দেশে যে ঐক্য সৃষ্টি হয়েছে, সেই ঐক্য সুপরিকল্পিতভাবে বিনষ্ট করার চক্রান্ত চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেই বিজয় ধরে রাখতে পারলে তা সুসংহত হবে।
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারীর বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। আজ শুক্রবার বিকেলে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। জাতীয় প্রেসক্লাব, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে), ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে), ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটি (ডিআরইউ) ও সাংবাদিক সমবায় সমিতি লিমিটেড এ সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘মুশফিক ইজ আ হিরো (মুশফিক একজন বীর), আমাদের কাছে, এই দেশের মানুষের কাছে। এই গণতন্ত্রের সংগ্রামের ক্ষেত্রে তিনি আমাদের কাছে হিরো এই জন্য যে যখন আমরা সবাই অত্যাচারে, নির্যাতনে, নিপীড়নে রাজনৈতিক কর্মী–নেতা সবাই হতাশ হয়ে পড়তাম, তিনি আমাদের মধ্যে আশার আলো জাগিয়ে তুলতেন।’
ফ্যাসিবাদী হাসিনার অত্যাচার নির্যাতনের কারণে মুশফিক ও তাঁর সঙ্গে আরও অনেকে এই দেশে থাকতে পারেননি—এমনটা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তাঁরা লড়াই করেছেন বাইরে গিয়ে। আমরা লড়াই করেছি দেশের ভেতরে। ছাত্র-জনতার অভূতপূর্ব অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, এই বিজয় তখনই সুসংহত হবে, যদি আমরা এটাকে ধরে রাখতে পারি।’
যাঁরা বিদেশে থেকে দেশের জন্য কাজ করেছেন, তাঁদের ফিরে আসার আহ্বান জানিয়ে মানবাধিকারকর্মী নূর খান লিটন বলেন, ‘দেশ গঠনে আপনাদেরও খুব প্রয়োজন।’
সংবর্ধনা দেওয়ায় সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ঘৃণা ও বিদ্রূপের চোখে বিশ্বদরবারে শেখ হাসিনাকে দেখা হতো। হাসিনার পতনে কার অংশগ্রহণ বেশি ছিল, সেই হিসাব না করে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা জানিয়ে আরও বক্তব্য দেন সাংবাদিক নেতা আবদুল হাই শিকদার, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, কামাল উদ্দিন সবুজ, ইলিয়াস খান, আইয়ুব ভূঁইয়া, শহিদুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর আলম, এম আবদুল্লাহ, মোরছালিন নোমানী, খুরশিদ আলম প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সাংবাদিক নেতারা বলেন, অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাস্ট নিউজ বিডির সম্পাদক মুশফিকুল ফজল আনসারী ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে দেশ ছাড়ার পর আর ফিরতে পারেননি। ফ্যাসিস্ট সরকারের দীর্ঘ অপশাসন, দুঃশাসন, গুম, খুন, নির্যাতন ও প্রহসনের নির্বাচনের বিরুদ্ধে জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাউসের ব্রিফিংয়ে প্রশ্নকারী বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর ছিলেন তিনি। ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন রাইট টু ফ্রিডমের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন তিনি।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে রাজনীতিবিদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মানবাধিকারকর্মী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকসহ নানা শ্রেণি ও পেশার মানুষ মুশফিকুল ফজল আনসারীকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।