান, ফরহাদ হালিম ডোনার, মাহবুব উদ্দিন খোকন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব উন নবী খান সোহেল, শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম, উত্তরের আহ্বায়ক আমিনুল হক প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁরা জিয়াউর রহমানের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন।
এ ছাড়া যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, মুক্তিযোদ্ধা দল, মহিলা দল, ছাত্রদলসহ বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে আলাদাভাবে জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়।
জিয়াউর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের আগে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের নেতৃত্বে দলটির নেতা-কর্মীরা সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে একাত্তরের বীর শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানান।