বিএনপির গণ–অবস্থানের দিন সমাবেশ করবে আ.লীগও 

  • সকাল থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ‘সতর্ক পাহারা’ ও মিছিল।

  • দুপুরের পর ঢাকার দুটি স্থানে সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। 

আওয়ামী লীগ লোগো

১১ জানুয়ারি বিএনপির গণ-অবস্থানের দিনও রাজধানীতে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকবে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ ছাড়া ওই দিন সকাল থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নেতা-কর্মীদের মিছিল ও ‘সতর্ক পাহারায়’ থাকতে বলা হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে ১০ ডিসেম্বর বহুল আলোচিত বিএনপির গণসমাবেশ এবং ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলের দিনও আওয়ামী লীগ সমাবেশ ও মিছিল নিয়ে মাঠে ছিল। তবে এ দফায় আক্রমণাত্মক নয়, বিএনপিকে চাপে রাখার জন্য মাঠে থাকার নির্দেশনা রয়েছে বলে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে। 

১১ জানুয়ারি সারা দেশে বিএনপির গণ-অবস্থান কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীতে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আওয়ামী লীগ।

দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের সূত্র জানায়, ১১ জানুয়ারি বিএনপির গণ-অবস্থান কর্মসূচি ঢাকাসহ সারা দেশে। তবে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে ঢাকার কর্মসূচিকে। এ জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ মিরপুরে এবং মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দুটি সমাবেশই হবে দুপুরের পর। এর আগে সকাল থেকে নেতা-কর্মীরা নিজ নিজ এলাকায় জমায়েত হবেন এবং মিছিল নিয়ে সমাবেশে আসবেন। দুটি সমাবেশেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের বক্তৃতা করার কথা রয়েছে। এসব কর্মসূচি সফল করতে একাধিক প্রস্তুতি সভা করেছেন মহানগর নেতারা। তবে উত্তরের সমাবেশটি মিরপুরের ন্যাশনাল কলেজ নাকি বাঙলা কলেজের সামনে হবে, সেটিও এখনো চূড়ান্ত হয়নি। 

মহানগর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা জানান, অনেকটা ৩০ ডিসেম্বরের মতো রাজপথে উপস্থিতি রাখতে চান তাঁরা। বিএনপির জমায়েত বড় না হলে কিংবা বিএনপি টানা অবস্থানের দিকে না গেলে আওয়ামী লীগ স্বাভাবিক মিছিল-সমাবেশ করবে। পরিস্থিতি ভিন্ন হলে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। 

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিএনপির অতীত কর্মকাণ্ড আমাদের সতর্ক অবস্থান নিতে শিক্ষা দিয়েছে। তারা যখনই ধ্বংসাত্মক কর্মসূচিতে যাবে, সঙ্গে সঙ্গে আমাদের নেতা-কর্মীরা প্রস্তুত হয়ে যাবে। ১১ জানুয়ারিও আওয়ামী লীগ সতর্ক অবস্থানে থাকবে।’

বিএনপির গণ-অবস্থান কর্মসূচির বিষয়ে নির্দেশনা দিতে গত শুক্রবার আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সহযোগী সংগঠনের নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। এর বাইরে ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম আলাদা করে কথা বলেছেন মহানগরের নেতাদের সঙ্গে। এর আলোকে ১১ জানুয়ারি (বুধবার) বিএনপির গণ-অবস্থান কর্মসূচির দিন নিজেদের কর্মসূচি তৈরি করা হয়েছে। 

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে বলা যায় ‘সতর্কতা’। এর মাধ্যমে বিএনপিকে কিছুটা চাপে রাখাও লক্ষ্য। ১৪ জানুয়ারি ঢাকা সফরে আসছেন মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু। ফলে এর আগে সরকার ঝামেলায় জড়াতে চায় না। আবার বিএনপিকে রাজপথে বড় কিছু করতেও দেওয়া হবে না। 

এর আগে গত ৩০ ডিসেম্বর বিএনপি ঢাকা গণমিছিল কর্মসূচির দিন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ ‘সতর্ক পাহারার’ নামে রাজধানীর ১১টি স্থানে সমাবেশ-মিছিল করেছে। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ভাগ হয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেন। ৩০ ডিসেম্বরের পর বিএনপি বড় কোনো কর্মসূচি পালন করেনি। এ সময় আওয়ামী লীগেরও রাজপথে কোনো কর্মসূচি ছিল না। আগামীকাল মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। ওই দিন আওয়ামী লীগের প্রায় সব কর্মসূচিই ঘরোয়া। পরদিন বিএনপির গণ-অবস্থানের দিন রাজপথে কর্মসূচি দিয়েছে দলটি। এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের দুজন কেন্দ্রীয় নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর বিএনপিকে চাপে রাখার কারণে দলটি ঢাকায় বড় সমাবেশ করতে পারেনি। একই কৌশল ৩০ ডিসেম্বরও কাজে লেগেছে। এখন পর্যন্ত যে নির্দেশনা, তাতে ভবিষ্যতে বিএনপির যেকোনো কর্মসূচিতে পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে রাজপথে থাকবে আওয়ামী লীগ।