৭ মার্চসহ তিনটি দিবস বাতিলের প্রতিবাদ জানিয়েছে উদীচী
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস এবং ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস বাতিলের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। তারা বলেছে, এসব জাতীয় দিবস বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠার ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এসব দিবস কোনোভাবেই কোনো দল বা পরিবারের ব্যক্তিগত দিবস নয়, বরং পুরো জাতির দিবস।
আজ বৃহস্পতিবার উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে এক বিবৃতিতে এই নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এসব দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে সরে আসতে আহ্বান জানিয়েছে শিল্পীগোষ্ঠীটি।
গণমাধ্যমের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, সম্প্রতি কয়েকটি দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এসব দিবস ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হওয়া আওয়ামী লীগ সরকার ও শেখ হাসিনার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত বলে মন্তব্য করেছেন সরকারের তথ্যবিষয়ক উপদেষ্টা। কিন্তু এমন চিন্তা সঠিক নয় বলে মনে করে উদীচী।
৭ মার্চ বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাসে অন্যতম উল্লেখযোগ্য দিন উল্লেখ করে বিবৃতিতে উদীচী বলেছে, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের ধারাবাহিকতায় সারা জাতির পক্ষ থেকে সেদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে যে ভাষণ দেন, মূলত সেই ভাষণেই উদ্বুদ্ধ হয়ে সশস্ত্র সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার অনুপ্রেরণা পায় জাতি। এ ছাড়া ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবার নৃশংসভাবে হত্যার মতো ঘটনা শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর ইতিহাসেই বিরল। ওই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে দেশকে আবারও পাকিস্তানি ভাবধারায় ফিরিয়ে নেওয়ার ষড়যন্ত্র হয়েছিল। আর ৪ নভেম্বর সংবিধান দিবস বাতিলও অবিবেচনাপ্রসূত। ১৯৭২ সালের এই দিনই গণপরিষদে সংবিধান গৃহীত হয়, যেখানে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতি সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।
এই তিনটি দিবস স্বাধীন বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে উল্লেখ করে উদীচী বলে, এসব দিবস বাতিল করলে তা প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে বিকৃত করার অপচেষ্টা বলে মনে হতে পারে।