হেরেছে সরকার, জিতেছে বিএনপি: আমীর খসরু

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীফাইল ছবি

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি থেকে কিছু নেতাকে ভাগিয়ে নিয়ে ৭ জানুয়ারির নির্বাচনকে বৈধতা দেওয়ার সরকারের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। ফলে একপক্ষীয় নির্বাচন করে সরকারই হেরেছে; জিতেছে বিএনপি।

সদ্য কারামুক্ত বিএনপির এই নেতা তাঁদের দলের আন্দোলনসহ রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন। তিন মাসেরও বেশি সময় কারাভোগের পর তিনি জামিনে মুক্তি পান ১৫ ফেব্রুয়ারি।

ভোট বর্জন ও সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ও জোটের আন্দোলনের মুখে গত ৭ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সংসদের বাইরে রয়ে গেল বিএনপি। তাদের আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে—এ আলোচনা দলটির ভেতরেও রয়েছে।

তবে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী পরিস্থিতিটাকে ব্যাখ্যা করেন ভিন্নভাবে। তিনি ব্যর্থতার অভিযোগ মানতে রাজি নন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘সরকার বিএনপির কিছু নেতাকে ভাগিয়ে নিয়ে নির্বাচন করতে চেয়েছিল, যাতে নির্বাচন ও এর মাধ্যমে গঠিত সরকার বৈধতা পায়। সরকারের সেই চেষ্টা সফল হয়নি। তারা বিএনপি থেকে লোক নিয়ে তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়াতে পারে নাই।’

এ বক্তব্য তুলে ধরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী দাবি করেন, ‘বিএনপির আন্দোলন ও কৌশলের কাছে সরকার পরাজিত হয়েছে। কারণ, সরকারকে একপক্ষীয় নির্বাচন করতে হয়েছে। বিজয় হয়েছে বিএনপির।’

একই সঙ্গে আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, একপক্ষীয় নির্বাচন করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু নৈতিকতা, বৈধতার প্রশ্ন বা মানুষের সমর্থন পাওয়া—এসবের সঙ্গে ক্ষমতা দখলের পার্থক্য রয়েছে। এখানেই আওয়ামী লীগ হেরে গেছে। তিনি উল্লেখ করেন, মানুষ বিএনপির আন্দোলনে সমর্থন দিয়েছিল। সে কারণে গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম।

কিন্তু বিএনপি তাদের আন্দোলন সরকারকে চাপে ফেলার মতো অবস্থায় নিতে পারেনি। নির্বাচন হয়েছে। এমন পটভূমিতে দলটির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা রয়েছে। এই আলোচনাও আছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। এই পরিস্থিতির ব্যাপারে আমীর খসরু মাহমুদ সারা দেশে তাঁদের দলের নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার ও নির্যাতনের অভিযোগ তোলেন।

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গত ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশ পুলিশ পণ্ড করে দেয়। এরপর বিএনপি মহাসচিব সহ জ্যেষ্ঠ নেতাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁকেও গ্রেপ্তার করা হয়। সারা দেশে চালানো হয় গ্রেপ্তার অভিযান। বিএনপির হাজার হাজার নেতা-কর্মীকে কারাগারে রেখে সরকার নির্বাচন করেছে। এমন নির্যাতনমূলক পরিস্থিতির মধ্যেও বিএনপি আন্দোলন চালিয়েছে। সরকার দলে কোনো ভাঙন ধরাতে পারেনি।’

আমীর খসরু মাহমুদ উল্লেখ করেন, তাঁদের দলের মহাসচিবসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা মুক্তি পেয়েছেন। এখন তাঁরা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে ভবিষ্যৎ করণীয় ঠিক করবেন।
নির্বাচনের আগে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে ১০টি মামলা হয়। ২৮ অক্টোবরের সমাবেশে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলায় আমীর খসরুকে গত ২ নভেম্বর রাতে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি মুক্তি পেলেন গত ১৫ ফেব্রুয়ারি।