কেএনএফের বিরুদ্ধে অভিযানে নিরীহ মানুষ যেন হেনস্তা না হন: পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন কমিটি
পাহাড়ের নতুন সশস্ত্র গোষ্ঠী কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর চলমান অভিযানে কোনো নিরীহ অধিবাসী যেন হেনস্তার শিকার না হন, সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটি। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়ে জানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিটি। আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বৈঠকে বান্দরবানের থানচি ও রুমায় কেএনএফের ব্যাংক ও অস্ত্র লুট এবং তাদের বিরুদ্ধে চলমান অভিযান নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বলা হয়, ওই ঘটনার পর থেকে সশস্ত্র ওই গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অভিযান চলছে। ঘটনার পর থেকে পাহাড়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। অভিযানে যাতে কোনো সাধারণ মানুষ হেনস্তার শিকার না হন, সেদিকে খেয়াল রাখতে বলা হয়।
কমিটির গত বৈঠকে পার্বত্য অঞ্চলে সেনাবাহিনীর প্রত্যাহার করা ২৪০টি ক্যাম্পে পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তাব দিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আজকের বৈঠকে এই বিষয়ে পুলিশের বদলে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন মোতায়েন করার সিদ্ধান্ত হয়।
বৈঠক শেষে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কমিটির আহ্বায়ক (মন্ত্রী পদমর্যাদা) আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, পার্বত্য এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে সেখানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তৎপরতা বাড়াতে বলা হয়েছে। নিরীহ অধিবাসীরা যাতে হেনস্তার শিকার না হন, সেদিকে লক্ষ রাখতে বলা হয়েছে।
বৈঠক শেষে সংসদ সচিবালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে ভূমিসচিব জানিয়েছেন, ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন বিধিমালা প্রণয়নের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা হবে। পার্বত্য অঞ্চলে ডিজিটাল ভূমি জরিপ কার্যক্রম শুরু করার প্রস্তাব করেন তিনি। এ ছাড়া বৈঠকে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের শূন্য পদে পার্বত্য অঞ্চলের স্থায়ী অধিবাসী, যাঁরা বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মরত আছেন, এমন কর্মকর্তাদের প্রেষণে পদায়নের কাজ অব্যাহত রাখার সুপারিশ করা হয়।
এ ছাড়া বৈঠকে তিন পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে হস্তান্তরিত বিভাগ/দপ্তরগুলোর বিষয়ে সমস্যা ও করণীয় বিষয়ে আলোচনার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীকে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যবিশিষ্ট কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।
আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা (সন্তু লারমা) ও সুদত্ত চাকমা অংশ নেন। আহ্বায়কের বিশেষ আমন্ত্রণে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সদস্য গৌতম কুমার চাকমা উপস্থিত ছিলেন।